ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাধা এলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করুন;###;ডিসিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

নির্মূলে কঠোর হোন ॥ চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজি পেশীশক্তি সন্ত্রাস ও মাদক

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২৫ জুলাই ২০১৮

নির্মূলে কঠোর হোন ॥ চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজি পেশীশক্তি সন্ত্রাস ও মাদক

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, পেশীশক্তি, সন্ত্রাস ও মাদক নির্মূলে জেলা প্রশাসকদের কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, এসব কাজে কোন বাধা এলে প্রয়োজনে তারা (ডিসি) যেন সরাসরি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ ব্যাপারে তাঁর সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখানে আমি বলতে চাইÑ বিনা দ্বিধায় আপনারা এই টেন্ডারবাজি, পেশিশক্তি, সন্ত্রাস এবং মাদক নির্মূল করবেন। এখানে কে কোন দল করে, কে কি করে সেগুলো দেখার কোন দরকার নেই। যদি কেউ বাধা দেয়, আপনারা সরাসরি আমার সঙ্গে বা আমার অফিসে যোগাযোগ করতে পারবেন। সরকারপ্রধান হতে পারিÑ আমি কিন্তু জাতির পিতার কন্যা, আপনাদের সেটাও মনে রাখতে হবে।’ মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তিনদিনব্যাপী জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ৬৪ জেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের সামনে এ নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, শিল্পাঞ্চলে শান্তি রক্ষা, পণ্য পরিবহন ও আমদানি-রফতানি নির্বিঘœ করা এবং চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, পেশিশক্তি ও সন্ত্রাস নির্মূল করার ব্যবস্থা নিতে হবে জেলা প্রশাসকদের। আমরা সমাজ থেকে এসব অশুভ তৎপরতা নির্মূল করে মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই। দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসকদের অতীতের ধ্যান-ধারণা পরিহার করে সেবার মনোভাব নিয়ে দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ঔপনিবেশিক মানসিকতা পরিহার করে আপনাদের সেবার মনোভাব নিয়ে সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। তবেই দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক এবং মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমান বক্তৃতা করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন। এতে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের পক্ষে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মোঃ মিজানুর রহমান, চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দিন আহমেদ, মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক বেগম শায়লা ফারজানা এবং রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার মোঃ নূর-উর-রহমান বক্তৃতা করেন। সরকারের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের সঙ্গে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সরাসরি মতবিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টির জন্যই এই সম্মেলনের আয়োজন। তৃণমূল পর্যায়ে সরকারের নীতি ও কর্মসূচী বাস্তবায়নে সমস্যাসমূহ এবং সেগুলোর সমাধানের পথ ও কৌশল নির্ধারণে এ সম্মেলন কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে প্রধানমন্ত্রী সরকারী সেবা পেতে সাধারণ মানুষ যাতে কোনভাবেই হয়রানি বা বঞ্চনার শিকার না হন, সেদিকে কঠোর নজরদারি রাখা এবং চলমান মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখাসহ অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসকদের ২৩ দফা নির্দেশনা প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও সচিববৃন্দ, পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, সব জেলার জেলা প্রশাসক এবং বিভাগীয় কমিশনারবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তিন দিনের এ সম্মেলন বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে ক্ষুধা, দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা, জঙ্গীবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার অভিশাপমুক্ত একটি সুখী, সমৃদ্ধি, ন্যায়ভিত্তিক, জ্ঞাননির্ভর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বিনির্মাণ। এ ক্ষেত্রে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকগণের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সরকারের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নের দায়িত্ব আপনাদের, মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের। আমি বিশ্বাস করি যে, আপনাদের মাঝে অনেক উদ্ভাবনী শক্তি আছে। আপনারা এই উদ্ভাবনী শক্তি কাজে লাগিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। একটি