ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জিমির সপ্তম হ্যাটট্রিক, শিরোপার কাছাকাছি মোহামেডান

প্রকাশিত: ০৭:১৬, ৬ জুন ২০১৮

জিমির সপ্তম হ্যাটট্রিক, শিরোপার কাছাকাছি মোহামেডান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শেষদিকে এসে দারুণ জমে উঠেছে লীগ। লীগ শিরোপা পুনরুদ্ধারের জন্য অনেকটাই এগিয়ে গেছে ঐতিহ্যবাহী দল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড। গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স প্রিমিয়ার ডিভিশন হকি লীগে মঙ্গলবার বড় জয় কুড়িয়ে নিয়েছে তারা। ঢাকার মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনের প্রথম খেলায় তারা ৬-০ গোলে উড়িয়ে দেয় সোনালী ব্যাংক লিমিটেডকে। এর ফলে চলতি লীগের শিরোপা জয়ের পথে সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে পৌঁছে গেছে মওদুদুর রহমান শুভর দল। দিনের অপর প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে ঢাকা মেরিনার ইয়াংস ক্লাবকে ২-১ গোলে হারায় আবাহনী লিমিটেড। এই জয়ে মধুর প্রতিশোধ নিল লীগের সর্বাধিক পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন আবাহনী। কেননা চলতি লীগের প্রথমপর্বে আবাহনী মেরিনারের কাছে হেরেছিল ১-৫ গোলে। ২৪ ঘণ্টা আগেই খেলতে নেমে চিরশত্রু আবাহনীর কাছে ২-৩ গোলে হারের ধাক্কা বেশ ভালভাবেই কাটিয়ে উঠছে মোহামেডান। দলের জয়ে হ্যাটট্রিক করেছেন তারকা ফরোয়ার্ড রাসেল মাহমুদ জিমি। খেলার প্রথমার্ধে বিজয়ী দল ৩-০ গোলে এগিয়েছিল। লীগের প্রথমপর্বে সোনালী ব্যাংককে ৮-২ গোল হারিয়েছিল সাদা-কালোরা। নিজেদের চতুর্দশ ম্যাচে এটা চারবারের লীগ চ্যাম্পিয়ন মোহামেডানের ত্রয়োদশ জয় (সুপার ফাইভে ৩ ম্যাচে ২ জয়, ১ হার)। ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠেছে তারা (সুপার ফাইভে পয়েন্ট ৬)। পক্ষান্তরে সমান ম্যাচে এটা সোনালী ব্যাংকের ষষ্ঠ হার (সুপার ফাইভের ৩ ম্যাচের প্রতিটিতেই হেরে এখনও পয়েন্টশূন্য)। ম্যাচের সপ্তম মিনিটে ভারতীয় গুরজিন্দর সিংয়ের ফিল্ড গোলে এগিয়ে যায় মোহামেডান (১-০)। ১৬ মিনিটে নিখুঁত হিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আবারও সেই গুরজিন্দর (২-০)। ২৮ মিনিটে রাব্বি সালেহীন ফিল্ড গোল করলে ব্যবধান দাঁড়ায় ৩-০। এই স্কোরলাইনেই বিরতিতে যায় উভয় দল। বিরতির পর শুরু হয় জিমি-শো। আগের কয়েক ম্যাচে গোল খরার জ্বালা মেটাতে তৎপর হন তিনি। করেন টানা তিন গোল। ৪২, ৫২ ও ৬৭ মিনিটের ফিল্ড গোলে মোহামেডানের জয় অনেকটাই নিশ্চিত করেন জাতীয় দলের এই ফরোয়ার্ড। ৬৭তম মিনিটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন জিমি। পেনাল্টি কর্নারে শামসের সিং ঠিকঠাক পুশ করতে পারেননি। সোনালী ব্যাংকের