ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

কোটা আন্দোলনকারীরা প্রতিরোধের মুখে ॥ আটক রাশেদ ৫ দিনের রিমান্ডে

শিবির সংশ্লিষ্টতার কথা জেনে অনেকেই মুখ ফিরিয়েছেন

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ৩ জুলাই ২০১৮

শিবির সংশ্লিষ্টতার কথা জেনে অনেকেই মুখ ফিরিয়েছেন

বিভাষ বাড়ৈ/গাফফার খান চৌধুরী ॥ সরকারী চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবির আন্দোলনকারীদের অন্যতম নেতা রাশেদ খানকে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। আন্দোলনের নামে চলা নাশকতা তদন্তেও বেরিয়ে আসছে শিবিরের সংশ্লিষ্টতা আর অপপ্রচারের তথ্য। এদিকে বিক্ষোভ দেখাতে শহীদ মিনারে জড়ো হয়ে ফের পিটুনির শিকার হয়েছেন আন্দোলনকারী কয়েকজন। শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে একে একে শিবিরের সংশ্লিষ্টতার তথ্য-প্রমাণ বের হওয়ার পর এবার আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন অনেক সাধারণ শিক্ষার্থী। ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে রাশেদের দেয়া উগ্রবাদী ভিডিও বার্তা খতিয়ে দেখতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা। ভিডিও বার্তার ঘটনায় বিক্ষুব্ধ ছাত্র নেতাসহ প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা। এর আগে গত রবিবার সকালে ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক আল-নাহিয়ান খান জয় বাদী হয়ে শাহাবাগ থানায় রাশেদের বিরুদ্ধে তথ্য-প্রযুক্তি আইনে মামলা দায়ের করেন। এজাহারে আল-নাহিয়ান খান জয় বলেন, রাশেদ খান ফেসবুক লাইভে এসে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন। এছাড়া ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে আসছিল। রাশেদ খানের ফেসবুকে লাইভে এসে প্রায় সাড়ে ১৮ মিনিটের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। আর সেই মামলাতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। গত ২৭ জুন এই ভিডিওটি পোস্ট করা হয় ফেসবুকে যেখানে তিনি বারবার ছাত্রদের বাড়ি থেকে ক্যাম্পাসে ফিরে এসে আন্দোলনে নামার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রবাসীদের বলেছেন, তাদের পাঠানো রেমিটেন্স ভিন্নখাতে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণাকে তার নাম উল্লেখ না করে একাধিকবার প্রতারণা বলে উল্লেখ করেছেন রাশেদ। বলেছেন, ‘মনে হচ্ছে এই দেশ তার বাপের দেশ। সে একাই দেশের মালিক। ইচ্ছামতো যা ইচ্ছা বলবে, আর আমরা কোন কথা বলতে পারব না।’ সোমবার দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (উপপরিদর্শক) সজিবুজ্জামান রাশেদকে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করেন। ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক রায়হানুল ইসলাম উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ৫ দিনের রিমান্ড আদেশ দেন। এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গত এপ্রিল থেকে চলা এ আন্দোলন, নাশকতার তদন্তের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৮ এপ্রিল রাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সূত্র ধরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। শতাধিক আন্দোলনকারী আহত হন। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কৌশলে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় জামায়াত-শিবির। তারা কোটা সংস্কার আন্দোলনকে সরকার পতনের আন্দোলনে চূড়ান্ত রূপ দিতে লাশ ফেলার চেষ্টা করেছিল। এজন্য তারা আন্দোলনের মধ্যে গুলিও চালায়। গুলিতে এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে বলে তারা গুজব ছড়িয়ে দেয়। আর তারই জের ধরে ভিসির বাসভবনে স্মরণকালের ভয়াবহ জঘন্যতম হামলা চালানো হয়। দ্বিতীয় দফায় কবি সুফিয়া কামাল হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইফফাত জাহান এশা এক ছাত্রীর পায়ের রগ কেটে দিয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে দেয়। এশাকে মারধর করে জুতোর মালা পরিয়ে হল থেকে বের করে দেয়া হয়। তার ছবি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টা করে জামায়াত-শিবির। