ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

উখিয়া-টেকনাফ ক্যাম্পে ক্ষোভ

১৮ হাজার ৩২ জনের তালিকায় মাত্র ১১শ’ রাখাইনের রোহিঙ্গা

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১১ মে ২০১৮

১৮ হাজার ৩২ জনের তালিকায় মাত্র ১১শ’ রাখাইনের রোহিঙ্গা

মোয়াজ্জেমুল হক/ এইচএম এরশাদ ॥ রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বিষয়ে এখনও নানা টালবাহানা অব্যাহত রেখেছে মিয়ানমার। অনুপ্রবেশকারী ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গার বিপরীতে বাংলাদেশের পক্ষে এ পর্যন্ত প্রথম দফায় ৮ হাজার ৩২ ও দ্বিতীয় দফায় ১০ হাজার অর্থাৎ সর্বমোট ১৮ হাজার ৩২ জনের দুটি তালিকা পৃথকভাবে মিয়ানমারের কাছে পাঠানো হয়। ৮০৩২ জনের প্রথম তালিকা পাঠানোর পর মিয়ানমার যাচাই বাছাই শেষে ৩৭৪ জনকে প্রত্যাবাসনের পক্ষে মত দেয়। কিন্তু প্রত্যাবাসন শুরু করেনি। দ্বিতীয় দফায় ১০ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা পাঠানোর পর মিয়ানমার পক্ষ প্রথম দফায় প্রেরিত তালিকা থেকে মোট ১১শ’ জনকে প্রত্যাবসনের উপযুক্ত বলে ঘোষণা দিয়েছে, যা ইতোমধ্যে সেখানকার গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে বলে ওপারের সূত্রগুলো জানিয়েছে। সূত্র জানায়, সে দেশের অভিবাসন ও জনসংখ্যা বিষয়ক মন্ত্রী ইউ থেই শোয়ে সে দেশের গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে প্রাপ্ত প্রথম দফার তালিকা থেকে তারা ১১শ’ জনকে রাখাইনের বাসিন্দা বলে চিহ্নিত করেছে। দ্বিতীয় দফায় যে ১০ হাজারের তালিকা পাঠানো হয়েছে তার কোন যাচাই বাচাই এখনও হয়নি। তবে প্রক্রিয়া চলছে। উল্লেখ্য, প্রথম দফার তালিকাটি দেয়া হয় গত ফেব্রুয়ারি মাসে। এরপর ১০ হাজার রোহিঙ্গার তালিকাটি দেয়া হয় দ্বিতীয় দফায়। ওপারের সূত্রগুলো জানিয়েছে, রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা সব রোহিঙ্গা মিয়ানমারের বাসিন্দা। নাগরিকত্ব না থাকলেও তারা বংশ পরম্পরায় সে দেশের বিভিন্ন স্থানে বসবাস করে আসছে। তবে রাখাইন রাজ্যে বেশিরভাগ রোহিঙ্গার বসবাস রয়েছে। গেল বছরের ২৫ আগস্টের গভীর রাতের পর থেকে রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযান শুরু হওয়ার পর চলে গণহত্যা, ধর্ষণ ও বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া। ফলে প্রাণ রক্ষার্থে এ পর্যন্ত লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। ইতোমধ্যে এসব রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রশ্নে মিয়ানমারের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা ও উভয় দেশে দু’দফায় এই ইস্যুতে দুপক্ষের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব বৈঠকে মিয়ানমার পক্ষ পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে রাজি হলেও সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঘোষণা দিয়েও তা রক্ষা করেনি। ফলে এসব রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন এখনও অনিশ্চিত অবস্থায় রয়েছে। এ অবস্থায় সে দেশের সমাজকল্যাণ ও জনসংখ্যা বিষয়ক মন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে দু’দফায় প্রেরিত তালিকার মধ্যে ১১শ’ রোহিঙ্গাকে সে দেশের বাসিন্দা বলে নিশ্চিত করার জানান দিলেন। তার এ ঘোষণার পর উখিয়া টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। ইয়াবা বিক্রেতা রোহিঙ্গা কিশোর-কিশোরী ॥ টেকনাফে বিজিবি সদস্যদের হাতে ইয়াবাসহ দুই রোহিঙ্গা কিশোর ও শিশু আটক হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় টেকনাফ দমদমিয়া বিওপি চেকপোস্টে দায়িত্বরত বিশেষ টহল দল কক্সবাজারগামী একটি স্পেশাল সার্ভিস বাসে তল্লাশি চালিয়ে উখিয়া থাইংখালী ক্যাম্পে সি-ব্লক-১’শ-তে অবস্থানকারী মোঃ ফয়জুল সালামের পুত্র কিশোর মোঃ এনামুল ও আব্দুল হামিদের পুত্র নূর মোস্তফাকে আটক করেছে। কিছু এনজিওর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবি ॥ উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিষিদ্ধ ঘোষিত কতিপয় এনজিওর বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিরোধী অপতৎপরতার প্রতিবাদে মানববন্ধন সমাবেশ করেছে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ ৭১। বৃহস্পতিবার দুপুরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে নেতৃবৃন্দ। সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ ৭১ কক্সবাজার আয়োজিত মানববন্ধন সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী।
×