ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে ‘সোনালি বাঙ্গি’ উদ্ভাবন ॥ মিষ্টি স্বাদ আছে পুষ্টিগুণ

প্রকাশিত: ০৪:৪২, ২৬ মে ২০১৮

রাজশাহীতে ‘সোনালি বাঙ্গি’ উদ্ভাবন ॥ মিষ্টি স্বাদ আছে পুষ্টিগুণ

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ শসা জাতীয় ফল বাঙ্গি দেশের বিভিন্ন এলাকায় চাষ হয়। পুষ্টিগুণ থাকলেও পানসে স্বাদের হওয়ায় মানুষ গ্রহণ করেন তুলনামূলক কম। দেশে উৎপাদিত বাঙ্গির মিষ্টতা নেই বললেই চলে। এ জন্য সাধারণত গুড় বা চিনি দিয়ে খাওয়া হয়। তবে এ ধারণা পাল্টে দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেসের (আইবিএসসি) পরিচালক অধ্যাপক মনজুর হোসেন। নতুন জাতের মিষ্টি বাঙ্গির পরীক্ষামূলক চাষাবাদে সাফল্য পেয়েছেন তিনি। আগামী বছর থেকেই মিষ্টি স্বাদের এ বাঙ্গির চারা কৃষক পর্যায়ে দেয়া হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন এই গবেষক। দীর্ঘ আট বছরের প্রচেষ্টায় তিনি মিষ্টি বাঙ্গির উদ্ভাবন করেছেন বলে জানান। প্রচুর মিষ্টি হওয়ায় স্বাদে অতুলনীয় এই ‘সোনালি বাঙ্গি’র গায়ের রঙ দেখলে যে কেউই মাল্টা বা কমলা ভেবে ভুল করবেন। পাকা মিষ্টি বাঙ্গির গায়ের রঙ সোনালি হওয়ায় এর ‘সোনালি বাঙ্গি’ নাম দিয়েছেন এই অধ্যাপক। অধ্যাপক মঞ্জুর হোসেন বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফলটি খরমুজ, ফুটি, কাঁকুড় ইত্যাদি নামে পরিচিত। তবে কুমড়াগোত্রীয় গ্রীষ্মকালীন এই ফলটি খেতে বালি বালি। স্বাদেও মিষ্টি নয় এবং পরিপক্ব হওয়ার আগেই ফেটে যায়। কিন্তু নতুন উদ্ভাবিত এই সোনালি বাঙ্গির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো চিনির মতো মিষ্টি আর পাকলেও ফাটে না। প্রথম অবস্থায় ফলটি হয় দেশীয় গাঢ় সবুজ রঙয়ের। আকৃতি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এর গায়ের রঙ পরিবর্তন হয়ে সোনালি বর্ণ ধারণ করে। ছোট অবস্থায় দেখতে মাল্টা বা কমলার মতো এবং পরিপূর্ণ বাঙ্গিগুলো দেখতে একটি ছোট আকারের মিষ্টি কুমড়ার মতো। প্রতিটি বাঙ্গিই আধা কেজি থেকে পৌনে এক কেজি হয়ে থাকে। আর এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি, ভিটামিন-এ এবং আয়রন বিদ্যমান। বাঙ্গি স্বাস্থ্যকর ফল। পাকা বাঙ্গির রয়েছে সৌরভ। বাঙ্গির অনেক গুণ। কাঁচা বাঙ্গি সবজি হিসেবে রান্না করে খাওয়া যায়। তবে নতুন এই বাঙ্গির চাষ পদ্ধতিও ভিন্ন বলে জানান, অধ্যাপক মনজুর হোসেন। মাটি থেকে চার-পাঁচ ফুট উচ্চতায় মাচা করে ফলটি চাষ করতে হয়। চাষের জন্য আলাদা কোন মাটির প্রয়োজন নেই। সাধারণ বাঙ্গিগুলো যে মাটিতে চাষ করা হয় এ বাঙ্গিও সেই মাটিতে চাষ করা যাবে। চাষের খরচ সাধারণ বাঙ্গির তুলনায় কিছুটা বেশি। প্রতি বিঘা জমিতে খরচ পড়বে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা।
×