ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

গর্বিত সরফরাজ বিস্মিতও

প্রকাশিত: ০৭:০৪, ২৯ মে ২০১৮

গর্বিত সরফরাজ বিস্মিতও

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ লর্ডস টেস্টের চতুর্থ দিনেই ৯ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে পাকিস্তান। ঘরের মাটিতে মে মাসে শুরু ও শেষ হওয়া কোন টেস্টে ৯৭ বছর পর এত বাজেভাবে হারল ইংলিশরা। জো রুট অধিনায়ক হিসেবে প্রথম সাত টেস্টের পাঁচটিতেই জিতেছিলেন। কিন্তু পরের আট টেস্টে জয় নেই একটিও! এর মধ্যে ছয়টিতে হেরেছেন, ড্র হয়েছে দুটি। বিপরীতে ইংল্যান্ডের মাটিতে নিজেদের শেষ দশ টেস্টের পাঁচটিতেই জিতল পাকিস্তান। সব মিলিয়ে গর্বিত অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ প্রতিপক্ষের এমন অসহায় আত্মসমর্পণে কিছুটা বিস্মিতও, ‘আমি বিস্মিত। এমন জয়ে বিস্মিত। আপনি যদি ইংল্যান্ড দলকে দেখেন, তারা প্রত্যেকে অভিজ্ঞ, ম্যান উইনার। এমন দলের বিপক্ষে তাদেরই মাটিতে এত বড় জয় সত্যিই দারুণ। আমি আমার ছেলেদের নিয়ে গর্বিত। এ ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।’ শুক্রবার হেডিংলিতে শুরু সিরিজ নির্ধারণী দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। লর্ডসে এক কথায় অসাধারণ, স্মরণীয় এক জয়ই পেয়েছে পাকিস্তান। তারুণ নির্ভর দল নিয়ে সফরকারীরা যেখানে মোটেই ফেবারিট ছিল না। অথচ সাড়ে তিনদিনের মধ্যে ইংলিশদের উঠানে ৯ উইকেটে হারিয়ে দেয়াটা যেকোন বিচারেই চমৎকার অর্জন। এই সাফল্যে সরফরাজ আহমেদ যুগপৎ আনন্দিত ও বিস্মিত! বিস্মিত হওয়াটাই স্বাভাবিক। ইংল্যান্ডের তুলনায় অভিজ্ঞতায় পাকিস্তান অনেকটাই পিছিয়ে ছিল। মোহাম্মদ আব্বাস নামের এক অখ্যাত ফাস্ট মিডিয়াম বোলারের বোলিং তোপে ইংল্যান্ডের মতো এমন অভিজ্ঞ ও সেরা ক্রিকেটারদের নিয়ে গড়া দলের ভেঙে পড়া তো বিস্ময় জাগায়ই। অথচ লর্ডসে নামার আগে ডারবানে আইরিশদের অভিষেক টেস্টের প্রতিপক্ষ হিসেবে জয় পেতে কী ঘামটাই না ঝড়াতে হয়েছিল তাদের। সরফরাজ বলেন, ‘আয়ারল্যান্ড আমাদের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়েছিল। ওটা আমাদের সাহায্য করেছে। ওদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার জবাবে আমরাও প্রতিরোধ গড়েছিলাম। ওখানে ভাল করায় এখানে চাপের মধ্যে আরও ভাল করতে পেরেছি। একটা বিষয় স্পষ্ট যে, আমার ছেলেরা তরুণ কিন্তু ওরা দ্রুত শিখছে।’ পাকিস্তানের জয়ে নায়ক পেসার মোহাম্মদ আব্বাস। দুই ইনিংসে ৬৪ রানে নিয়েছেন ৮ উইকেট। এছাড়া ২৬ বছর বয়সী মোহাম্মদ আমিরও ছিলেন দুর্দান্ত। বাঁহাতি পেসার প্রথম ইনিংসে ৪১ রানে ১টি এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৬ রানে ৪ উইকেট নেন। এছাড়া প্রথম ইনিংসে বল হাতে ৪ উইকেট নেন হাসান আলী। প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডকে ১৮৪ রানে গুড়িয়ে দিয়ে নিজেরা ৩৬৩ করেই মূলত ম্যাচের লাগাম হাতে নিয়ে নেয় পাকিরা। দ্বিতীয় ইনিংসে কঠিন চাপে থাকা ইংলিশরা ২৪২Ñএ অলআউট হলে জয়ের জন্য সফরকারীদের সামনে মাত্র ৬৪ রানের সহজ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়। ১২ ওভার ৪ বল খেলে ১ উইকেট হারিয়ে সেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় পাকিস্তান। দুই ইনিংসে ৪টি করে মোট ৮ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন আব্বাস। আরেক পেসার আমিরের শিকার সংখ্যা ৫। যেহেতু সিরিজটা দুই টেস্টের। সুতরাং এ জয়ে পাকিস্তান যে সিরিজ হারছে না, সেটি নিশ্চিত হয়ে গেল। দুই বছর আগে সবশেষ সফরে চার টেস্টের সিরিজ ২-২এ ড্র করেছিল গ্রেট মিসবাহ উল হকের পাকিস্তান। লর্ডসজয়ের পর সরফরাজ এবার এক ঝাঁক তরুণ ক্রিকেটার নিয়েই ইংলিশদের ২-০তে ‘হোয়াইটওয়াশ’ করার স্বপ্নে বিভোর।
×