দেশের উন্নয়নে দেশে গণতন্ত্র বিদ্যমান থাকা এবং সরকারের ধারাবিহিকতা বজায় থাকা অত্যন্ত জরুরী উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা একটানা দুই মেয়াদে প্রায় সাড়ে ৯ বছর সরকার পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছি। ফলে আমরা অনেক উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছি। আর্থ-সামাজিক খাতে আজ বাংলাদেশের যে অভাবনীয় অগ্রগতি, তা সম্ভব হয়েছে এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকার জন্য। জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আর্থ-সামাজিক সূচকের ক্ষেত্রে আমরা শুধু দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে নয়, অনেক উন্নত দেশকেও ছাড়িয়ে যেতে পেরেছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলের ২৮ লাখ ৪০ হাজার স্কুল শিক্ষার্থীকে ‘মিড-ডে মিল’ কর্মসূচীর আওতায় আনা হয়েছে এবং প্রায় ২ কোটি ৩ লাখ ছাত্রছাত্রীকে বিভিন্ন ধরনের উপবৃত্তি এবং বৃত্তির আওতায় আনা হয়েছে। উপবৃত্তির টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি মায়েদের এ্যাকাউন্টে পাঠানো হচ্ছে। এসব কর্মসূচীর ফলে বাংলাদেশের বিদ্যালয়গামী প্রায় সবশিশু আজ বিদ্যালয়ে যাচ্ছে। ঝরেপড়া বন্ধ হয়েছে। তিনি বলেন, সারাদেশে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। যেখান থেকে বিনামূল্যে ৩০ প্রকারের ওষুধ প্রদান করা হচ্ছে। সরকারপ্রধান বলেন, দারিদ্র নিরসন এবং বৈষম্য দূর করে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে তাঁর সরকার পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার পাশাপাশি ১০ বছর মেয়াদী প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। ২০২১ থেকে ২০৪১ সালের বাংলাদেশকে আমরা কেমন দেখতে চাই সেই প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ চলছে উল্লেখ করে জেলা প্রশাসকদের এসব পরিকল্পনা প্রণয়নে তাঁদের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানের সন্নিবেশন ঘটানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, তাঁর সরকার দুর্নীতি দমন ও শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠায় ‘জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ (সুরক্ষা) বিধিমালা, ২০১৭’ প্রণয়ন করেছে। সাধারণ মানুষের সেবা প্রাপ্তিতে যে কোন সমস্যা নিরসনে গণশুনানি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সরকারী কাজে গতিশীলতা আনয়নে সব সরকারী দফতরে ই-সেবার পাশাপাশি পর্যায়ক্রমে ই-ফাইলিং বাস্তবায়ন ও সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামীতে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ঢাকা-চট্টগ্রাম, সিলেট, দিনাজপুর এবং বরিশালের মধ্যে দ্রুতগতির বুলেট ট্রেন চালুর পরিকল্পনা তার সরকারের রয়েছে। তিনি এ সময় রেল যোগাযোগের পরিসর আরও বাড়ানোর জন্য ঢাকা থেকে বরিশালসহ পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেল যোগাযোগ স্থাপন এবং ভবিষ্যতে বিমান ও হেলিকপ্টার নির্মাণের লক্ষ্যে লালমনিরহাটে একটি এ্যারোনটিক্যাল সেন্টার স্থাপনের পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করে তিনি। জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, সরকারের একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, কমিউনিটি ক্লিনিক, শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এছাড়া কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। এটা হলে বাংলাদেশের কৃষিপণ্য যেমন বিদেশে বাজার পাবে তেমনি দেশেও বিক্রি করা যাবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের কল্যাণে সরকারের গৃহীত কার্যক্রম জেলা প্রশাসকরাই মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করেন। আমরা যতই পরিকল্পনা করি, কিন্তু বাস্তবায়নের দায়িত্ব জেলা প্রশাসকদেরই। পাশাপাশি ২০২১ থেকে ২০৪১ পর্যন্ত প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়নে জেলা প্রশাসকদের মতামত দেয়ার আহ্বান জানান। ভিক্ষুক পুনর্বাসন এবং স্কুলে মিড মে মিল চালুর ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকদের উদ্যোগের প্রশংসা করে যেসব স্কুলে এখনও মিড মে মিল চালু হয়নি তা বাস্তবায়নের তাগিদ দেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় তাঁর সরকারের নানা খাতের উন্নয়নের চিত্র অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন এবং ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের প্রস্তুতি নেয়ার কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে জাতীয় গৌরব, মুক্তিযুদ্ধ এবং ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে আগামী প্রজন্মকে জানানোর জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, ট্রাফিক রুল সম্পর্কে গণসচেতনতা গড়ে তোলা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সচেতনতা