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানের সঙ্গে এক ঢাবি শিক্ষকের কথোপকথনে কোটা সংস্কার আন্দোলন সরকার হটাও আন্দোলনে রূপ দেয়ার চক্রান্তের বিষয়টি পরবর্তীতে আরও স্পষ্ট হয়ে যায়। পুরো ঘটনায় অপপ্রচারের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে শিবিরের ফেসবুক পেজ ‘বাঁশের কেল্লা’সহ কিছু অনলাইন পোর্টাল। ঘটনার রাতে গুলিবর্ষণের বিষয়ে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার জনকণ্ঠকে বলেন, ওই রাতে পুলিশের তরফ থেকে কোন প্রকার প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি। পিস্তল বা রাইফেল থেকে কোন প্রকার গুলি ছোড়া হয়নি। শুধু টিয়ারশেল ও শটগান থেকে রবার ও র্ছরার বুলেট ছোড়া হয়। আশিকের দেহে যে বুলেট থাকার কথা বলা হচ্ছে, তা পুলিশের নয়। তৃতীয় কোন পক্ষ লাশ ফেলে আন্দোলনকে সরকার পতনের আন্দোলনের দিকে ঘুরিয়ে দিতেই পরিকল্পিতভাবে কাউকে হত্যার উদ্দেশে গুলি চালিয়ে থাকতে পারে। আর সেই বুলেটেই বিদ্ধ হতে পারে আশিক। এদিকে পুলিশের গুলিতে ছাত্র নিহতের গুজব ছড়িয়ে ভিসির বাসভবনে পরিকল্পিত হামলা চালায় স্বাধীনতা বিরোধী চক্রটি। কবি সুফিয়া কামাল হলের বিষয়ে গুজব ছড়ানোর সঙ্গে স্বাধীনতা বিরোধী চক্রটি জড়িত বলে প্রাথমিক তদন্তেই জানা গেছে। তিনি আরও জানান, পুলিশের গুলিতে ছাত্র মৃত্যুর গুজব ছড়িয়েই ভিসির বাসভবনে স্মরণকালের ভয়াবহ জঘন্য হামলার ঘটনাটি ঘটানো হয়। হামলায় সব গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় এক মুক্তিযোদ্ধার গাড়িসহ দুটি গাড়ি। ভেঙ্গে চুরমার করা হয় ভিসির দুটি গাড়ি। ভিসির বাসভবন থেকে টাকাপয়সা, স্বর্ণালঙ্কার, মাছ-মাংস লুট হয়ে যায়। বেগম সুফিয়া কামাল হলেরই ছাত্রী ও ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী কমিটির উপ-অর্থ বিষয়ক সম্পাদক তিলোত্তমা সিকদারের মতে, আমাদের হলের ঘটনাসহ পুরো আন্দোলনের অন্যতম হাতিয়ার হচ্ছে সরকার বিরোধীদের ছড়ানো গুজব। একের পর এক মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়েছে। এখনও হচ্ছে। এ বিষয়ে সকলকে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। এমন ঘটনায় গত ১১ এপ্রিল সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষোভ প্রকাশ করে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। পরদিন ১২ এপ্রিল এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে নাশকতার ঘটনায় শাহবাগ মডেল থানায় মোট চারটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। মামলাগুলো প্রশিক্ষিত উর্ধতন ডিবি কর্মকর্তারা তদন্ত করছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা, ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত আলামত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তাতে মনে হয়েছে, কোটা সংস্কারের দাবিকে কেন্দ্র করে ভিসির বাসভবনে হামলার যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা অত্যন্ত পরিকল্পিত। হামলাকারীরা পেশাদার। ভিসির বাস ভবনের সিসি ক্যামেরাগুলো ভেঙ্গে ফেলেছে হামলাকারীরা। তারা সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক পর্যন্ত খুলে নিয়ে গেছে; যা হামলাকারীরা যে প্রশিক্ষিত, তা প্রমাণ করে। হামলাকারীদের অনেকের মুখ কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল। তাও রীতিমত রহস্যজনক। মামলাগুলোর তদন্তকারী সংস্থা ডিবি পুলিশ কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিন আহ্বায়ক রাশেদ খান, নুরুল হক ও ফারুক হোসেনকে টানা দুই ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে। শহীদ মিনারে ফের পিটুনি ॥ মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করতে শহীদ মিনারে জড়ো হয়ে ফের পিটুনির শিকার হয়েছেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরতরা। হাামলার জন্য তারা এবারও দায়ী করছেন ছাত্রলীগকে। তবে সেখানে উপস্থিত ছাত্রলীগ কর্মীরা বলেছেন, এর সঙ্গে ছাত্র লীগকে জড়িত করার সুযোগ নেই। শিবিরের সম্পৃক্ততার পর এখন আন্দোলন দুইভাবে বিভক্ত। মতবিরোধ চলছে। প্রগতিশীল যেসকল শিক্ষার্থী এমনকি ছাত্রলীগের যেসব কর্মী এর সঙ্গে এতদিন ছিলেন শিবিরের চেহারা প্রকাশের পর তারা আর আন্দোলনে নেই। এমন অবস্থায় সংঘর্ষ হওয়া অস্বাভাবিক নয়। ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী কমিটির সহসভাপতি আদিত্য নন্দী বলছিলেন, এই আন্দোলনটা শুরু থেকেই জামায়াত-শিবিরের গুজবের ওপর ভর করে চলেছে। এখন আরও পরিষ্কার হচ্ছে মূল নেতাদের সরকার বিরোধী তৎপরতা। এখানে ছাত্রলীগকে জড়িত করার কোন সুযোগ নেই। একই কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সায়েম খান বলছিলেন, এখন আর কারো বুঝতে বাকি নেই আন্দোলনের নামে নাশকতার মূলে আছে জামায়াত-শিবির ও তাদের বিভিন্ন মাধ্যম। এখনও অপপ্রচার, উস্কানি চলছে। