ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আজ জাপান যাচ্ছেন

প্রকাশিত: ০৫:২২, ১২ মে ২০১৮

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আজ জাপান যাচ্ছেন

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী আজ শনিবার জাপান সফরে যাচ্ছেন। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো কোনোর আমন্ত্রণে মাহমুদ আলী ১৩-১৬ মে পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক সফরে জাপানে অবস্থান করবেন। জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে। শনিবার রাতে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকা ত্যাগ করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি জাপান সফরকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো কোনোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন। এ ছাড়া মাহমুদ আলী জাপান সরকারের পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন। জাপান সরকারের আশা, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফর দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে সাহায্য করবে। মাহমুদ আলীর জাপান সফর বাংলাদেশের জন্য নানা সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে। রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার প্রেক্ষিতে জাপান বাংলাদেশে তাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে এখনও চিন্তিত। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জাপানকে নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্ত করা হয়েছে। এছাড়া জঙ্গীবাদ প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকারের সাফল্য প্রশংসনীয়। এমন প্রেক্ষাপটে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বিষয়টি সরাসরি উত্থাপন করে জাপানের ভ্রমণ সতর্কতার মাত্রা নিম্নপর্যায়ে নামিয়ে আনার যৌক্তিকতা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তুলে ধরতে সক্ষম হবেন বলে আশা করা যায়। এছাড়া রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধানে টোকিও যাতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে, সেজন্য জাপানের কাছে বাংলাদেশের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরা হবে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর কোন রকম চাপ প্রয়োগ করা থেকে জাপান বিরত রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে শরণার্থী শিবিরগুলোতে মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় মিয়ানমারের ওপর চাপ বৃদ্ধির এখনই উপযুক্ত সময়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর সফরের সময় জাপানের কাছে এই ব্যাখ্যা তুলে ধরতে পারেন। গত বছর নবেম্বরে জাতিসংঘের থার্ড কমিটির বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাপান কোন ভোট দেয়নি। দেশটি ভোটদানে বিরত ছিল। তবে পরবর্তীতে জাপান বলেছে, এই বিরত থাকার অর্থ এই নয় যে জাপান বাংলাদেশের বিপক্ষে রয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাপান বাংলাদেশের পক্ষেই রয়েছে। এছাড়া গত বছর ১৯ নবেম্বর জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো কোনো ঢাকায় এসেছিলেন। সে সময় জাপান জানিয়েছিল রোহিঙ্গা সঙ্কটের প্রেক্ষিতে জাপান মানবিক সহায়তাও দেবে। রোহিঙ্গাদের জন্য জাপান মানবিক সহায়তা হিসেবে ১৮ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার থেকে ২৩ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে বৃদ্ধিও করে। রাখাইনে আগস্ট হামলার ঘটনায় জাপান অবশ্যই নিন্দা জানায়। ওই সহিংসতার জেরে মানবাধিকার ও মানবিক পরিস্থিতি নিয়েও জাপান উদ্বিগ্ন। এছাড়া রোহিঙ্গাদের ফেরাতে জাপান বাংলাদেশের পাশে রয়েছে বলেও জানিয়েছিল জাপান। ঢাকা-টোকিওর মধ্যে ঐতিহাসিক বন্ধুত্বের সম্পর্ক রয়েছে। জাপান বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী ও বিশস্ত বন্ধু। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জাপান সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
×