ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আধুনিক বাংলাদেশ গঠনে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১১ জুলাই ২০১৮

আধুনিক বাংলাদেশ গঠনে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রাশিয়ার অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা এবং সদ্য স্বাধীন দেশ পুনর্গঠনে রাশিয়ার ভূমিকা বাংলাদেশের জনগণ কখনও ভুলবে না। বর্তমানে আধুনিক বাংলাদেশ গঠনে রাশিয়া বাংলাদেশকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার। বাংলাদেশ-রাশিয়া মৈত্রী সমিতির উদ্যোগে মঙ্গলবার ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী মিলনায়তনে বিকেল সাড়ে ৪টায় ‘বাংলাদেশ রাশিয়া সম্পর্ক, মুক্তিযুদ্ধের পরীক্ষিত বন্ধু ও উন্নয়ন সহযোগী, বর্তমান প্রেক্ষিত’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাঃ মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার একথা বলেন। সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ইগনাতব, রাশিয়ার নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. সাইফুল হক। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ-রাশিয়া মৈত্রী সমিতির সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাঃ মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার। মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, ‘আজকের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ রাশিয়ার সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানি রাশিয়া আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে দেশের জনগণ যখন সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তখন একদিকে প্রায় ১ কোটি শরণার্থী ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল, অন্যদিকে দেশের ভেতরে চলছিল নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। এই অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের প্রধান বন্ধু ভারতের সমর্থন যেমন অপরিহার্য ছিল, তেমনি প্রয়োজন ছিল বৃহৎ শক্তির হুমকি মোকাবেলার জন্য রাশিয়ার সমর্থনও। যুদ্ধ চলাকালে সোভিয়েত ইউনিয়ন বাঙালী মুক্তিযোদ্ধাদের বিস্তৃত সামরিক ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছিল। সেইসঙ্গে ১৯৭২ সালে যুদ্ধ বিধ্বস্ত চট্টগ্রাম বন্দরে ডুবে থাকা জাহাজ অপসারণ ও মাইনমুক্ত করে মৃতপ্রায় অচল বন্দরকে সচল করেছিল সোভিয়েত নাবিকরা। এ ছাড়া, ৮০ ও ৯০ এর দশক পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট বিদ্যুত উৎপাদনের প্রায় ৪০ শতাংশই রাশিয়ার স্থাপিত বিদ্যুতকেন্দ্রগুলো থেকে এসেছে। শুরু থেকেই রাশিয়া বাংলাদেশ থেকে পাট, চা আমদানি করেছে। আমাদের কৃষি, শিল্প ও জীবনযাত্রার মান বাড়ানোর ক্ষেত্রে, পৃথিবীর সর্ববৃহৎ গ্যাস কোম্পানি ‘গ্যাজপ্রম’ আজ বাংলাদেশে কাজ করছে। ’ বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এতদিন বাংলাদেশ ছিল স্বল্পোন্নত দেশ। ক্ষুধা, দারিদ্র্য, মঙ্গা, বেকারত্ব ছিল এদেশের মানুষের নিত্য সঙ্গী। ৮০ ও ৯০ এর দশকে সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া ও মালয়েশিয়া অর্থনীতিতে যে সাফল্য অর্জন করেছিল এর পর বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে মাত্র ৯ বছরে অভাবনীয় উন্নয়ন ঘটেছে। একমাত্র বাংলাদেশই জাতিসংঘ ঘোষিত ‘সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’ এমডিজি’র প্রায় সকল লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশে আজ প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ, মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৫২ মার্কিন ডলারে। অতি দারিদ্র্যের হার কমে দাঁড়িয়েছে ১১ শতাংশে। মানুষের গড় আয়ু এখন ৭২ দশমিক ৫ বছর আর সাক্ষরতার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩ শতাংশে। বাংলাশে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করেছে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’। নতুন নতুন ফ্লাইওভার, এলিভেটেড এক্সপ্রেস হাইওয়ে, মেট্রোরেল, হাইটেক পার্ক এ সকল বহুমাত্রিক উন্নয়ন কর্মকা- দ্রুতই পাল্টে দিচ্ছে বাংলাদেশকে। ‘সোনার বাংলা’ কিংবা ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ আজ আর শুধুই স্বপ্ন নয়, এটি আজ বাস্তবতা, সবকিছুই দৃশ্যমান।’
×