ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

লিটনের সম্পদ বেড়েছে কয়েকগুণ, বুলবুলের আয় ৭ গুণ

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ৪ জুলাই ২০১৮

লিটনের সম্পদ বেড়েছে কয়েকগুণ, বুলবুলের আয় ৭ গুণ

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ আসন্ন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রধান দুই দলের দুই প্রার্থীর সম্পদ ও আয় বেড়েছে অস্বাভাবিক। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের প্রধান পেশা আইন হলেও এ পেশা থেকে কোন আয় না থাকলেও সম্পদ বেড়েছে কয়েকগুণ। আর মেয়র থাকার সময় সাতগুণ আয় বেড়েছে বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের। নির্বাচন অফিসে দাখিল করা হলফনামায় তারা আয়ের বিবরণী দিয়েছেন। এই দুই প্রার্থীর নির্বাচন কমিশনে দেয়া হলফনামার তথ্যানুযায়ী মেয়র প্রার্থী লিটনের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ পাস। পেশা আইনজীবী হলেও এ খাত থেকে তার কোন আয় নেই। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের নামেই জমা আছে এক কোটি ৩৮ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। এর আগে ২০১৩ সালের সিটি নির্বাচনের সময় লিটনের নামে ব্যাংকে জমা ছিল মাত্র ৫৮ হাজার টাকা। তারও আগে ২০০৮ সালের নির্বাচনে লিটনের হলফনামায় বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছিল দুই লাখ ৪৪ হাজার টাকা। মেয়র থাকাকালে লিটনের নামে দুই লাখ টাকা দামের নিজের নামে একটি গাড়ি ছিল। তবে এখন রয়েছে ৩৬ লাখ টাকার গাড়ি। ২০১৩ সালে স্ত্রীর কোন স্বর্ণ না থাকলেও এখন হয়েছে ৫০ ভরি। লিটন ২০০৮ সালে আইন পেশা থেকে বার্ষিক আয় দেখান ৬০ হাজার টাকা। তবে ২০১৩ সালের সিটি নির্বাচনের হলফনামায় আইন ব্যবসা পেশা হিসেবে দেখালেও এই খাত থেকে তার কোন আয় দেখানো হয়নি। এবারের হলফনামাতেও তেমনটিই করা হয়েছে। দাখিলকৃত হলফনামার সম্পদ বিবরণীতে লিটন গৃহসম্পত্তি থেকে পাঁচ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ টাকা, কৃষিখাত থেকে ১৬ লাখ টাকা, ব্যবসা থেকে ১২ লাখ টাকা, মূলধনী লাভ চার লাখ ২৩ হাজার ৮০ টাকা এবং অন্যান্য উৎস থেকে ১৯ লাখ নয় হাজার ৭০৮ টাকার বার্ষিক আয় দেখান। লিটনের নিট সম্পদের পরিমাণ দুই কোটি ৬৮ লাখ ৯৭ হাজার ১৫১ টাকা। এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘আমার যে সম্পদ তার সবটুকুই বৈধ উপায়ে অর্জিত এবং সম্পদের আয়কর যথাযথভাবে পরিশোধ করেছি।’ অপরদিকে হত্যাসহ ১২টি মামলার আসামি বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের পেশা ব্যবসা। হলফনামা অনুযায়ী, ২০১৩ সালে নির্বাচনের সময় তার ছিল নগদ ছয় লাখ ৬৫ হাজার টাকা। তবে গেল পাঁচ বছরে তা বেড়ে হয়েছে ৪২ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এ আয় বৃদ্ধির মাত্রা সাতগুণ। যদিও মাছ চাষ করে বছরে তার আয় মাত্র ছয় লাখ টাকা। বুলবুলের নিজের আছে ২৫ ভরি স্বর্ণ। তবে নিজের কোন বাড়ি নেই। তবে হিসেব করে দেখা যায়, ২০১৩ সালের চেয়ে এবার বার্ষিক আয় বেড়েছে সদ্যবিদায়ী মেয়র বুলবুলের। বেড়েছে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণও। হলফনামা থেকে জানা গেছে, ২০১৩ সালের নির্বাচনে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের নির্বাচন কমিশনে দাখিলকৃত হলফনামায় বার্ষিক আয় দেখান এক লাখ ৯২ হাজার টাকা। এবারের হলফনামায় বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ২১ লাখ ৫৭ হাজার ২৬০ টাকা। এই বার্ষিক আয় মেয়রের দায়িত্বে থাকা সম্মানী থেকে আসত বলে বুলবুল তার হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, মেয়রের দায়িত্ব পালনের সম্মানী থেকে আমার এ বার্ষিক আয়। আগের বছর তো মেয়র ছিলাম না। স্বাভাবিকভাবেই মেয়রের সম্মানী ভাতা পাওয়ায় আয় কিছুটা বেড়েছে। এই আয় সম্পূর্ণ বৈধ উপায়ে অর্জিত এবং এর আয়কর যথাযথভাবে পরিশোধ করেছি বলে দাবি করেন তিনি।
×