গড়ে তোলার আহ্বান জানান। এ সময় সরকার প্রধান তাঁর সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশকে আমরা ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়তে চাই। এজন্য সকলকে যার যার জায়গা থেকে কাজ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২৩ দফা নির্দেশনায় যা রয়েছে ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলা প্রশাসকদের ২৩ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন। নির্দেশনাগুলো হচ্ছে- (১) সরকারী সেবা পেতে সাধারণ মানুষ যাতে কোনভাবেই হয়রানি বা বঞ্চনার শিকার না হন, সেদিকে কঠোর নজরদারি রাখতে হবে। (২) যুব সমাজকে মাদকের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। মাদকবিরোধী অভিযান চলবে। (৩) জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতা দূর করে সর্বক্ষেত্রে শান্তিশৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আরও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। (৪) গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, সম্ভাবনাময় স্থানীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে উদ্যোগী হতে হবে। (৫) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়ন ও বিকাশে নেতৃত্ব প্রদান করতে হবে। (৬) তৃণমূল পর্যায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করতে হবে। (৭) শিক্ষার সব স্তরে নারীশিক্ষার হার বৃদ্ধি, ঝরেপড়া শিক্ষার্থীদের মূলধারায় ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নিতে হবে। (৮) ভূমি প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সরকারি ভূমি রক্ষায় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। (৯) কৃষি-উৎপাদন বৃদ্ধিতে সার, বীজ, বিদ্যুত, জ্বালানি ইত্যাদির সরবরাহ নির্বিঘœ করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে হবে। নির্দেশনায় আরও রয়েছে- (১০) ভেজাল খাদ্যদ্রব্য বাজারজাত প্রতিরোধে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি এবং এ ধরনের অনৈতিক কর্মকা- কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। (১১) দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম আরও জোরদার করতে হবে। (১২) পরিবেশ রক্ষায় জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং এই সংক্রান্ত আইন ও বিধি-বিধানের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। (১৩) প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিপর্যয় প্রশমনে ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১২’ এবং এ সংক্রান্ত স্থায়ী নির্দেশনাবলি অনুসারে সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। (১৪) সাধারণ মানুষকে সহজে সুবিচার প্রদান ও আদালতে মামলার জট কমাতে গ্রাম আদালতগুলোকে কার্যকর করতে হবে। (১৫) জেলা প্রশাসক জেলাপর্যায়ে বিভিন্ন কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ সকল কমিটিকে সক্রিয়, গতিশীল ও ফলপ্রসূ করতে হবে। (১৬) দফতরসমূহের বিদ্যমান সেবাসমূহ তৃণমূলে পৌঁছানোর লক্ষ্যে তথ্যমেলা, সেবা সপ্তাহ পালনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। (১৭) শিল্পাঞ্চলে শান্তি রক্ষা, পণ্যপরিবহন ও আমদানি-রফতানি নির্বিঘœ করা এবং চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, পেশিশক্তি ও সন্ত্রাস নির্মূল করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বাকি নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে- (১৮) বাজার-ব্যবস্থার সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের প্রতি গুরুত্বারোপ করতে হবে। বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টির যে কোন অপচেষ্টা কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। (১৯) নারী ও শিশু নির্যাতন ও পাচার, যৌতুক, ইভটিজিং এবং বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে নজরদারি বাড়াতে হবে। (২০) নারীর প্রতি সহিংসতা, নিপীড়ন ও বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। (২১) নিজ নিজ জেলায় ক্রীড়া, বিনোদন ও সৃজনশীল সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের সুযোগ বাড়াতে হবে। শিশু-কিশোরদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সংস্কৃতিবোধ ও বিজ্ঞানমনস্কতা জাগিয়ে তুলতে হবে। (২২) প্রতিবন্ধী, অটিস্টিক ও পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর কল্যাণে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং (২৩) পার্বত্য জেলাসমূহের ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য, বনাঞ্চল, নদী-জলাশয়, প্রাণিসম্পদ এবং গিরিশৃঙ্গগুলোর সৌন্দর্য সংরক্ষণ করতে হবে। এছাড়া পর্যটনশিল্প, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং কুটিরশিল্পের বিকাশে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে হবে।
×