ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনী প্রচারে তিন সিটি

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১৫ জুলাই ২০১৮

 নির্বাচনী প্রচারে তিন সিটি

বরিশাল প্রচারে সরগরম খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর চতুর্থ দিনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকরা সরগরমে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত ভোট প্রার্থনার জন্য ভোটারের দ্বারে দ্বারে ছুটে চলেছেন প্রার্থীরা। সন্ধ্যায় নির্বাচনী উঠান বৈঠক শেষে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে পুনরায় গণসংযোগ। প্রার্থী ছাড়াও প্রতিটি বাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ওয়ার্ড কমিটির নেতারা যাচ্ছেন তাদের পছন্দের প্রার্থীদের পক্ষে ভোট চাইতে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী এ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার বরিশাল সদরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে পথচারীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে প্রচার চালালেও আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ সদরসহ নগরীর বর্ধিত এলাকায় কাদা-পানি পেরিয়ে তার নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন। বর্ধিত এলাকার ভোটাররা এবারই সর্বপ্রথম কোন মেয়র প্রার্থীকে তাদের কাছে পেয়ে অনেকটা আবেগাপ্লুত হয়ে মহল্লার বৃদ্ধ থেকে শুরু করে নারীরা মাথায় হাত বুলিয়ে সাদিক আব্দুল্লাহকে দোয়া ও আশীর্বাদ করছেন। তরুণ ও যুব ভোটাররা সাদিকের সঙ্গে সেলফি তুলতে ভুল করছেন না। প্রচারে মাঠে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে বিএনপিসহ অন্যান্য দলের মেয়র প্রার্থীরা আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুললেও আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, এগুলো তাদের পুরনো কৌশল মাত্র। নগরীর সর্বত্র নৌকার পক্ষে গণজোয়ার দেখে নির্বাচন নিয়ে ধূ¤্রজাল ও ভোটারদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে। নৌকা মার্কার মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ প্রচার বিষয়ে বলেন, এরই মধ্যে যেভাবে জনগণের সাড়া পেয়েছি, তাতে ইনশাল্লাহ ৩০ জুলাইয়ের নির্বাচনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ও উন্নয়নের স্বার্থে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নৌকা মার্কার বিজয় হবে। তিনি (সাদিক) আরও বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির অভিজ্ঞ প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার তার দল ক্ষমতায় থাকার সময়ে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ছিলেন। এরপর আওয়ামী লীগ মনোনীত শওকত হোসেন হিরণ এবং পরবর্তীতে বিএনপির আরও একজন মেয়র ছিলেন। জনগণ দেখেছে বিগত সময়ে বিএনপির মেয়ররা কি করেছেন এবং আমাদের আওয়ামী লীগের মেয়র কি উন্নয়ন করেছেন। প্রাচ্যের ভেনিস হিসেবে পরিচিত বরিশাল আগের মতো নেই। আমার ইচ্ছে রয়েছে মেয়র নির্বাচিত হলে প্রাচ্যের ভেনিস বরিশালের যে ঐতিহ্য ছিল তা ফিরিয়ে আনার জন্য যা কিছু দরকার বরিশালবাসীকে সঙ্গে নিয়ে তাই করব। বরিশালকে সবুজ ও শিশুবান্ধব নগরীতে পরিণত করা হবে। তিনি আরও বলেন, আগেও বলেছি আমি কোন নির্বাচনী ইশতেহার দেব না। নগরবাসীর মৌলিক চাহিদা পূরণ করাই হবে আমার ইশতেহার। অপরদিকে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান বলেন, আমরা অল্প সময়ের মধ্যেই ইশতেহার ঘোষণা করব। যার মধ্যে শহর রক্ষা বাঁধ, বাইপাস সড়ক, ডিভাইডেড রোড, খাল খনন, বর্ধিত এলাকার উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মূল শহরের উন্নয়নের সমন্বয় করা, অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করার বিষয়গুলো থাকবে। পাশাপাশি সন্ত্রাস, মাদকমুক্ত ও আধুনিক নগরী নির্মাণের জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা কাজ করব। এছাড়া জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, নির্বাচিত হলে নগরভবনে নগরপিতা হিসেবে নয়, সেবক ভবনে নগরের সেবক হিসেবে কাজ করতে চাই। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা ওবাইদুর রহমান মাহবুব বলেন, সিটি কর্পোরেশনকে সুন্দর ও সমৃদ্ধ করার জন্য দুর্নীতি মুক্ত করা হবে। পার্সেন্টিস মুক্ত কর্পোরেশন গড়া হবে। তিনি সৎলোককে ভোট দেয়ার জন্য ভোটারদের কাছে আহ্বান করেন। বাসদ’র মেয়র প্রার্থী ডাঃ মনিষা চক্রবর্তী নির্বাচিত হলে নগর কাউন্সিলের মাধ্যমে জনগণের মতামত নিয়ে উন্নয়নমূলক কর্মকা- পরিচালনা করা হবে। আমি এই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের প্রথম নারী প্রার্থী। বিগত ১৫ বছরে কোন মেয়রই নারীবান্ধব কর্মসূচী হাতে নেয়নি। আমি মেয়র নির্বাচিত হলে কর্মজীবী নারী হোস্টেল, ডে কেয়ার সেন্টারসহ নারীবান্ধব কর্মকা- পরিচালনা করব। সিপিবির মেয়র প্রার্থী এ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বলেন, সিটি কর্পোরেশনকে দৃষ্টিনন্দন একটি নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। জলাবদ্ধতা নিরসন, সড়ক উন্নয়নসহ নাগরিক সমস্যাগুলোর সমাধান করা হবে। নগরীর বস্তি এলাকার মানুষদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণ করব। স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী বশির আহমেদ ঝুনু বলেন, বিগত সময়ে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচিত মেয়ররা পদে থেকে কে কি করেছেন তা সবাই জানেন। শুধু শওকত হোসেন হিরণ-ই বরিশাল নগরীর উন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন। আমি নির্বাচিত হতে পারলে হিরণের পদাঙ্কন অনুসরণ করব। পোস্টারের নগরী ॥ প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে হতে যাচ্ছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় বরিশালের মেয়র প্রার্থী থেকে শুরু করে ভোটারদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা দেখা গেছে। তাই বিশেষ করে বড় দুরাজনৈতিক দলের মেয়র প্রার্থীদের মাঝেও শুরু হয়েছে নতুন উদ্দীপনা। নির্বাচনে বিজয়ী হতে নিজ নিজ প্রতীককে বড় করে দেখাতে চলছে প্রচার। পোস্টারে ছেয়ে গেছে গোটা নগরী। গত ১০ জুলাই প্রতীক পেয়েই নেতাকর্মীদের নিয়ে গণসংযোগে নেমেছেন ১৪ দলের মেয়রপ্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ এবং বিএনপির প্রার্থী মহানগর বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার। বসে নেই অন্য দলের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। প্রতীক পেয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন এবং গণসংযোগে নেমেছেন সকল প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকরা। সমর্থকদের হাতে হাতে রয়েছে তাদের পছন্দের প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারে লিফলেট। লিফলেটগুলো সমর্থকরা সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। তবে প্রচার ও গণসংযোগে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন নৌকা মার্কার প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। প্রথম সিটি নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নৌকা পেয়েছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সাদিক আব্দুল্লাহ। এবারই প্রথম তিনি মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নৌকা প্রতীককে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে প্রচার করেই সাদিকের সমর্থকরা প্রচার চালাচ্ছেন। বরিশালে আওয়ামী লীগের ঘরের কোন কোন্দল না থাকায় দলীয় প্রতীক নিয়ে অনেকটা স্বাচ্ছন্দ্যে আছেন সাদিক আব্দুল্লাহ। অপরদিকে বিএনপির অভিজ্ঞ প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার দলীয় প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে গণসংযোগ ও উঠান বৈঠকে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ২০ দলীয় জোটের মেয়র প্রার্থী সরোয়ারের বিশ্বাস কোন ধরনের ভোট ডাকাতি করা না হলে তিনি বিজয়ী হবেন। এবারই প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় বরিশাল সিটিতে পূর্বের যেকোন নির্বাচনের চেয়ে একটু বেশিই গুরুত্বপূর্ণ। ১০ জুলাই থেকে শুরু হওয়া প্রচার আগামী ২৮ জুলাই রাত ১২টায় শেষ হবে। তাই মহাব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ, বিএনপির মজিবর রহমান সরোয়ার, জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা ওবাইদুর রহমান মাহবুব, বাসদ’র মেয়র প্রার্থী ডাঃ মনিষা চক্রবর্তী, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী বশির আহমেদ ঝুনু, সিপিবির মেয়র প্রার্থী এ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ। প্রচার শেষে ৩০ জুলাই ভোটগ্রহণ করা হবে। এতটা আত্মবিশ্বাসী কখনও ছিল না আওয়ামী লীগ ॥ বরিশালে এতটা আত্মবিশ্বাসী কখনও দেখা যায়নি আওয়ামী লীগকে। দেখা যায়নি এভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে। তরুণ নেতা সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে নিয়ে নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনসহ সাধারণ ও তরুণ ভোটাররা। দলীয় নেতাদের নতুন নেতার হাত ধরে দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ‘সিটি কর্পোরেশন জয়’ এখন ক্রমশই বরিশাল নগরীতে দৃশ্যমান হচ্ছে। বিগত সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগে যে গৃহ বিবাদ ছিল এবার তার ছিটেফোটাও নেই। প্রবীণ থেকে তরুণ, কেন্দ্র থেকে জেলা, মহানগর, উপজেলা সবখানে এখন সাদিক আব্দুল্লাহকে নিয়ে স্বপ্ন রচনা শুরু হয়েছে। সে স্বপ্নের সূতিকাগার বরিশাল আওয়ামী লীগের তৃণমূল। বহু বিভক্ত তৃণমূলের নেতাকর্মীদের স্বপ্নের কা-ারি এখন সাদিক আব্দুল্লাহ। এবার সাদিকের হাত ধরেই নগর পিতার আসনটি পুনরুদ্ধার করতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দিন-রাত একাকার করে ভোট প্রার্থনার জন্য ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটে চলেছেন। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, আমার রাজনৈতিক জীবনে বরিশাল আওয়ামী লীগকে এতটা ঐক্যবদ্ধ কখনও দেখা যায়নি। আশা করা হচ্ছে আসন্ন সিটি নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জয়লাভ করবে। এর মাধ্যমেই ইনশাল্লাাহ দেশের সবচেয়ে তরুণ মেয়র হবেন সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। আওয়ামী লীগ নেতা সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, এবার আওয়ামী লীগের বিজয় কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না। যে উন্নয়নের বিপ্লব বরিশালের সাবেক মেয়র শওকত হোসেন শুরু করেছিলেন, তা অব্যাহত রাখতে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে নিয়ে দলমত নির্বিশেষে পুরো নগরবাসী নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। লুসি হল্ট আশীর্বাদ করলেন সাদিক আব্দুল্লাহকে ॥ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ অবদান রাখা ব্রিটিশ নাগরিক লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্ট আসন্ন সিটি নির্বাচনে নগর পিতা হওয়ার জন্য প্রাণভরে দোয়া ও আশীর্বাদ করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে। শুক্রবার বিকেলে নগরীর সেন্ট পিটার্স চার্চের খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত ও গণসংযোগের পূর্বে সাদিক আব্দুল্লাহ লুসি হল্টের কাছে ছুটে যান। এ সময় তিনি (লুসি) সাদিক আব্দুল্লাহকে আশীর্বাদ করেন। ওইদিন সন্ধ্যায় নগরীর ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে অনুষ্ঠিত নির্বাচনী উঠান বৈঠকে নৌকার মার্কার মেয়র প্রার্থী সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। এখনও অনেক কাজ চলমান রয়েছে। বরিশালের মানুষের পাশে থেকে আমার দাদা শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে কাজ করে গেছেন। আমার বাবা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহও এ অঞ্চলের উন্নয়নে নিজেকে বিলিয়ে দিচ্ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় আমিও বরিশাল তথা নগরীর উন্নয়নসহ জনগণের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছি। বরিশালের জনগণ বর্তমান সরকারের উন্নয়নের বিবেচনা করেই ৩০ জুলাইর নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে সে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবে বলে আমি শতভাগ বিশ্বাস করছি। জাপা প্রার্থীর ২৪ দফা ইস্তেহার ঘোষণা ॥ ৩০ জুলাই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি (এরশাদ) মনোনীত লাঙ্গল মার্কার প্রার্থী ইকবাল হেসেন তাপস শনিবার সকালে নগর ভবনে সকল প্রকার টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ও দুর্নীতি মুক্ত করা, সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য পৃথকভাবে আবাসস্থল তৈরি করাসহ ২৪ দফা নির্বাচনী ইস্তেহার ঘোষণা করেছেন। নগরীর অশ্বিনী কুমার টাউন হলে এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মেয়র প্রার্থীর প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী ও কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক মহসিন-উল-ইসলাম হাবুল, জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক আখতার হোসেন, জাপা নেতা আলতাফ হোসেন ভাট্টি, রুস্তুম আলী খান, ফরহাদ হোসেন হাবিল প্রমুখ। . লিটন-বুলবুলের প্রচার তুঙ্গে মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসছে ততই তুঙ্গে উঠছে প্রার্থীদের প্রচার। ভোটারদের আকৃষ্ট করতে রাত-দিন সমান করে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা চষে বেড়াচ্ছেন প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগ মনোনীত এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এবং বিএনপি মনোনীত মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ভোট চাচ্ছেন তারা। লিটন-বুলবুলের ব্যানার-পোস্টারেও ছেয়ে গেছে নগরীর সড়ক-অলিগলি, পাড়া-মহল্লা। তবে প্রচার অনেকটাই সুবিধাজনক অবস্থায় আছেন নৌকার সারথি খায়রুজ্জামান লিটন। অন্যদিকে প্রচারে পিছিয়ে পড়ে অপপ্রচারকে কৌশল হিসেবে নিয়েছেন ধানের শীষ প্রতীকের মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। এদিকে সিটি নির্বাচন নিয়ে দুই দলের কর্মীসমর্থকের মধ্যেও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে উত্তাপ-উত্তেজনা। প্রচার নিয়ে এখন পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও প্রার্থীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের অন্ত নেই। বিশেষ করে প্রচার শুরু হওয়ার পর গত পাঁচ দিনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর পক্ষ থেকে ১০টি ও বিএনপির মেয়র প্রার্থীর পক্ষ থেকে ১২টি অভিযোগ জমা পড়েছে রিটার্নিং অফিসারের কাছে। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান জানান, শুক্রবার পর্যন্ত তাদের কাছে ১৪টি অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর পক্ষে ১০টি এবং বিএনপির মেয়র প্রার্থীর পক্ষে দুটি। দুটি অভিযোগ দিয়েছেন কাউন্সিলর প্রার্থী। তবে ১০টি পত্রে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ১০টি অভিযোগ করলেও বিএনপির মেয়র প্রার্থী দুটি পত্রে ১২টি অভিযোগ এনেছেন। আতিয়ার রহমান বলেন, গত ১১ জুলাই দেয়া একটি পত্রে সাতটি অভিযোগ এনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের পক্ষে নগরের বিভিন্ন এলাকার পোস্টার ও ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলে নষ্ট করাসহ আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। একই দিনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর পক্ষ থেকে অপপ্রচার, বস্তিবাসী ও সংখালঘু পরিবারের সদস্যদের ভয়ভীতি দেখানোর একটি অভিযোগ দেয়া হয়। এছাড়া ১২ জুলাই নৌকার সমর্থককে হুমকি, নৌকার নারী কর্মীদের সঙ্গে অশ্লীল আচরণ, পোস্টার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলে নষ্ট করার ৪টি অভিযোগ দেয়া হয়। শুক্রবার আচরণবিধি লঙ্ঘনের পাঁচটি অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর পক্ষ থেকে। একই সঙ্গে বিএনপির মেয়র প্রার্থীর পক্ষ থেকেও আচারণবিধি লঙ্ঘনের পাঁচটি অভিযোগ করা হয়েছে। আতিয়ার রহমান বলেন, অভিযোগগুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে শনিবার সকালে নগরীর ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের বুধপাড়া নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে থেকে গণসংযোগ শুরু করেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এরপর বুধপাড়ার নজিরের মোড়, সেলিমের মোড়, জনাবের মোড়, মধ্য বুধপাড়া, পশ্চিম বুধপাড়া, পশ্চিম বুধপাড়া মসজিদের মোড়, স্কুল মোড়ে গণসংযোগ করেন তিনি। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এসব এলাকায় গণসংযোগকালে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, তিনি নির্বাচিত হলে নগরীরতে শিল্পায়নের মাধ্যমে এক লাখ ছেলেমেয়ের চাকরির ব্যবস্থা করবেন। গত পাঁচ বছরে পিছিয়ে যাওয়া রাজশাহীতে ব্যাপক উন্নয়ন করা হবে। নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার আশ^াস দেন তিনি। দুপুর ২টার দিকে মাসকাটদিঘি এলাকায় এক মতবিনিময় সভায় যোগ দেন খায়রুজ্জামান লিটন। ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে লিটন বলেন, সদ্য বিদায়ী বিএনপির মেয়রের কারণে রাজশাহীবাসী পাঁচ বছর পিছিয়ে গেল। তিনি একটিও উন্নয়ন করতে পারলেন না। রাজশাহীর মানুষ এখন এই অবস্থা থেকে পরিবর্তন চায়। এই পরিবর্তনের জন্য তারা নৌকা প্রতীকে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। সভায় রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, গত নির্বাচনে রাজশাহীবাসী ভুল করেছিল। যার ফলে পাঁচ বছর ধরে নগরীর কোন উন্নয়ন হয়নি। রাজশাহীবাসী আর কোন ভুল করতে চাই না। উন্নয়নের স্বার্থে এবার সবাই খায়রুজ্জামান লিটন ভাইকে ভোট দেবেন। এদিকে মতবিনিময় সভা শেষে মাসকাটদিঘি ও বুধপাড়ার মানুষের বাড়ি বাড়ি যান ও ভোট চান খায়রুজ্জামান লিটন। এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজশাহী মহানগরীর রেলওয়ে কলোনির বস্তি এলাকায় জনসংযোগকালে বস্তিবাসীর জন্যে স্থায়ী বসতি ও বাড়ি গড়ে ত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এসময় লিটনকে কাছে পেয়ে নিজেদের দুঃখ-দুর্দশার কথা জানান বস্তিবাসীরা। লিটনের প্রতিশ্রুতিতে আশ্বস্ত হয়ে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে খায়রুজ্জামান লিটনকে ভোট দেয়ার অঙ্গীকার করেন তারা। এদিকে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল শনিবার সকালে নগরীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাদুড়তলা এলাকায় গণসংযোগ করেন। বুলবুলের এই প্রচারে দীর্ঘদিনের বিদ্বেষ ভুলে অংশ নিলেন সাবেক এমপি ও রাজশাহী জেলা বিএনপির হেভিওয়েট নেতা নাদিম মোস্তাফা। বিএনপির সাবেক মেয়র মিনুর সঙ্গে দীর্ঘদিনের বৈরিতা ছিল তার। গণসংযোগে সাবেক মেয়র মিনুও উপস্থিত ছিলেন। পরে তারা উভয়েই বুলবুলের সঙ্গে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত ‘জনগণের মুখোমুখি মেয়র প্রার্থীরা’ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এসময় দুজনকেই পাশাপাশি বসতে দেখতে পাওয়া যায়। মিনু-নাদিম নিজেদের মধ্যে গল্পেও মেতে ওঠেন। সম্প্রতি নাদিমকে প্রচারে নামতে তার বাড়িতে যান মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। কিন্তু নাদিম মোস্তাফা তাকে ফিরিয়ে দেন। তবে শেষ পর্যন্ত শনিবার সকালে বুলবুলের পাশে দাঁড়ান নাদিম। জনগণের মুখোমুখি মেয়র প্রার্থীরা ॥ রাজশাহীতে জনগণের মুখোমুখি হলেন সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী চার মেয়র প্রার্থী। দিলেন ভোটারদের নানা প্রশ্নের উত্তর। সেই সঙ্গে তুলে ধরলেন নিজের পরিকল্পনার কথা, যা তারা মেয়র নির্বাচিত হলে করতে চান। চার প্রার্থীর সবাই দুর্নীতিমুক্ত নগর ভবন গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। রাজশাহী সিটি নির্বাচনে মোট পাঁচজন মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন। তবে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত ‘জনগণের মুখোমুখি মেয়র প্রার্থী’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন উপস্থিত ছিলেন না। শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত নগরীর সাহেববাজার এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তবে সুজনের ওই অনুষ্ঠানে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম সরকার উপস্থিত সবার উদ্দেশে বলেন, রাজশাহী-৫ আসনের এমপি কাজী আবদুল ওয়াদুদ দারার মায়ের জানাজায় অংশ নেয়ার জন্য খায়রুজ্জামান লিটন আসতে পারেননি। এ সময় তিনি