ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্বপ্ন পূরণের আশা ব্রাজিল তারকা নেইমারের

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ১০ জুন ২০১৮

স্বপ্ন পূরণের আশা ব্রাজিল তারকা নেইমারের

জাহিদুল আলম জয় ॥ সময়ের অন্যতম সেরা তারকা নেইমার। দেশ ও ক্লাবের জার্সিতে সম্ভাব্য সব শিরোপা জেতা হয়ে গেছে এই বিস্ময় প্রতিভার। বাকি শুধু স্বপ্নের বিশ্বকাপ ট্রফি। ২০১৪ সালে নিজ দেশে সেমিফাইনালে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল। তবে এবার ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে অধরা স্বপ্ন পূরণ করতে চান ২৬ বছর বয়সী এই সুপারস্টার। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে দুর্দান্ত পারফরমেন্স প্রদর্শন করে ব্রাজিল। রেকর্ড সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা সবার আগে বিশ্বকাপের টিকেট নিশ্চিত করে। কোচ টিটে দলকে গড়ে তুলেছেন দুর্দান্ত ফর্মে। একই পজিশনে একাধিক চৌকস খেলোয়াড় থাকায় বিশ্বকাপে হট ফেবারিট পেলের দেশ। তাই তো স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন নেইমারও। এক সাক্ষাতকারে পিএসজি তারকা জানিয়ে দিয়েছেন বিশ্বকাপ জেতাটাই তার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আগামী বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে ২১তম ফিফা বিশ্বকাপ। এর আগে আজ রাতে শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে মাঠে নামছে ব্রাজিল। ইনজুরি কাটিয়ে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে ফিরেই গোল করেন নেইমার। অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে নিজেকে আরও তরতাজা প্রমাণের পালা সেলেসাও সুপারস্টারের। সাফল্যের পরিসংখ্যানে এমন অবস্থা ব্রাজিল মানেই সেরা হওয়া। ‘দ্বিতীয়’ হওয়াটাকেও দেশটি ব্যর্থতা হিসেবে মনে করে। ১৯৭০ সালে বিশ্বকাপ জয়ের পর দীর্ঘ দুই পর ১৯৯৪ সালে আবারও বিশ্বকাপ জেতে জাগো বনিতোরা। আধুনিক যুগে এসে এ সময় থেকেই মূলত দেশটি অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে। ১৯৯৪ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত টানা তিন বিশ্বকাপে ১২ বছর বিস্ময়কর সাফল্য দেখায় ব্রাজিলিয়ানরা। এ সময়ের তিনটি বিশ্বকাপের প্রতিটিতেই ফাইনালে খেলে ব্রাজিল এবং দু’টিতে চ্যাম্পিয়ন হয়। এমন আকাশচুম্বী সাফল্যের পর ব্রাজিল দল যেন সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যায়। এ কারণেই ২০০৬ বিশ্বকাপে ‘হেক্সা’ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে জার্মানি পাড়ি জমায় লুই ফিলিপ সোলারির দল। ওই সময় রোনাল্ডিনহোরা এতটাই ফর্মের তুঙ্গে অবস্থান করছিলেন যে বিশ্বকাপ জয় করা নিয়ে কোন সংশয় ছিল না! কিন্তু চূড়ান্ত লড়াইয়ে খেই হারিয়ে বিদায় নিতে হয় ব্রাজিলকে। এরপর দলের দায়িত্ব দেয়া হয় ১৯৯৪ বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক কার্লোস দুঙ্গাকে। ২০০৯ সালে কনফেডারেশন্স কাপ জয় করে তিনিও স্বপ্ন দেখিয়েছেন ষষ্ঠ শিরোপা জয়ের। কিন্তু দলের সেরা ফুটবলারদের বিশ্বকাপে না এনে তথাকথিত ‘শ্রমিক’ দিয়ে শিল্পকর্ম করতে গিয়ে তিনিও ব্যর্থ হন। এরপর স্বাভাবিকভাবেই অপসারিত হতে হয় এই লৌহমানবকে। ২০১৪ বিশ্বকাপে নিজ দেশে ব্যর্থ হয় পেলের দেশ। টানা তিন বিশ্বকাপে ব্যর্থ হওয়া ব্রাজিলের এখন পাখির চোখ ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে। এ লক্ষ্যে ব্রাজিলিয়ানদের প্রধান ভরসার নাম নেইমার। তারকা এই ফুটবলার আস্থার প্রতিদান দিতে মুখিয়ে আছেন। বিশ্বকাপ নিয়ে নেইমার বলেন, ২০১৪ সালের দলটির তুলনায় বর্তমান দলটির প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা ও দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টেছে। মানুষ আমাদের ভিন্ন চোখে দেখছে। ব্রাজিল দলটিকে সবাই সমীহ করত, সেই দলটি ফিরে এসেছে। এটা ভীষণ ভাল লাগছে। সমর্থক এবং দেশের মানুষের মনোভাব পাল্টেছে। এই দল ভাল খেলা উপভোগ করে আর তা আমাদের আনন্দ দেয়। আমাদের সমর্থক ও দেশের মানুষের মনোভাব পরিবর্তন হয়েছে। বিশ্বকাপের আগে সবাই আত্মবিশ্বাসী এবং খুশি। গত আসর নেইমারের জন্য ছিল খুবই বেদনাদায়ক। কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে পিঠে মারাত্মক চোট পেয়ে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়েন। তার অনুপস্থিতিতে সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে হেরে বিধ্বস্ত হয়েছিল ব্রাজিল। এ প্রসঙ্গে নেইমার বলেন, এটা অপ্রত্যাশিত ছিল। কারণ ওই বিশ্বকাপ যেভাবে শেষ করতে চেয়েছিলাম সেভাবে পারিনি। অবশ্যই আমি মুকুট পরতে চেয়েছিলাম; কিন্তু পারিনি। আবার পরাজিতও হইনি। বিশ্বকাপটা আমি শেষ করতে পারিনি। মারাত্মক চোটে টুর্নামেন্টটি শেষ হয়ে গিয়েছিল। আমাকে এর মূল্য দিতে হয়েছিল। এবার আমরা দল হিসেবে আরও ভাল। সবাই সেরাটা দিতে পারলে অবশ্যই বিশ্বকাপ জেতা সম্ভব।
×