ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

উরুগুয়ে ২-০ গোলে পরাজিত

সহজেই সেমিতে ফ্রান্স

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ৭ জুলাই ২০১৮

সহজেই সেমিতে ফ্রান্স

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ শুক্রবার বিশ্বকাপের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে উরুগুয়েকে ২-০ গোলে হরিয়ে সেমিফাইনালে উঠে গেছে ফ্রান্স। ফরাসীদের হয়ে ৪০, ৬১ মিনিটে গোল করেন যথাক্রমে রাফায়েল ভারানে, এ্যান্টনি গ্রিজম্যান। সাবেক দুই চ্যাম্পিয়ন দলের লড়াই ঘিরে আগ্রহের কমতি ছিল না। একদিকে লুইস সুয়ারেজ-ক্রিস্টিয়ান স্টুয়ানি, অন্যদিকে গ্রিজম্যান-কিলিয়ান এমবাপে। বলা হচ্ছিল অভিজ্ঞতা ‘বনাম’ তারুণ্যের গতির দ্বৈরথ। কিন্তু মাঠের খেলায় আধিপত্য দেখিয়েছে ফরাসীরাই। বল দখল কিংবা হঠাৎই পাল্টাআক্রমণে গিয়ে উরুগুয়াইনদের কাঁপিয়ে দিয়েছে জিনেদিন জিদানের উত্তরসূরিরা। এত বড় ম্যাচে প্রথম গোলই যেখানে সবসময় গুরুত্বপূর্ণ সেটিতে প্রত্যক্ষ অবদান রাখার পর দ্বিতীয় গোলটা করে নিরঙ্কুশ পার্থক্য গড়ে দেন তারকা ফরোয়ার্ড গ্রিজম্যান। সমান প্রতিদ্বন্দ্বিতায় শুরু করলেও ৪০তম মিনিটে সবচেয়ে বড় ভুলটা করে বসে উরুগুয়ে। কোরেন্তিন তোলিসোকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন রদ্রিগো বেন্তাঙ্কুর। ফ্রি-কিক পায় ফান্স। গ্রিজম্যানের দুর্দান্ত সেট পিস থেকে বল পেয়ে বক্সের মধ্যে মাথা ছুঁইয়ে দেন ডিফেন্ডার রাফায়েল ভারানে। পোস্টের বাঁ-কোণা দিয়ে বল ঢুকে যায় জালে (১-০)। চার মিনিটের ব্যবধানেই গোল শোধ করার খুব কাছেই চলে এসেছিল উরুগুয়ে। লুকাস তোরেইয়ার কাছ থেকে বল পেয়ে দারুণ একটি হেড করেছিলেন মার্টিন ক্যাসেরাস, ফ্রান্স গোলরক্ষক লসির সেটা ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ফিরিয়ে দেন অসাধারণ দক্ষতায়। এরপর দুই দলই আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ করেছে, তবে প্রথমার্ধে আর গোল হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধে ৬১ মিনিটে উরুগুয়ের গোলরক্ষক মুসলেরার মারাত্মক এক ভুলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ফ্রান্স (২-০)। ২৫ গজ দূর থেকে শট নিয়েছিলেন গ্রিজম্যান। সোজা আসা বলটা মুসলেরা ধরতে না, কী কারণে পাঞ্চ করতে চাইলেন, সেটা তিনিই ভাল জানেন! বল তার হাত ফসকে জালে জড়িয়ে যায়। ম্যাচের বাকি সময়ে আর কোন গোল হয়নি। এর আগে ম্যাচের শুরুতে ৫ মিনিটেই ভাল একটি সুযোগ তৈরি করেছিল উরুগুয়ে। লুইস সুয়ারেজের পাস থেকে বক্সের মধ্যে বল পেয়েছিলেন ক্রিশ্চিয়ান স্টুয়ানি। ব্যর্থ হন এডিনসন কাভানির বদলে আসা এই স্ট্রাইকার। সপ্তম মিনিটে ফ্রান্সের লুকাস হার্নান্দেজের বক্সের বাইরে থেকে নেয়া বাঁ পায়ের শটও পোস্টের বাম দিক দিয়ে বেরিয়ে যায়। ১৪ মিনিটে বক্সের একদম মাঝ প্রান্তে হোসে গিমেনেজের হেড সহজেই ধরে ফেলেন ফ্রান্স গোলরক্ষক হুগো লরিস। পরের মিনিটেই বড় আরেকটি সুযোগ তৈরি করেছিল ফরাসীরা। বেনজামিন পাভাদের ক্রস থেকে বক্সে অলিভার জিরোর মাথা হয়ে বল পেয়েছিলেন কিলিয়ান এমবাপে, নিয়েছিলেন হেডও। কিন্তু সেটা একটুর জন্য বারের ওপর দিয়ে চলে যায়। ১৯ মিনিটে দূর থেকে নেয়া পল পগবার জোরালো শটও বারের ওপর দিয়েই গেছে। শুক্রবার কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় দুইবারের চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে এবং একবারের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। প্রথমবার, ১৯৩০ ও ১৯৫০ সালের চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে সর্বশেষ সেমিফাইনাল খেলেছে ২০১০ সালে। হেরেছিল নেদারল্যান্ডসের কাছে। পরে স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ৩-২ গোলে জার্মানির কাছে হেরে চতুর্থ হয়েছিল বিশ্বকাপ ইতিহাসের প্রথম চ্যাম্পিয়নরা। অন্যদিকে দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখতে নামে ফ্রান্স। ১৯৯৮ সালে ঘরের মাঠে ফাইনালে ব্রাজিলকে হারানো ফ্রান্স পরে আরেকবার ফাইনাল খেলেছিল ২০০৬ সালে, জার্মানি বিশ্বকাপে। ইতালির কাছে তাদের হারতে হয়েছিল টাইব্রেকারে। এবারের ফ্রান্স দলটি তারুণ্যনির্ভর। তরুণ এমবাপের চমকে তারা দ্বিতীয় রাউন্ডে বিদায় করে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনাকে।
×