ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বড়পুকুরিয়া খনি

প্রাথমিক তদন্তে কয়লা গায়েবের সত্যতা পেয়েছে দুদক

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২৪ জুলাই ২০১৮

প্রাথমিক তদন্তে কয়লা গায়েবের সত্যতা পেয়েছে দুদক

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে ১ লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনায় দুর্নীতির প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে বলে জানিয়েছেন দুদক কর্মকর্তারা। সোমবার বিকেলে খনিতে ঢুকে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই এবং কোল ইয়ার্ড এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তারা এসব কথা জানান। দুদক কর্মকর্তারা জানান, খনির অনিয়মের বিষয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেখানে তদন্ত কার্যক্রম শেষে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে কয়লার অভাবে তাপবিদ্যুত কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেলেও উত্তরাঞ্চলে বিদ্যুত সরবরাহে তেমন বড় কোন সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। অবশ্য বিদ্যুতকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আবদুল হাকিম সরকার জানিয়েছেন কেন্দ্রটি এক মাসের মধ্যে উৎপাদনে যেতে পারবে। উত্তরাঞ্চলের ৮ জেলায় বিদ্যুত সঙ্কটের আশঙ্কা, দিনাজপুর থেকে জানান॥ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশের একমাত্র কয়লাভিত্তিক বড়পুকুরিয়া ৫২৫ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুত কেন্দ্র বিদ্যুত সঙ্কটে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে রংপুর বিভাগের আট জেলায়। বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুত কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল হাকিম জানান, কয়লা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি) কর্তৃপক্ষ কয়লা সরবরাহ করতে না পারায়, রবিবার রাত ১০টা ২০ মিনিট থেকে তাপবিদ্যুত কেন্দ্রটি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন তারা। বিদ্যুত সরবরাহে ঘাটতির ফলে বড় রকমের লোকসানের মুখে পড়ার আশঙ্কা করছেন কলকারখানা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকরা। ফুলবাড়ী লাভলী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাঃ লিমিটেডের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ খুরশিদ আলম মতি বলেন, প্রতিদিন ২ ঘণ্টা বিদুতের লোডশেডিং হলে দিনে ৫ লাখ টাকা লোকসান গুণতে হবে। একই কথা বলেন, দিনাজপুরে অবস্থিত দেশের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক সার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ‘নর্দান এগ্রো ফার্টিলাইজার’ কারখানার চেয়ারম্যান মোঃ ফরিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঘন ঘন লোডশেডিং হলে শুধু লোকসানই হয় না, মেশিনেরও ক্ষতি হয়। এতে লোকসানের পরিমাণ আরও বাড়ে। রংপুর বিভাগে বিদ্যুত বিভ্রাট Ñ সরকারের ব্যাখ্যা ॥ রংপুর বিভাগে সাময়িক বিদ্যুত বিভ্রাটের ব্যাখ্যা দিয়েছে সরকার। সোমবার বিদ্যুত বিভাগের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা এক বিজ্ঞপ্তিতে এই ব্যাখ্যা দেন। রংপুরের সাময়িক বিদ্যুত বিভ্রাটের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই পরিস্থিতি সাময়িকÑ যা সমাধানের জোর প্রচেষ্টা চলছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে উৎপাদন এলাকার পরিবর্তনের (ফেস ট্রান্সফার) ফলে কয়লা খনন বন্ধ থাকার পরিপ্রেক্ষিতে বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুত কেন্দ্রের বিদ্যুত উৎপাদন সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য অন্যান্য বিদ্যুত কেন্দ্রের উৎপাদন বৃদ্ধি করে আসন্ন সঙ্কট মোকাবেলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবুও বড়পুকুরিয়া বিদ্যুত কেন্দ্রের উৎপাদন না থাকায় রংপুর বিভাগে ভোল্টেজ সমস্যার কারণে বিদ্যুত সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে। এই অসুবিধা মোকাবেলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এই বিদ্যুত বিভ্রাটের জন্য বিদ্যুত বিভাগ আন্তরিকভাবে দুঃখিত। সাময়িক এই অসুবিধার জন্য সকলের সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য। শীঘ্রই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
×