ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

‘ইতালি ছাড়া এটিকে বিশ্বকাপ মনেই হবে না’

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১৪ মে ২০১৮

‘ইতালি ছাড়া এটিকে বিশ্বকাপ মনেই হবে না’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সর্বশেষ কবে ইতালি ফুটবল বিশ্বকাপ খেলেনি সেটা হিসেব করা বেশ কষ্টসাধ্য। অনেকেই হয়তো ভুলেই গেছেন বিষয়টি। ১৯৫৮ সালে সর্বশেষ বিশ্বকাপ ফুটবলে খেলার যোগ্যতা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছিল তারা। ৪ বার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়া দলটি এবার আসন্ন রাশিয়া বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছে না। বাছাই থেকে বাদ পড়েছে তারা। অনেকেই আজ্জুরিদের এই অনুপস্থিতির কারণে মনে করছেন বিশ্বকাপ বিবর্ণ হয়ে যাবে। আর ১৯৮২ বিশ্বকাপে দলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পেয়েছিলেন গোলরক্ষক দিনো জফ। ৪০ বছর বয়সে ওই কৃতিত্ব দেখিয়ে সবচেয়ে বেশি বয়সে বিশ্বকাপ জেতার রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। সেই জফ দাবি করলেন, ইতালিকে ছাড়া বিশ্বকাপ আয়োজনকে বিশ্বকাপই মনে হবে না। আসন্ন বিশ্বকাপ নিয়ে আলাপচারিতায় আরও অনেক কথাই বলেছেন তিনিÑ প্রশ্ন ॥ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে সুইডেনের কাছে ইতালি হারার পর আপনার অনুভূতি কী হয়েছিল? জফ ॥ আমি তখন পরিবারের সঙ্গে নিজের বাড়িতে ছিলাম। আর এটা অবশ্যই খুব কঠিন ছিল মেনে নেয়া। গত ৬০ বছরে ইতালি কোন বিশ্বকাপ মিস করেনি। যে দলগুলো খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে তাদের দিকে তাকালে বুঝতে পারবেন তাদের কারও আমাদের মতো শিরোপা নেই, ইতিহাসও নেই। দীর্ঘ সময় জাতীয় দলে থাকার পর এটা খুবই কষ্ট দিচ্ছে। সাইডলাইনে বসে থেকে ইতালি বিশ্বকাপ দেখবে এটা কোনভাবেই স্বাভাবিক নয়। এটা কোনভাবেই বিশ্বকাপের মতো মনে হবে না। ইতালির মানুষ ফুটবলের সঙ্গে খুবই ওতপ্রোতভাবে যুক্ত এবং এতকিছুর পরও তারা এটা দেখবে। কিন্তু খুব কম চেনা একটি দেশকে এই মঞ্চে খেলতে দেখলে অবশ্যই তা কষ্ট দেবে, যখন আমাদের মতো ৪ বারের বিশ্বকাপ জয়ী দলটি শুধুই দর্শক। প্রশ্ন ॥ বিশ্বকাপ আপনার কাছে কত বড় বিষয়? জফ ॥ আমার কাছে অন্য কোন কিছুই এরচেয়ে বড় নয়। এটাই সবকিছু এবং খাঁটি আনন্দ। নিজের পেশার সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছুতে পারা, তাও আবার ৪০ বছর বয়সে অধিনায়ক হিসেবে অবশ্যই অজস্র সুখের একটা ব্যাপার। এটাই আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম আলোকিত দিক, কারণ বিশ্বকাপ হচ্ছে ফুটবলের আলো। প্রশ্ন ॥ ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে এখন ইতালি ২০ নম্বরে, এ বিষয়টি কিভাবে দেখছেন? জফ ॥ বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়া, র‌্যাঙ্কিংয়ে ২০ নম্বরে নেমে যাওয়াÑ এই বিষয়গুলো নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না। আমাদের যুগে আমরাই সবচেয়ে সেরা ছিলাম। এটা ইতালিয়ান ফুটবলের জন্য খুব বাজে ব্যাপার। প্রশ্ন ॥ কিন্তু ক্লাব পর্যায়ে আপনার দল তো খুব ভাল খেলেছে... জফ ॥ হা, কিন্তু প্রচুর বিদেশী খেলোয়াড় নিয়ে। আমাদের অবশ্যই জাতীয় দল পুনর্গঠন করতে হবে এবং আমাদের কিছু তরুণ মেধাবী খেলোয়াড় আছে। যদিও সেই সংখ্যাটা খুব বেশি নয়। আমাদের অবশ্যই ভবিষ্যত সামর্থ্যবান খেলোয়াড়ের ওপর নির্ভর করতে হবে। ২০০৬ সালে ইতালি বিশ্বকাপ জিতেছিল খুবই কষ্টে। কিন্তু সেটা খুব ভাল ফুটবল প্রজন্ম ছিল। আমি যখন কোচ ছিলাম তখনও ২০০০ সালে দারুণ এক প্রজন্ম দেখেছি। আমরা প্রায় ইউরো জিতেই গিয়েছিলাম। প্রশ্ন ॥ সবসময় শোনা ইতালিয়ান তরুণরা কৌশলগত বিষয় নিয়ে তেমন কাজ করে না? জফ ॥ আমি মৌলিকত্ব পছন্দ করি না। কলা-কৌশল, শারীরিক ফিটনেস এগুলো সবই একজন তরুণ খেলোয়াড় হিসেবে অর্জন করতে হয়। কিন্তু একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর এগুলো যার যার ওপর ছেড়ে দিতে হয়। আমাদের আরও বেশি খেলার সুযোগ করে দেয়া উচিত তাদের স্কুলে থাকতেই। কিন্তু বর্তমান সময়ে কয়টি বাচ্চা ফুটবল অনুশীলনে কতটুকু সময় ব্যয় করে? হয়তো একবার, দু’বার। কিন্তু এরচেয়ে বেশি ইংরেজী শিক্ষা এবং অন্য ক্লাসেই বেশি সময় ব্যয় করে তারা। তাই এখন ফুটবলার হয়ে ওঠা আগের চেয়ে কঠিন হয়ে পড়েছে।
×