এক ডিফেন্ডার বল পাওয়ার পর তা ছুটে গিয়ে কেড়ে নেন গুরজিন্দর। ভারতের এই ফরোয়ার্ডের বাড়ানো বল রিভার্স হিটে সঠিক ঠিকানায় পৌঁছে দেন জিমি। চলতি লীগে এটি তার সপ্তম হ্যাটট্রিক যা সবার চেয়ে বেশি। ব্যক্তিগত গোলসংখ্যা ২৫, এটাও চলতি লীগে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। প্রথমপর্বের হারের প্রতিশোধ সুপার ফাইভের ম্যাচে এসে নিয়েছে মাহবুব হারুনের দল। লীগের প্রথমপর্বে যে দলের কাছে হেরে শিরোপার রেস থেকে পিছিয়ে পড়েছিল আবাহনী সেই মেরিনারকেই সুপার ফাইভে হারিয়ে আশা জিইয়ে রেখেছে ‘দ্য স্কাই ব্লু ব্রিগেড’ খ্যাত আবাহনী। মঙ্গলবার দ্বিতীয় ম্যাচের শুরুতে পিছিয়ে পড়লেও মেরিনারকে ২-১ গোলে হারায় আবাহনী। নিজেদের পঞ্চদশ ম্যাচে এটা আবাহনীর ত্রয়োদশ জয় (সুপার ফাইভে ৪ ম্যাচেই জয়ী)। পয়েন্ট ৩৯ (সুপার ফাইভে পয়েন্ট ১২)। পক্ষান্তরে ১৪ ম্যাচে এটা মেরিনারের দ্বিতীয় হার (সুপার ফাইভে ৩ ম্যাচে প্রথম হার)। পয়েন্ট ৩৬ (সুপার ফাইভে পয়েন্ট ৬)। আবাহনীর সমান পয়েন্ট মোহামেডানেরও। তবে মোহামেডান ১ ম্যাচ কম খেলেছে। আগামী বৃহস্পতিবার সুপার ফাইভের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে মেরিনার ও মোহামেডান। এ ম্যাচ ড্র হলেই শিরোপা জিতবে মোহামেডান। মোহামেডান হারলে তিন দলের পয়েন্ট হবে ৩৯; তখন আবাহনী, মোহামেডান ও মেরিনারকে নিয়ে হবে প্লে-অফ। প্লে-অফ ম্যাচও ড্র হলে শূট আউটের মাধ্যমে খেলার ফল নিষ্পত্তি করা হবে। মঙ্গলবার জিতলেও শিরোপা জেতা আবাহনীর হাতে আর নেই। এক্ষেত্রে এদিন তারা যাদের হারালো, সেই মেরিনারের শেষ ম্যাচে মেরিনারের জয়ই কামনা করতে হবে। মেরিনার যদি মোহামেডানকে হারায়, তাহলেই আবাহনীর প্লে-অফ খেলে শিরোপা জেতার আশা জাগতে পারে। খেলার প্রথমার্ধের শেষদিকে ৩৩ মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় মেরিনার। পিসি পায় তারা। পুস্কর খিসা মিমোর পুশ রেজাউল করিম বাবু স্টপ করার পর মামুনুর রহমান চয়নের হিট প্রতিপক্ষের কাছ থেকে প্রতিহত হয়ে ফিরে আসে। এরপর বাবুর ফিরতি হিটে ফরহাদ আহমেদ সিটুল আলতো টোকায় লক্ষ্যভেদ করেন (১-১)। দ্বিতীয়ার্ধে ৪৪ মিনিটে সমতা ফেরায় আবাহনী। ডানদিক থেকে আশরাদ হোসেনের বাড়ানো বল সারোয়ার হোসেনের স্টিক ঘুরে পেয়ে যান রোমান সরকার। তা থেকে ফিনিশ করেন এই মিডফিল্ডার (১-১)। ৫১ মিনিটে মেরিনারের গোলরক্ষক অসীম গোপ সার্কেলের মধ্যে সারোয়ারকে ফাউল করলে পেনাল্টি স্ট্রোক পায় আবাহনী। আশরাফুল ইসলাম গোল করে এগিয়ে নেন আবাহনীকে (২-১)। ম্যাচের শেষদিকে আবাহনীর রক্ষণে চাপ দিয়ে ২টি পিসি আদায় করেও গোল করে সমতায় ফিরতে পারেনি মেরিনার। ফলে ম্যাচ শেষে আক্ষেপের অনলে পুড়েছে লীগের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
×