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে রাশেদ খান যে ঔদ্ধত্যপূর্ণ ভিডিও বার্তা দিয়েছে তাকে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে সরকারকে। এ বিষয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদেরও সতর্ক হতে হবে। দুই দিনের হামলার অভিযোগের বিষয়ে গত কমিটির সহসভাপতি ছাত্রলীগ নেত্রী চৈতালী হালদার বলছিলেন, কিছু হলেই অপপ্রচার চলে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। জামায়াত-শিবিরকে এখন সাধারণ শিক্ষার্থীরাই প্রতিরোধ করছে। প্রগতিশীল প্রতিটি শিক্ষার্থী ওদের মূল নেতাদের চেহারা দেখে ফেলেছে। শিক্ষার্থীরা এখন সতর্ক। সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে কোন নাশকতার সুযোগ শিক্ষার্থীরাই দেবে না। ছাত্রলীগের বিগত কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক আল-নাহিয়ান খান জয় ও উপস্কুল বিষয়ক সম্পাদক অসিম কুমার বৈদ্য গত দুদিন ক্যাম্পাসের প্রতিটি ঘটনা দেখেছেন সামনে থেকে। তারা বলছিলেন, এক সময় প্রগতিশীল অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীই আন্দোলনে ছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ও এখন শিবিরের চেহারা প্রকাশের পর প্রগতিশীল প্রতিটি শিক্ষার্থী আন্দোলনের বাইরে চলে এসেছে। এখন এ বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপের সঙ্গে নাশকতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সময় হয়েছে। সোমবারের হামলার অভিযোগের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রাব্বানী বলেন, শনিবার যে ঘটনা ঘটেছে সে বিষয়ে আমি অবহিত হয়েছি। আমাদের প্রক্টরিয়াল টিম ও শিক্ষকরা যার যার অবস্থান থেকে কাজ করেছেন। তবে আজকের হামলা বা মারধরের বিষয়ে আমাকে কেউ অবহিত করেনি। কোটার বিষয়টা জটিল- মন্ত্রিপরিষদ সচিব ॥ সরকারী চাকরিতে কোটা বাতিলে প্রধানমন্ত্রীর ‘ঘোষণা’ বাস্তবায়নে দেরির জন্য এর ‘জটিলতাকে’ কারণ দেখালেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটা সরকারের উর্ধতন পর্যায়ে সক্রিয় বিবেচনাধীন আছে, আমাদের নিচের লেভেলে এখনও এটা টান্সমিটেড হয়নি। আসলে বিষয়টা যত আপনারা (সাংবাদিক) সহজভাবে বিশ্লেষণ করলেন অত সহজ নয়, জটিল আছে। এটা অনেক বিচার-বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত আসবে, তার আলোকে আমরা পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করব। কবে নাগাদ পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হতে পারে সেই প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা আমাদের পক্ষে অনুমান করা একটু কঠিন। সময়সাপেক্ষ ব্যাপার কিনা- সেই জিজ্ঞাসায় তিনি বলেন, একটু সময় লাগবে মনে হচ্ছে। এর আগে সরকারী চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল সংসদে বলেছিলেন, কোটা পদ্ধতিই থাকবে না, এটা ‘বাতিল’। একইসঙ্গে ওই দিনই কোটা নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করার কথাও বলেছিলেন, যে কমিটি পরবর্তী সুপারিশ করবে। কমিটি না হওয়ায় কোটা নিয়ে অনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করেননি জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলছেন, কমিটি হবে আশা করি, খুব দ্রুতই হবে ইনশাল্লাহ। এদিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, কোটা সংস্কার নিয়ে যে কথাবার্তা চলছে তা পরিকল্পিত যড়যস্ত্রের অংশ ছাড়া কিছু নয়। কোটা সংস্কারের সঙ্গে আসলে সাধারণ ছাত্রছাত্রীর কোন সম্পর্ক নেই। বিএনপি-জামায়াত যখন সরকারের বিরুদ্ধে কোন আন্দোলন করে সুবিধা করতে পারেনি তখন ছাত্রদেরক কোটার নাম করে পেছন থেকে মদদ দিয়ে পরিকল্পিতভাবে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনে হামলা কোন ছাত্র আন্দোলনের অংশ হতে পারে না। ঘটনাগুলো প্রমাণ করে কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলন বিএনপি-জামায়াতের সড়যন্ত্রের অপকৌশল। সোমবার কুষ্টিয়া শহরের নিজ বাসভবনে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বর্তমান সরকার বেইমানী করেছে বিএনপির এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন ঘোষণার পরও আন্দোলনে নামার পেছনে ‘রাজনীতি’ আছে বলে মনে করেন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। জাতীয় প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত এক আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, এতদিন পরে কোটা আন্দোলনকারীরা সরব হওয়ার পেছনে রাজনীতি রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোটা আন্দোলনকারীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের যে বক্তব্য প্রকাশ পেয়েছে তাতে এটা স্পষ্ট।
×