লিটনের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করেন। জনগণের মুখোমুখি অনুষ্ঠানে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ছাড়াও গণসংহতি আন্দোলন সমর্থিত প্রার্থী মুরাদ মোর্শেদ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাবিবুর রহমান ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বাংলাদেশের শফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে আফজাল হোসেন নামে এক ভোটার সদ্য সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে প্রশ্ন করেন, আপনি দায়িত্বে থাকাকালে হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানো হলো। আপনি কেন কমালেন না? রাস্তাঘাটে ঝাড়ু দেয়া হয়নি। আপনি কেন নগর পরিচ্ছন্ন রাখেননি? পাঁচ বছরে আপনি কি করেছেন? জবাবে বুলবুল বলেন, পাঁচ বছরের মধ্যে আমি ৩৪ মাস জেলখানা আর কোর্টের বারান্দায় থেকেছি। বাকি সময় শিখেছি এবং জনগণের জন্য কাজ করেছি। কী করেছি সেটা সবাই জানেন। এবার নির্বাচিত হলে এবং সরকার সহযোগিতা করলে রাজশাহী নগরীকে একটি সমৃদ্ধ নগরীতে পরিণত করব। আমি যতদিন দায়িত্বে থেকেছি, নগর ভবনে কোন দুর্নীতি ছিল না, আগামীতেও হবে না। আবদুল্লাহ আল মুঈজ নামে এক ভোটার স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী মুরাদ মোর্শেদকে প্রশ্ন করেন, ভোটের আগে সবাই বলে দুর্নীতি করব না, আপনি নির্বাচিত হওয়ার পর দুর্নীতি করবেন না তার নিশ্চয়তা কী? জবাবে মুরাদ মোর্শেদ বলেন, নিজের কোন স্বার্থ ছাড়াই ২০ বছর ধরে মানুষের জন্য কাজ করছি। অতীতে কোন দুর্নীতি করিনি। তাই আস্থা রাখতে পারেন, পরেও দুর্নীতি করব না। অনুষ্ঠান শুরুর আগে চার মেয়র প্রার্থী একে অপরের হাতে হাত রেখে অঙ্গীকার করেন, আচরণবিধি মেনে তারা নির্বাচন করবেন। নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে সুজনের একটি কাগজে স্বাক্ষরও করেন। উপস্থিত ভোটাররাও সকল প্রভাবের উর্ধে থেকে যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করার শপথ নেন। সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। সভাপতিত্ব করেন, সুজনের মহানগর কমিটির সভাপতি পিয়ার বক্স। জেলা কমিটির সভাপতি আহমেদ শফিউদ্দিন এতে স্বাগত বক্তব্য দেন। উল্লেখ্য, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন, ৩০টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৬০ জন এবং ১০টি সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে ৫২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগামী ৩০ জুলাই ১৩৮টি ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ১৮ হাজার ১৩৮ জন। এর পুরুষ ভোটার এক লাখ ৫৬ হাজার ৮৫ ও নারী ভোটার এক লাখ ৬২ হাজার ৫৩ জন। . সিলেটে চলছে বিরামহীন প্রচার সালাম মশরুর সিলেট অফিস ॥ প্রার্থীরা ঝাঁপিয়ে পড়েছেন মাঠে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিরামহীন চলছে প্রচার। ভোটকে সামনে রেখে ভোটারদের দাবি দাওয়া দেনা পাওনা চলে এসেছে সামনে। রাস্তাঘাট, পানীয়জল, যানজটসহ উল্লেখযোগ্য সমস্যার সমাধান চান নগরবাসী। নগরবাসীর চাহিদা পূরণে প্রার্থীরা নিজেদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টার প্রতিশ্রুতির কথা ব্যক্ত করছেন বিনয়ের সঙ্গে। ভোটারদের মন জয় করার জন্য শক্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে মেয়র প্রার্থীদের। বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি, জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতীক নৌকা। সিসিক নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী কামরানের বিজয় নিশ্চিত করতে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভালবাসা অর্জন করে ৩০ জুলাই বিপুল ভোটের মাধ্যমে নৌকা ও কামরানকে বিজয়ী করতে হবে। আধুনিক নগরী গড়তে সর্বস্তরের মানুষ নৌকা প্রতীকের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ। ড. আব্দুল মোমেন শনিবার সকালে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন সিলেট মহানগর শাখার উদ্যোগে সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের সমর্থনে গণসংযোগকালে এ কথাগুলো বলেন। গণসংযোগকালে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী সভাপতি এ্যাডভোকেট মশিউর মালেক, সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান জোদ্দার, মোফাজ্জল হক শিকদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাশেদা হক কনিকা, ইসমাইল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু উত্তম কুমার দাশ, মোতালেব হোসেন, প্রকাশনা সম্পাদক নূরুন্নাহার, সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শারমিন আক্তার ময়না, সহ-সমাজ কল্যাণ সম্পাদক রোকসানা খান, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন মহানগর শাখার উপদেষ্টা কলামিস্ট বেলাল আহমদ চৌধুরী, সভাপতি অধ্যাপক শংকর চৌধুরী, সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কফিল উদ্দিন মিয়া কাঞ্চন, সাধারণ সম্পাদক বদরুল ইসলাম লস্কর রাজু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাদ হোসেন, গোপাল রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল কাদির চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক অরুপ রায়, সহ-প্রচার সম্পাদক এ্যাডভোকেট আবুল কাশেম, সহ-দপ্তর সম্পাদক এ্যাডভোকেট আকবর হোসেন, সদস্য আলী উজ্জামান বাবুল, জসিম উদ্দিন, ২৬নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক সুহেল আহমদ, ৫নং ওয়ার্ড সভাপতি জাকারিয়া হোসেন জাকির, ১৮নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক এস ডি সুমেল প্রমুখ। ড. মোমেন নগরীর ধোপাদিগীরপার, বন্দরবাজার এলাকায় মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের পক্ষে নৌক মার্কায় ভোট চেয়ে গণসংযোগকালে লিফলেট বিতরণ করেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেছেন, সিলেটে নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। নগরবাসী তাদের প্রিয় প্রতীক নৌকায় ভোট দিতে উদগ্রীব। নগরজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। নির্বাচন সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। শনিবার সিলেট নগরীর কামালগড় ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় গণসংযোগকালে তিনি একথা বলেন। গণসংযোগকালে মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের সঙ্গে ছিলেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ্যাডভোকেট বেলাল হোসাইন, প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহজাহান ভূঁইয়া মাখন, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ফজলুল হক আতিক, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সাজ্জাদ হায়দার লিটন, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা আতাউর রহমান সেলিম, এমআই আহমদ শওকত, জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদ, মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক আলম খান মুক্তি, যুগ্ম আহ্বায়ক মুশফিক জায়গীরদার, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মহসিন কামরান। যুবলীগ॥ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের পক্ষে গণসংযোগ করেছেন হবিগঞ্জ যুবলীগের নেতৃবৃন্দ। শনিবার দুপুরে হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা শাহ নেওয়াজ মিলাদ গাজি, আতাউর রহমান সেলিম, বোরহান উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে দেওয়ান ফরিদ গাজীর বাস ভবন হইতে ১, ১১ ও ১২নং ওয়ার্ডে তারা গণসংযোগ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক আতিক, সিলেট জেলা পরিষদ সদস্য এ জেড রওশন জেবিন রুবা, সিলেট জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদ, সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি, জেলা যুবলীগ নেতা ও খাদিমপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আফসর আহমদ, হবিগঞ্জ জেলা যুবলীগ সিনিয়র সহ-সভাপতি দেওয়ান শাহেদ গাজী, সজল রায়, সওকত আহমদ, এসএম আব্দুর রউফ মাসুক, ওয়াহেদুজ্জামান বাবুল, বিপ্লব রায় চৌধুরী, শফিকুজ্জামান, ফেরদৌস আহমদ, তাজ উদ্দিন আহদম তাজ, মোঃ ফারুক পাঠান, শাহ আলম সিদ্দিকী, সবুজ আহমদ, শাহরিয়া চৌধুরী সুমন, গুল আহমদ কাজল, আলম মিয়া, শাহ বাহার, শাহ দরাজ, সেলিম আহমদ, সৈয়দ রুহেল, দেওয়ান লুৎফুর রহমান, নজরুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম কবীর, সাইফুর রহমান টিপু, বদরুল আলম, শাহ মঈন উদ্দিন, জসিম উদ্দিন, দেওয়ান মোঃ নেওয়াজ, ইয়াকুব আলী, আবুল কালাম আজাদ, মোঃ সাইদুর রহমান, তবারক হোসেন, মোঃ জব্বার আলী, মোঃ আব্দুল্লাহ, ইকবাল হোসেন খান, রাহুল, শিমুল। কেন্দ্রীয় যুবলীগ ॥ আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের পক্ষে দ্বিতীয় দিনের মতো সিলেট নগরীতে প্রচার চালিয়েছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতারা। শনিবার নগরীর কামালগড়, কালিঘাট ও ছড়ারপার এলাকায় সিলেটের জেলা ও মহানগর যুবলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নৌকার লিফলেট বিতরণ করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডয়াম সদস্য এ্যাডভোকেট বেলাল হোসাইন, প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল কুদ্দুস মাখন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক আতিক, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান লিটন, সহ সম্পাদক শাহীন মালুম, কেন্দ্রীয় সদস্য এন আই সৈকত, এ্যাডভোকেট আরকার, মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক আলম খান মুক্তি, হবিগঞ্জ জেলা সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, জেলা যুবলীগের সভাপতি শামিম আহমদ, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মহশিন কামরান, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মুশফিক জায়গিরদার, যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম আহমদ সেলিম, ৪নং খাদিম পাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আফসর আহমদ, সুবেদুর রহমান মুন্না, জাকিরুল আলম জাকির, আমিনুর রহমান সুহেল, সুহেল আহমদ, শাকারিয়া হুসেন শাকির, এমদাদ হুসেন ইমু, সেবুল আহমদ সাগর, আব্দুর রহমান সুমেল, রুপম আহমদ, বাবুল আহমদ, জাহাঙ্গীর মহসিন, রুবেল আহমদ। প্রচারকালে নেতারা জনগণের কাছে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা- এবং আগামী দিনের নগর উন্নয়ন পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন। নেতারা বলেন- সিলেটে যা উন্নয়ন হয়েছে তা একমাত্র শেখ হাসিনা ও সফল অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের অবদান। এই সরকার ক্ষমতায় না থাকলে এই উন্নয়ন হতো না। এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় নৌকার প্রার্থী বদর উদ্দিন কামরানকে বিজয়ী করার আহ্বান জানান। আরিফুল হক চৌধুরী ॥ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী বলেছেন, বিগত দিনে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর যতদিন দায়িত্বে ছিলাম নগরবাসীর কল্যাণে ব্যক্তি স্বার্থের উর্ধে ওঠে বৃহত্তর স্বার্থে আগামী প্রজন্মের জন্য কাজ করেছি। মহানগরের রাস্তাঘাটের উন্নয়ন থেকে শুরু করে ছড়া খাল উদ্ধার পর্যন্ত যত উন্নয়ন করেছি, সবকিছুই বৃহত্তর স্বার্থে করেছি-নতুন প্রজন্মের কথা চিন্তা করে করেছি। শনিবার সকালে মহানগরীর দরগামহল্লা, মীরেরময়দান, মাদ্রাসা মাঠের পশ্চিম এলাকায় গণসংযোগকালে এসব কথা বলেন। গণসংযোগকালে আরিফুল হক চৌধুরী আরও বলেন, যেসব উন্নয়ন কাজ করেছি তা আজ দৃশ্যমান এবং নগরবাসী প্রতিটি উন্নয়ন কাজের শুরু থেকে শেষপর্যন্ত আমার কর্মকা- অবলোকন করেছেন। জনগণের জন্য কাজ করেছিলাম বলেই আমাকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আল্লাহর রহমতে হযরত শাহজালালের এই পুণ্যভূমির ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল জনগণের দোয়ায় তাদের সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়ে গেছে। ৩০ জুলাইয়ের নির্বাচন নিয়েও ষড়যন্ত্র করে লাভ নেই। সিলেটবাসী শান্তিপ্রিয় এবং উন্নয়নকামী। শান্তিপূর্ণভাবেই তারা ভোটকেন্দ্রে যাবেন এবং ধানের শীষকে বিজয়ী করবেন। গণসংযোগকালে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও নেজামী ইসলাম পার্টির চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, মহানগর খেলাফত মজলিসের সহ-সভাপতি আব্দুল হান্নান তাপাদার, মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতা সিদ্দিকী ও মাহবুব চৌধুরী, জেলা বিএনপি নেতা আবুল কাশেম, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মাহবুবুল হক চৌধুরী, ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রায়হান উদ্দিন মুন্না, সাধারণ সম্পাদক জেবুল হোসেন ফাহিম, বিএনপি নেতা মুফতি বদরুন নূর সায়েক, মাসুদ আহমদ আফতাব, সৈয়দ মুজিব, ছাদিক মিয়া, জাহাঙ্গীর আহমদসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ২০ দলীয় জোটের মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর পক্ষে শুক্রবার ও শনিবার গণসংযোগ করেছেন তার সহধর্মিণী সামা হক চৌধুরী। শনিবার বেলা ১১টা থেকে দক্ষিণ সুরমায় গণসংযোগ করেন তিনি। দক্ষিণ সুরমার কুশিঘাট, গোটাটিকর, অবিনন্দীসহ আশপাশের বাসাবাড়ি ও পাড়া মহল্লার গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ সর্বস্তরের জনগণের সঙ্গে তিনি মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর পক্ষে দোয়া চান এবং ধানের শীষের পক্ষে ভোট কামনা করেন। সামা হক চৌধুরী গণসংযোগকালে আরিফুল হক উন্নয়ন কর্মকা- তুলে ধরে বলেন, ৫ বছরের জন্যে নির্বাচিত হলেও প্রায় তিন বছর কারাগারে বন্দী ছিলেন তিনি। মিথ্যা মামলায় পরিবার পরিজন ছেড়ে বন্দী থাকার দুঃসহ যন্ত্রণা ভুলে জেল থেকে বের হওয়ার পরও মনে কোন ক্ষোভ পুষে রাখেননি আরিফ। তিনি অতীতের অবিচার অন্যায় ভুলে শুধু সিলেটের উন্নয়নের স্বার্থে আবারও নবোদ্যমে কাজ শুরু করেছিলেন, যা সিলেটবাসী জানেন। সুতরাং একটা মানুষের এত ত্যাগ তিতিক্ষা বৃথা যেতে পারে না, সিলেটের প্রতি তার মায়া দেখে সবার মতো আমিও তার জন্য ভোট চাইতে দুয়ারে দুয়ারে এসেছি এবং আমি সিলেটবাসীর কাছ থেকে যে সাড়া পাচ্ছি তা অভাবনীয়। জনতার আরিফ আবার জনতার উন্নয়নের কা-ারী হবেন এ ব্যাপারে আমি দৃঢ় আশাবাদী। পীর সাহেব চরমোনাই ॥ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মোঃ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, শাহজালালের পুণ্যভূমি সিলেট নগরীকে সন্ত্রাসী দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত একটি মডেল সিটি গড়তে প্রফেসর ডাঃ মোয়াজ্জেম হোসেন খানকে হাতপাখা মার্কায় ভোট দিন। পথসভায় উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শাহজালাল (রহ.) চিন্তা চেতনায় যে আদর্শ লালন করেছিলেন তা আমরা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছি। স্বাধীনতার ৪৭ বছরে আমরা দেখেছি বাংলাদেশ ৫ বার দুর্নীতিতে প্রথম হয়েছে। রক্ষক যখন ভক্ষক হয় দেশের মানুষ তখন শান্তি পায় না। এর যুক্তিসঙ্গত স্বচ্ছ কোন বিচারও দেখিনাই। দেশের মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রাজনৈতিক শক্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে সৎ ও যোগ্য ন্যায়নীতিবান লোককে গ্রহণ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসী দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে দেশের জনগণ জেগে উঠেছে। ইসলাম ছাড়া সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত সমাজ গঠন সম্ভব নয়। সিসিক নির্বাচনে হাতপাখা প্রতীকের সমর্থনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সিলেট মহানগরের উদ্যোগে শনিবার দুপুর ২টায় সিলেট নগরীর আম্বরখানা পয়েন্টে এক নির্বাচনী পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি কথাগুলো বলেন। মহানগর সভাপতি নজির আহমদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা মাহমুদুল হাসানের পরিচালনায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন সিসিক মেয়র প্রার্থী, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য প্রফেসর ডাঃ মোয়াজ্জেম হোসেন খান। শতভাগ নিরপেক্ষ নির্বাচনের নিশ্চয়তা নির্বাচন কমিশনারের সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের শতভাগ নিরপেক্ষ নির্বাচনে নিশ্চয়তা দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম। তিনি দাবি করেছেন- সিলেটে সিটি কর্পোরেশনে সার্বিক নির্বাচনী পরিস্থিতি অত্যন্ত সুন্দর। কোন রকম অনিয়ম নেই। প্রার্থীরা স্বাধীনভাবে প্রচার চালাচ্ছেন। কোন বাধা-বিঘ্নতা সৃষ্টি করা হচ্ছে না। আর এটি অব্যাহত থাকবে ভোটের দিন পর্যন্ত। তবে এটি বাস্তবায়নে সকল প্রার্থীকে সতর্ক থাকতে হবে। সিলেটবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে। নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেছেন, সিলেটের সার্বিক নির্বাচন পরিস্থিতি অত্যন্ত ভাল। এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে। এজন্য নির্বাচন কমিশন, জেলা ও পুলিশ প্রশাসন একযোগে কাজ করছে। তারপরও প্রার্থীরা যে অভিযোগ-অনুযোগ জানাচ্ছেন তার একটিও থাকবে না যদি প্রত্যেক প্রার্থী প্রতিটি কেন্দ্রে এজেন্ট নিয়োগ দেন। প্রার্থীর এজেন্টরা যদি যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেন তবে আমি ১০০ ভাগ গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি সিলেটে সম্পূর্ণ সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। রফিকুল ইসলাম আরোও বলেন, তারপরেও যদি কোন প্রার্থীর কোনরকম সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে তবে আমাদেরকে লিখিতভাবে জানান। আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। যদি কোন কর্মকর্তা ব্যবস্থা না নেন তবে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ২০১৮ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সঙ্গে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। নগরীর রিকাবীবাজারস্থ কবি নজরুল ইসলাম অডিটোরিয়ামে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মোঃ আলীমুজ্জামান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার নাজমানারা খানুম, বাংলাদেশ পুলিশের সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি কামরুল আহসান, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার গোলাম কিবরিয়া ও সিলেটের জেলা প্রশাসক নুমেরী জামান। মতবিনিময় সভায় প্রার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরান বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী, নাগরিক কমিটি মনোনীত বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী বদরুজ্জামান সেলিম, স্বতন্ত্র প্রার্থী মহানগর জামায়াতের আমির এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, ইসলামী আন্দোলন মনোনীত প্রার্থী কেন্দ্রীয় সদস্য ডাঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, সিপিবি-বাসদ মনোনীত প্রার্থী আবু জাফর ও হরিণ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী এহসানুল হক তাহের এবং সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত আসনে নারী কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালিক, রেজওয়ান আহমদ, সৈয়দ তৌফিকুল হাদি, নিলুফার সুলতানা চৌধুরী লিপি, পারুল মজুমদার, মখলিছুর রহমান কামরান, শামীমা স্বাধীন, শেখ তোফায়েল আহমদ সেপুল, ইব্রাহিম খান সাদেক, সেলিম আহমদ রনি, এমদাদ হোসেন চৌধুরী, লায়েক আহমদ চৌধুরী, রাজিক মিয়া, আফতাব হোসেন খান। এ ছাড়া মতনিনিময় সভায় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ১৯৬ প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচন কমিশনার বলেন আসন্ন সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও আনসার বাহিনী মোতায়েনের পাশাপাশি প্রয়োজনে ‘অন্য ফোর্সও’ মোতায়েন করা হবে। নিরাপত্তার স্বার্থে অস্ত্র ও অস্ত্র ছাড়া আসনার বাহিনী মোতায়েন থাকবে। এছাড়া পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি প্রয়োজনের তুলানায় বেশি মোতায়েন করা হবে। তিনি বলেন, কোন কারণে যদি প্রয়োজন হয় তবে আমরা ‘অন্য ফোর্স’ কেউ ডাকতে বাধ্য হবো। আমরা কোন দ্বিধা করব না তাদের ডাকতে। কিন্তু আমার বিশ্বাস যে ফোর্স আমরা মোতায়েন করছি সেটা প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত। তবে সেনাবাহিনী মোতায়েনের কোন সম্ভাবনা আছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি বলেন, কিসের জন্য সেনাবাহিনী প্রয়োজন হবে? সিলেটবাসী কি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবে? যদি যুদ্ধ ঘোষণা করেন তবে সেনাবাহিনী ডাকব।
×