ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বাউফলে ৬ স্লুইসগেট এখন কৃষকের গলার কাঁটা

প্রকাশিত: ০৪:২৫, ২২ জুন ২০১৮

বাউফলে ৬ স্লুইসগেট  এখন কৃষকের  গলার কাঁটা

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, ২১ জুন ॥ বাউফলে ৬টি স্লুইসগেট এখন কৃষকের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। জোয়ারের পানি নিরসন ও জলবদ্ধতার হাত থেকে কৃষকদের রক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড স্লুইসগেটগুলো নির্মাণ করলেও এখন তা কাজে লাগছে না। কর্তৃপক্ষের তদারকি ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে স্লুইস গেটের কপাট ভেঙ্গে গেছে এবং মুখে পলি পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। ফলে পানি ওঠানামা করতে পারছে না। জানা গেছে, উপজেলার নওমালার মৈশাদী খাল, বগা ইউনিয়নের বগা ও নওমালা খালের মুখে, হাজিরহাট খালের মুখে, ছোনখোলা খালের মুখে, শৈলা খালের মুখে এবং কাশিপুর খালের মুখে ১৯৯০ সালে প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এ স্লুইসগেটগুলো নির্মাণ করা হয়। পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ড এ স্লুইচগেটগুলো নির্মাণ করে। এসব স্লুইসগেট অপারেট করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন চাবি অপরেটর থাকার কথা। কিন্তু কোন অপরেটর নিয়োগ না দিয়ে চাবি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা মাতরের কাছে দেয়ায় জটিলতার সৃষ্টি হয়। এসব স্লুইচ গেটের মধ্যে ছোনখোলা ও মৈশাদী স্লইসগেটের কপাট ভেঙ্গে গেছে। অপর একটি কপাট দিয়ে স্থানীয় লোকজন জোয়ার ও ভাটার সময় ফাঁদ পেতে মাছ শিকার করে। হাজিরহাটের স্লুইচগেটের একই অবস্থা হয়েছে। শৈলা খালের স্লুইসগেটটি অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত হওয়ায় তা কোন কাজে লাগছে না। বগা ইউনিয়নের বগা খালের মুখে স্লুইসগেটটির চাবি এলাকার এক মাতবরের কাছে থাকায় তাকে উৎকোচ দিয়ে পানি নিরসন করতে হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, পটুয়াখালী জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে এ স্লুইসগেটগুলোর বেহাল অবস্থা হয়েছে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে কৃষকের আউশ,আমন ও রবি ফসল চাষ। এসব স্লুইসগেট দিয়ে জোয়ার ও ভাটার পানি অপসারণ না হওয়ায় খালগুলো এখন মরে যাচ্ছে। আবার বর্ষা মৌসুমে জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে ব্যাপক ফসলহানি ঘটে। রবি মৌসুমে পানির অভাবে চাষাবাদ ব্যাহত হয়। আদাবাড়িয়ার চেয়ারম্যান সামসুল হক ফকির বলেন,কাশিপুর ও হাজিরহাট এবং শৈলা খালের তিনটি স্লুইসগেটের মধ্যে শৈলা স্লুইসগেটটি আতুর ঘরে বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া কাশিপুর ও হাজিরহাট স্লুইসগেট দিয়ে পানি অপসারণ হচ্ছে না। এক সময় হাজিরহাট খালটি দিয়ে খরস্রোতরাত প্রবাহিত হলেও বর্তমানে তা মরা খালে পরিণত হয়েছে। তিনি আরও জানান, কাশিপুর খালের বাঁধ কেটে দিয়ে ওই স্থানে একটি সেতু হলে দুটি ইউনিয়নের ফসলি জমি আবাদে কৃষকের সুফল বয়ে আনবে। এ ব্যাপারে পটুয়াখালী জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকৌশলী মোঃ হাসানুজ্জামান বলেন, জনবল না থাকায় স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের হাতে স্লুইসগেটের চাবি দেয়া হয়। যথাসময়ে পানি নিরসনের জন্য তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বেশ কয়েকটি স্লুইসগেটের মুখ পলি পরে বন্ধ এবং কপাট নষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা তিনি স্বীকার করে বলেন, ওই সব স্লুইসগেটের সংস্কারের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। বরাদ্দ করা হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×