ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

রাজশাহী সিটি নির্বাচন

সাজানো মাঠে লিটন, এলোমেলো অবস্থানে বুলবুল

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ৩০ মে ২০১৮

সাজানো মাঠে লিটন, এলোমেলো অবস্থানে বুলবুল

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ রাজশাহীসহ দেশের তিন সিটির নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই রাজশাহীতে লেগেছে সিটি ভোটের হাওয়া। এ হাওয়ায় শুরু থেকেই মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগ। মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিক তিন সিটির নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ অনেকটায় উৎফুল্ল হলেও বিএনপি এখনও এলোমেলো অবস্থানে রয়েছে। সাজানো মাঠে অনেকটাই নিশ্চিন্ত রয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। তবে এখনও চুপচাপ বিএনপি। এবারও রাসিক মেয়র ও নগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল নির্বাচন করতে চান। তবে বিএনপির হাইকমান্ড কি সিদ্ধান্ত নেয় বা কাকে প্রার্থী করতে চায় তা এখনও নিশ্চিত নন বুলবুল ও তার সমর্থকরা। এরই মধ্যে মিজানুর রহমান মিনুও এবার বিএনপির প্রার্থী হতে চান এমন আভাসও পাওয়া গেছে। গত নির্বাচনে হাতছাড়া রাজশাহী সিটির চেয়ার এবার পুনরদ্ধারে আটসাট বেধেই মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগ। এ সিটিতে এবারও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হচ্ছেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এটা নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই মাঠে রয়েছেন লিটন। এবার রাজশাহীকে উন্নয়নে অগ্রগতির মিশন নিয়ে প্রচার শুরু করেছেন তিনি। ‘চলো বদলে দেই রাজশাহী’ এবারের স্লোগান ঠিক করেছে আওয়ামী লীগ। এরইমধ্যে ব্যানার ফেস্টুনে শোভা পাচ্ছে ভোটের আমেজ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও শুরু হয়ে গেছে আগাম ভোটের হাওয়া। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে জয়ের হিসাব কষতে মাঠে নেমেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও নগর সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে জয়ের জন্য কাজ করছেন নেতাকর্মীরা। মেয়রপ্রার্থীর জন্য নিজ নিজ এলাকায় প্রচার শুরু করেছেন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও দিনে দিনে বাড়ছে উৎসাহ, উদ্দীপনা। এ উদ্দীপনা আরও বেড়েছে মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক তফসিল ঘোষণার পর। আগে থেকেই রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ৩০টি ওয়ার্ডে সভা সমাবেশ করেছেন। নির্বাচনী সভাও অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রতিদিন ওয়ার্ড ভিত্তিক। এছাড়া ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে করা হচ্ছে উঠান বৈঠক। রাসিকের নির্বাচন ঘিরে নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে লাগানো হয়েছে লিটনের উন্নয়নমূলক ব্যানার-ফেস্টুন। বিগত সময়ে লিটনের হাত ধরে রাজশাহীর উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরা হচ্ছে শহরময়। রাজশাহীর স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা দাবি করেছেন, নগর সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। রাসিকের সাবেক মেয়র। তিনি রাসিকের সফল মেয়র হিসেবে নগরবাসীর আস্থার পাত্র হিসেবে বেশ পরিচিতি লাভ করেছেন। এদিকে গত নির্বাচনে জয়ী বিএনপির নগর সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল গেল ৫ বছরে তেমন কিছুই করতে না পারায় লিটনের দিকেই ঝুঁকছেন মানুষ। সাধারণ মানুষের বক্তব্য রাজশাহী উন্নয়নে লিটনের বিকল্প নেই। দলীয় নেতাকর্মীরাও লিটনের উন্নয়নের কথা প্রচার করছেন। রাজশাহী মহানগর সভাপতি ও সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আমি রাজশাহী নগরীর যে উন্নয়নমূলক কাজ করেছি, তা নগরবাসী জানেন। দ্বিতীয় বারে রাসিকের মেয়র হলে আরও উন্নয়নের কাজ করতে পারব। এদিকে মাঠে তেমন না থাকলেও চুপিসারে নির্বাচনী হাওয়ায় গা ভাসিয়েছেন বর্তমান মেয়র বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। বিভিন্ন সভা সমাবেশে ভোটের প্রার্থনাও করছেন তিনি। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সরকারী চাপ ও মামলা মোকদ্দমার কথা তুলে ধরছেন তিনি। তবে এখানে বিএনপির প্রার্থী নিয়ে ইতোমধ্যেই নানা গুণঞ্জন শুরু হয়েছে রাজশাহীর নেতাকর্মীদের মধ্যে। গাজীপুর ও খুলনার মতো রাজশাহীতেও প্রার্থী পরিবর্তন হচ্ছে এবং সাবেক মেয়র ও সাংসদ মিজানুর রহমান মিনু বিএনপির প্রার্থী হচ্ছেন এমন গুণঞ্জন শুরু হয়েছে। সম্প্রতি তার সমর্থকরা মিনুর কাছে জানতে চান তিনি মেয়র নির্বাচন করবেন কি না। এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে মিনু বলেন, ‘আমি বলির পাঁঠা হতে চাই না। কেন্দ্র থেকেও আমাকে প্রার্থী হওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। কিন্তু এবার রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনে জেতা যাবে না। সরকার বিএনপির প্রার্থীকে কোনভাবেই জিততে দিবে না। তবে কেন আমি বলির পাঁঠা হতে যাব। এবার রাজশাহী সিটিতে জামায়াতও আলাদা প্রার্থী দিবে বলে আভাস পাওয়া গেছে। নগর জামায়াতের নেতা ও আইনজীবী আবু মোহাম্মদ সেলিম বলেন, রাজশাহী সিটিতে তাদেরও প্রার্থী থাকবেন। তারা অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান নামের একজনকে ঠিক করে রেখেছেন। এখানে এবার জাতীয় পার্টি কোন প্রার্থী দিবেন কিনা এ নিয়ে এখনই মুখ খোলেননি জেলা ও মহানগর জাপার নেতারা।
×