ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অনুমোদনহীন বাণিজ্যিক স্থাপনায় বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ৪ মে ২০১৮

অনুমোদনহীন বাণিজ্যিক স্থাপনায় বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী রবিবার থেকে রাজধানীর গুলশান, বনানী, বারিধারা, উত্তরা ও ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় অনুমোদনহীন বাণিজ্যিক স্থাপনায় বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে বিদ্যুত বিভাগ। সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। বৃহস্পতিবার বিদ্যুত ভবনে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে রমজান এবং গ্রীষ্মের বিদ্যুত পরিস্থিতি নিয়ে এক বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদও অবৈধ সংযোগ বিচ্ছন্ন করতে অভিযান পরিচালনা করার ইঙ্গিত দিয়েছেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক অনুমোদন না থাকা ভবনে বিদ্যুত, গ্যাস ও পানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কথা রয়েছে। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র জানায়, গত বছর ৫ জুলাই বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী এবং বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ রাজধানীর গুলশান, বনানী, বারিধারা, উত্তরা ও ধানম-িতে অনুমোদনহীন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ১০ মাসের মধ্যে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন। হিসাব অনুযায়ী ৫ মে আদেশের পরবর্তী ১০ মাস সময় শেষ হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বিদ্যুত বিভাগের নির্দেশনা প্রত্যাশা করলে ডেসকোকে জানানো হয় উচ্চ আদালতের যে নির্দেশনা রয়েছে সেভাবে কাজ করতে। এক্ষেত্রে আদালত যা বলেছে তা অনুসরণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে কেউ সরাসরি কোন কথা বলতে সম্মত হননি। বৃহস্পতিবার বিদ্যুত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রধান, বিতরণ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিদ্যুত বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি এবং ঢাকা মহানগর দোকান মালিক সমিতির একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিদ্যুত, জ¦ালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, অবৈধ সব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। এ বিষয়ে তিনি দোকান মালিক সমিতির সহায়তা চান। দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বিতরণ কোম্পানিকে সহায়তা করার আশ^াস দেয়া হয়। বৈঠকে বলা হয়, যেসব প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক ব্যবহারের অনুমোদন নেই তদোর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে। প্রসঙ্গত ২০১৬ সালে গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার পর অনুমোদনহীন ৫৫২ প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রস্তুত করে রাজউক। ওই বছরের ২৫ জুলাই শুরু হয় উচ্ছেদ কার্যক্রম। তবে উচ্ছেদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করে ২৩৭টি প্রতিষ্ঠান। সে সময় ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যবসা পরিচালনার অনুমতি দিয়েছিল আদালত। রমজানে বিদ্যুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ উদ্যোগ ॥ প্রতিবছরের মতো এবারও বিদ্যুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে গ্যাস রেশনিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ইতামধ্যে আটটি সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে। রমজানের শুরু থেকেই সিএনজি স্টেশন বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ৬ ঘণ্টা বন্ধ রাখা হবে। এ সময়ে সাশ্রয় হওয়া গ্যাস দিয়ে বিদ্যুত উৎপাদন করা হবে। বৈঠকে বিদ্যুত সচিব ড.আহমদ কায়কাউস অতিরিক্ত আলোকসজ্জা না করার জন্য দোকান মালিকদের আহ্বান জানান। ইফতার ও তারাবির সময় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) ব্যবহার সীমিত রাখার পরামর্শ দেন তিনি। সচিব বলেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত দিতে চলতি মাসের মধ্যে আরও এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। বিদ্যুতবিভ্রাট রোধ করতে সাবস্টেশনগুলোর ক্যাপাসিটি বাড়ানো হচ্ছে। পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান আবুল মানসুর মোঃ ফয়জুলাহ বলেন, এখন বিদ্যুত উৎপাদনে গড়ে ৯৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস দেয়া হচ্ছে। চলতি মাসের ২০ তারিখের পর এলএনজি সরবরাহ করা হলে গড়ে প্রতিদিন ১ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস দেয়া হবে। এতে বিদ্যুত উৎপাদন আরও বৃদ্ধি করা যাবে। বৈঠকে পিডিবির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ, নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম খোরশেদুল আলম ছাড়াও বিভিন্ন বিতরণ সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। রমজানে বিদ্যুত সরবরাহ পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিদ্যুত বিভাগ বিশেষ পদক্ষেপ নিচ্ছে। এগুলো হচ্ছে রমজান মাসে দোকানপাট, বিপণিবিতান খোলা রাখার বিষয়ে বিদ্যমান বিধিবিধান অনুসরণ করা,, বিদ্যুতের সর্বোচ্চ ব্যবহারের সময় সান্ধ্যকালীন রি-রোলিং মিল, ওয়েল্ডিং মেশিন, ওভেন, ইস্ত্রি, এসি বন্ধ রাখা। ইফতার ও সেহরির সময় শপিংমল, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের এসির ব্যবহার সীমিত রাখা এবং ইফতার, তারাবি ও সেহরির সময় লোডশেডিং যাতে না হয় তার উদ্যোগ নিচ্ছে বিদ্যুত বিভাগ।
×