ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পাড়া-মহল্লায় ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ২২ জুন ২০১৮

  পাড়া-মহল্লায় ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) নির্বাচন ঘিরে আবারও জেগেছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা। মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি নগরীর ওয়ার্ডের পাড়া-মহল্লায় এখন সোচ্চার কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ইতোমধ্যে নগরীর ৩০ সাধারণ ওয়ার্ড ও ১০ সংরক্ষিত ওয়ার্ডে দেড় শতাধিক প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এবার রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত সাড়ে তিন থেকে চার শ’ প্রার্থী হবেন কাউন্সিলর পদে। তফসিল ঘোষণার পর সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীরা জাগিয়ে তুলেছেন পাড়া-মহল্লা। পুরাতনদের পাশাপাশি নতুনরাও আসছেন এ তালিকায়। আছেন বিতর্কিতরাও। সব মিলিয়ে রাজশাহী নগরীর ৩০ ওয়ার্ডের অলিগলিতে প্রচারে নেমেছেন তারা। যোগাযোগ রাখছেন ভোটারদের সঙ্গে। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সর্বশেষ ২০১৩ সালের নির্বাচনে বিএনপিপন্থী মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল নির্বাচিত হন। ওই সময় কাউন্সিলর পদেও সিংহভাগ নির্বাচিত হন বিএনপি পন্থীরা। তবে মেয়রের মতো নির্বাচিত কাউন্সিলররা গত ৫ বছর ছিলেন অন্তরালে। হাতেগোনা কয়েক কাউন্সিলর এলাকার উন্নয়নে অবদান রাখলেও বেশিরভাগ কাউন্সিলরের টিকিও ছুঁতে পারেননি নাগরিকরা। এবার তারাও নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন। তারাও আবার ভোটারদের দারস্থ হচ্ছেন। আবারও দোয়া চাচ্ছেন, ভোট প্রার্থনা করছেন। তবে নগরবাসী নাখোশ গতবারের নির্বাচিত বেশিরভাগ কাউন্সিলরের প্রতি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত নির্বাচনে রাজশাহী নগরীর ৩০ ওয়ার্ডের মধ্যে ২৫ ওয়ার্ডেই কাউন্সিলর নির্বাচিত হন বিএনপিপন্থীরা। নির্বাচনের আগে নানান উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি দিলেও তারা মূলত কোন কাজই করতে পারেননি গত ৫ বছরে। তবে হাতেগোনা কয়েক কাউন্সিলর ছিলেন সোচ্চার। তারা এলাকার উন্নয়নে অবদান রেখেছেন। গত ৫ বছরে কাজের পরিবেশ ছিল না বলে দাবি করে বিএনপিপন্থীরা নিজেদের দায় এড়িয়ে গেলেও নগরবাসীর বিস্তর অভিযোগ রয়েছে তাদের প্রতি। নগরবাসীর অভিযোগ, গত নির্বাচনে জয়ী কাউন্সিলররা এলাকাবাসীর কোন কাজে আসেনি। গত ৫ বছরে সামান্য মশা মারা তো দূরের কথা তাদের দেখাও মেলেনি। অনেক কাউন্সিলরের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা মেলেনি দীর্ঘ সময়। ২০১৩ সালের পর থেকে নগর ভবনের মতো ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের কার্যালয়গুলো ছিল কাউন্সিলর শূন্য। কোনমতে একজন সচিব চালিয়েছেন এসব অফিস। সেখান থেকে নাগরিক সেবা বলতে শুধু নাগরিক সনদপত্র, জন্মনিবন্ধন কার্ড পেয়েছেন। এছাড়া ন্যূনতম কোন সেবা মেলেনি ৫ বছরে। গতবার নগরীর ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন নিযামুল আজিম নিজাম। পরে মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের অনুপস্থিতিতে তিনি ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘ সময়। তবে কাজের কাজ করেননি নিজ ওয়ার্ডের। নগরীর মূল টাউন বলে পরিচিত ১২ নম্বর ওয়ার্ডে গতবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন বিএনপি পন্থী ইকবাল হোসেন দিলদার। গত ৫ বছরে এলাবাবাসী তাকে খুঁজেই পায়নি। এ ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সরিফুল ইসলাম বাবু। এবারও তিনি কাউন্সিলর প্রার্থী হবেন। তিনি জানান, গত নির্বাচনের পর থমকে যায় পুরো রাজশাহী নগরীর উন্নয়ন। মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল যেমন অথর্ব ছিলেন, তার সঙ্গে বিএনপিপন্থী কাউন্সিলররাও ছিলেন চরম অযোগ্য। গত ৫ বছরে এলাকার কোন উন্নয়ন করতে পারেনি। নিজের ওয়ার্ডের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, টানা ৫ বছর এলাকাবাসী কোন ধরনের নাগরিক সুবিধা পায়নি ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কাছ থেকে। তিনি বলেন, নাগরিকদের অনেকে তার কাছে অভিযোগ করেছেন, কাউন্সিলরকে তারা খুঁজেই পাননি।
×