ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এএসআই’র বাসা থেকে ইয়াবা ও মাদক বিক্রির টাকা উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২৫ জুলাই ২০১৮

এএসআই’র বাসা থেকে ইয়াবা ও মাদক বিক্রির টাকা উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলীর ফ্রেন্ডস টাওয়ার ও সদর থানার নগরখানপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে বরখাস্তকৃত এএসআই সালাউদ্দিনের দুইটি ভাড়া বাসা থেকে ৫ হাজার ৬২০ পিস ইয়াবা ও মাদক বিক্রির ৯ লাখ ৪শ’ টাকা উদ্ধার করেছে র‌্যাব-১১ সদস্যরা। এ সময় র‌্যাবের অভিযানে সালাউদ্দিন পালিয়ে যায়। তবে কদমতলীর ভাড়া বাসা হতে তার সহযোগী সুমনকে (২৫) গ্রেফতার করা হয়। সোমবার রাতে এ অভিযান চালানো হয়। মঙ্গলবার বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীর র‌্যাব-১১ কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জসিম উদ্দীন চৌধুরীর পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব জানায়, দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে র‌্যাব-১১ এর অভিযানে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা হতে বেশ কয়েকজন চিহ্নিত মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে নারায়ণগঞ্জ এলাকায় সালাউদ্দিন নামক একজন পাইকারি ইয়াবা বিক্রেতার নাম উঠে আসে। সে নিজের প্রাইভেটকারে করে ইয়াবা বিক্রেতাদের কাছে ইয়াবা পৌঁছে দেয়। কয়েক দিন আগে কদমতলী এলাকায় ফ্রেন্ডস টাওয়ারে সালাউদ্দিনের একটি ভাড়া বাসার সন্ধান পাওয়ার পর র‌্যাব-১১ সদস্যরা সোমবার রাতে কদমতলীর বাসায় সালাউদ্দিনের অবস্থান জানতে পেরে র‌্যাব-১১ অভিযান পরিচালনা করে। র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সালাউদ্দিন ও তার ড্রাইভার জসিম পালিয়ে যায়। এ সময় তার সহযোগী সুমন গ্রেফতার হয়। গ্রেফতারকৃত সুমনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে সালাউদ্দিনের বাসায় তল্লাশি চালিয়ে ৫ হাজার ২০০ পিস ইয়াবা ও মাদক বিক্রির ৮ লাখ ৫০ হাজার ৪শ’ টাকা উদ্ধার করা হয়। এর ২ ঘণ্টা পর নারায়ণগঞ্জ সদর থানার নগরখানপুর এলাকায় সালাউদ্দিনের অপর ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে ৪০০ পিস ইয়াবা ও ইয়াবা বিক্রির ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। র‌্যাব আরও জানায়, গ্রেফতারকৃত সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, উদ্ধারকৃত ইয়াবা ও টাকার মালিক সালাউদ্দিন পুলিশের একজন বরখাস্তকৃত এএসআই। মাদক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে প্রায় ৭ মাস পূর্বে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখা থেকে বরখাস্ত হয়। সেই থেকে সালাউদ্দিন পলাতক রয়েছে বলে জানা যায়। পলাতক হলেও সে এখনও নারায়ণগঞ্জ ডিবির অফিসার পরিচয় দিয়ে আসছে। ইতোমধ্যে সে মাদক ব্যবসা করে প্রচুর অবৈধ সম্পদের মালিক বনে যায়। নিজ মালিকানাধীন ৩টি প্রাইভেটকার ইয়াবা পরিবহন ও সরবরাহের কাজে ব্যবহৃত হয়। জসিম, ওসমান ও বাহাদুর নামের তিনজন ব্যক্তিগত ড্রাইভারও আছে। নারায়ণগঞ্জ শহরে রয়েছে ‘জেন্টস পার্লার’ নামক বিউটি পার্লার। মাদক ব্যবসার আর্থিক হিসাব দেখাশোনার জন্য রয়েছে ব্যক্তিগত সহকারী। গ্রেফতারকৃত সুমন বেতনভোগী কর্মচারী হিসেবে দীর্ঘদিন যাবত সালাউদ্দিনের ব্যক্তিগত সহকারীর দায়িত্ব পালন করে আসছে। জসিম, ওসমান ও বাহাদুর প্রাইভেটকারে নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা ও মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন মাদক স্পটে নিয়মিত ইয়াবা পৌঁছে দেয়। ইয়াবা কারবারিদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে সুমন সালাউদ্দিনের নির্দেশ মতে ব্যাংক, মোবাইল ব্যাংকিং ও এসএ পরিবহনের মাধ্যমে কক্সবাজারের ইয়াবা সরবরাহকারীদের কাছে নিয়মিত টাকা পাঠিয়ে থাকে। এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ ও সদর থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে র‌্যাব জানায়।
×