ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মধুমতীর তীব্র ভাঙ্গনে বিলীন সড়ক ও বসতবাড়ি

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ১৪ জুন ২০১৮

মধুমতীর তীব্র ভাঙ্গনে বিলীন সড়ক ও বসতবাড়ি

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফরিদপুর, ১৩ জুন ॥ মধুখালী উপজেলার ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কামারখালী ইউনিয়নের কামারখালী বাজার থেকে রউফনগর বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর পর্যন্ত চলে গেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের বাস্তবায়নাধীন কামারখালী-রউফনগর সড়ক। এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে গন্ধখালী, রউফনগর, নাওড়াপাড়া, দয়ারামপুর, জারজারনগর, চর গয়াসপুরসহ বেশ কয়েক গ্রামের মানুষ। ওই সড়কের গন্ধখালী পূর্বপাড়া এলাকায় এবং রউফনগর গ্রামে অবস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর থেকে ৫শ’ মিটার দূরেও ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গনের ফলে ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াত প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। কামারখালী-রউফনগর সড়কের গন্ধখালী পূর্বপাড়া নামক স্থানে মধুমতীর ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। মধুমতী নদীতে সড়কের একাংশ বিলীন হয়ে যাওয়ায় বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরে দর্শনার্থীদের যাতায়ত প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এ দিকে ভারি বর্ষণে সড়কের একাংশ ভাঙ্গনের ফলে ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী পাঁচ গ্রামের মানুষের চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। গন্ধখালী পূর্বপাড়া এলাকায় ওই সড়কের ত্রিশ ফুট প্রস্থ এবং তিন শ’ ফুট দৈর্ঘ্যরে এলাকা বিলীন হয়ে গেছে। ওই জায়গায় আশপাশের বাড়িঘর এলাকাবাসীকে সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। ভারি বর্ষণে এখন চলাচলই বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী জানায় গত কয়েক বছর ধরে এ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ওই এলাকার আকিদুল ইসলাম, ইউনুস আলী মৃধা, মতিয়ার মোল্লা ও সরোয়ার মৃধা তাদের বাড়িঘর সরিয়ে নিয়েছেন। ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে আরও ১৭টি পরিবারের বাড়িঘর। সড়কটি নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় তাদের এলাকাবাসীর বাড়িঘরের মধ্য দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের বড় বোন জোহরা বেগম বলেন, বীরের বাড়ি পড়ে আছে অযতেœ অবহেলায় কেউ তার দিকে একটু খেয়াল করে না। একটি জাদুঘর তৈরি করে দিয়েছে, সেখানে যাতায়াতের রাস্তা নেই বললে চলে, মধুমতীতে ভাঙতে ভাঙতে শেষ হয়ে গেছে। রউফনগর গ্রামে বীরের জাদুঘরে আসার রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরেই ভাঙ্গনের শিকার। রাস্তাটি সংস্কার ও মধুমতীতে বাঁধ দিয়ে সড়ক রক্ষার দাবি জানান সরকারের কাছে তিনি। এ দিকে রউফনগর গ্রামে মিরাজ খাঁর বাড়ির নিকট গিয়ে দেখা গেছে, ওই এলাকায় আনুমানিক ৪০ ফুট প্রস্থ ও এক হাজার ফুট দৈর্ঘ্যরে আকারে বিস্তীর্ণ এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে এলাকার জাকির মৃধা, তনু মৃধা, খালেক মোল্লা, কোববাত মৃধা, তোতা শেখ, রাজিব মুন্সী তাদের বাড়ি ঘর সরিয়ে নিয়েছে ভাঙ্গনের কবলে পড়ে। ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে আরও ২৩টি পরিবারের বসতভিটা ও বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিজামউদ্দীন মোল্লা বলেন, দুই বছর আগে ৩০ শতাংশ জমির ওপর এ বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়েছে। এ বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা শতাধিক। নদীর ভাঙ্গনের কারণে আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি। কামারখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুর রহমান বিশ্বাস বাবু বলেন, ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াত একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন যাবত বিষয়টি বিভিন্ন দফতর ও উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি কোন লাভ হয়নি। ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জানান, সাময়িকভাবে মধুমতীতে বাঁধ নির্মাণের জন্য ১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। যা নদী গবেষণা কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন করবে।
×