ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

শিল্পপতির মেয়ের কোর্ট ম্যারেজ ॥ মধ্যস্থতা করতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন যুবলীগ নেতা

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ২৮ জুলাই ২০১৮

শিল্পপতির মেয়ের কোর্ট ম্যারেজ ॥ মধ্যস্থতা করতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন যুবলীগ নেতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কলকাতা ফেরত নরসিংদীর এক শিল্পপতির মেয়েকে ভিআইপি গেট দিয়ে ইমিগ্রেশন না করিয়েই বের করে কোর্টে নিয়ে বিয়ে করার ঘটনায় রীতিমতো তোলপাড় চলছে। বিষয়টির মীমাংসা করতে গিয়ে ফেঁসে গেছেন নরসিংদী শহর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী সোহেল ভূঁইয়া। তাকে রাজধানীর নিউমার্কেট থানায় দায়েরকৃত একটি অপহরণ মামলায় আসামি করে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে রীতিমতো হৈচৈ চলছে। দলের তরফ থেকে নির্দোষ সোহেল ভূঁইয়াকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার জন্য বার বার বলা হচ্ছে। জানা গেছে, চলতি বছর ২৪ মে সকাল নয়টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন লিমা নামের নরসিংদীর এক শিল্পপতির মেয়ে। লিমার সঙ্গে একই জেলার সৈকত নামের এক মাদকাসক্ত ছেলের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। বিষয়টি বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনের মাধ্যমে জানতে পেরে সেখানে হাজির হয় সৈকত। পরে সৈকত বিমানবন্দরে কাস্টমসে কর্মরত থাকা তার এক আত্মীয়ের মাধ্যমে লিমাকে ভিআইপি গেট দিয়ে ইমিগ্রেশন না করিয়েই বের করে আনে। পরে লিমাকে সৈকত তার বন্ধুদের সহায়তায় বিমানবন্দর থেকে সরাসরি জোরপূর্বক আদালতে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের কোর্ট ম্যারেজ হয়। ততক্ষণে ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে প্রভাবশালী ওই শিল্পপতির চাপে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, কাস্টমস ও শুল্ক গোয়েন্দারা মেয়েটিকে আবার বিমানবন্দরে নিয়ে যায়। সেখানে নতুন করে ইমিগ্রেশন করিয়ে মেয়েটিকে বিমানবন্দর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। পরে পুলিশের কাছ থেকে মেয়েটিকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এমন ঘটনায় নরসিংদীর ওই দুই পরিবারের মধ্যে চরম দ্বন্দ্ব চলছে। দুই পরিবারের ওই বিরোধ মীমাংসা করতে নরসিংদী শহর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল ভূঁইয়াকে মধ্যস্থতা করতে ঢাকায় আনা হয়। ঢাকায় এনে নীলক্ষেত এলাকায় কথা বলার জন্য জায়গা নির্ধারণ করা হয়। কথাবার্তার এক পর্যায়ে পরিকল্পিতভাবে ছেলে পক্ষ সোহেলের সঙ্গে উত্তেজনা ও হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক নিউমার্কেট থানা পুলিশ সোহেল ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে পুলিশ সোহেল ভূঁইয়াকে জানায়, তার বিরুদ্ধে সৈকত আগেই নিউমার্কেট থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করে রেখেছেন। মামলাটির প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন নিউমার্কেট থানার এসআই স্বপন কান্তি। সম্প্রতি ঘটনাটির বিষয়ে অভিযোগ ওঠার পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করে একই থানার এসআই আলমগীর হোসেন মজুমদারকে দেয়া হয়েছে। ওই মামলায় সোহেল ভূঁইয়া প্রায় এক মাস ধরে জেলে রয়েছেন। তার সঙ্গে একই মামলায় জেলে রয়েছেন আরও দুই যুবলীগ নেতা সোহাগ ও জুয়েল। আর গ্রেফতারের ভয়ে পলাতক রয়েছেন যুবলীগ নেতা বিল্টন ও অনিক। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা জানান, আত্মীয়রা লিমার জন্য বিমানবন্দরের রিসিপশনে অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় সৈকত ও তার সহযোগীরা লিমাকে বিমানবন্দরের ভিআইপি গেট দিয়ে বের করে কোর্টে গিয়ে বিয়ে করে। সেদিনই লিমাকে উদ্ধার করে বিমানবন্দর থানা পুলিশের মাধ্যমে লিমাকে তার পিতা সুধীরের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনার মীমাংসাকে কেন্দ্র করে অপহরণ মামলাটি দায়ের হয়।
×