ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সৈয়দপুরে যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি ॥ বাড়ছে দুর্ঘটনা

প্রকাশিত: ০৪:০০, ৩০ এপ্রিল ২০১৮

সৈয়দপুরে যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি ॥ বাড়ছে দুর্ঘটনা

সংবাদদাতা, সৈয়দপুর, নীলফামারী,২৯ এপ্রিল ॥ সৈয়দপুরে বিকল্প জ্বালানি হিসেবে দিন-দিন আবাসিক খাতে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম (এলপি) গ্যাসের ব্যবহার বাড়ছে। চাহিদা পূরণে এ উপজেলার শহর ও মফস্বলের হাট-বাজারে যত্রতত্র অবৈধভাবে বিভিন্ন দোকানে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। এতে ক্রেতা-বিক্রেতা ও প্রতিবেশীর লোকজন গ্যাসের যথেচ্ছা ব্যবহারে দুর্ঘটনার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। সূত্র মতে, শিল্পনগরী হিসেবে খ্যাত সৈয়দপুর শহর ও মফস্বল এলাকার রড সিমেন্টে, মুদি, ওয়েল্ডিং, কাগজ বিক্রির দোকান, পান দোকান, ফ্লেক্সি লোডের ও ফার্নিচারের দোকানসহ বিভিন্ন দোকানে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। এ সকল দোকানে এলপি গ্যাস সরবরাহকারী মেসার্স আইয়ুব পেট্রোল পাম্প ও খালেক পেট্রোল পাম্প ছাড়া কোন খুচরা দোকানির কাছে নেই কোন বিক্রির বৈধ অনুমোদন। সরেজমিন দেখা যায়, সৈয়দপুর শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক, গোলাহাট, মিস্ত্রি পাড়া, শেরেবাংলা সড়ক, দিনাজপুর সড়কে শতাধিক খুচরা দোকান ও উপজেলার পোড়ারহাট, সিপাইগঞ্জ ও হাজারিহাটের বিভিন্ন পসরার দোকানিরা বিক্রি করছেন এলপি গ্যাস সিলিন্ডার। এদের কাছে ফায়ার সার্ভিস ও বিস্ফোরক অধিদফতরের নেই কোন বিক্রির অনুমোদনপত্র। তারা দোকানের সামনে এলপি গ্যাসের সিলিন্ডারের পসরা সাজিয়ে বিক্রি করছেন। নীতিমালা অনুয়ায়ী এলপি গ্যাস পরিবহন, সংরক্ষণ ব্যবস্থা জানা না থাকায় যে কোন বড় ধরনের দুর্ঘটনায় ব্যপক প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটতে পারে। আর ঘিঞ্জি বসতি ও শহরের ব্যস্তময় সড়ক এলাকায় এ সকল দোকানে এলপি গ্যাসের যথেচ্ছ ব্যবহার এ সম্ভাবনাকে আরও উস্কে দিচ্ছে। শহরের শেরেবাংলা সড়কের যমুনা এলপি গ্যাসের ডিলার মোস্তাক হোসেন জানান, তিনটি বৈধ ডিলার রয়েছে। আমরা কখনও খুচরা দোকানিকে সিলিন্ডার দেই না। অনুমোদিত এলপি গ্যাস বিক্রেতা নিতু হার্ডওয়্যারের প্রোপ্রাইটর বিদ্যুত জানান, তারা সরকারী অনুমোদন নিয়েই এলপি গ্যাসের পাশাপাশি অক্সিজেন, আরগন গ্যাস, মেডিক্যাল অক্সিজেন, প্রোপেন গ্যাস ও ফায়ার ফাইটিং সরঞ্জাম বিক্রি করছেন। ডিলারদের অভিযোগ ডিস্ট্রিবিউটররা খুচরা দোকানিকে উৎসাহ দিয়ে যেনতেনভাবে বিক্রি করছে। এক্ষেত্রে তারা কোন অনুমোদন বা নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করছে না। বাজার নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। অনুমোদিত বিক্রেতাদের লোকসানের পাশাপাশি ক্রেতারাও প্রতারিত হচ্ছেন। এদিকে স্থানীয় প্রশাসনকে নিয়মিত তদারকি না থাকায় দিন দিন বাড়ছে এলপি গ্যাসের বিক্রি। তবে এভাবে সরকারের ২০২০ সালের মধ্যে ৭০ ভাগ এ জনপদের মানুষের এলপি গ্যাস ব্যবহারের কোন সম্ভাবনা নেই। রেগুলেটর, গ্যাস সরবরাহ পাইপ ও অনুমোদনহীন বিভিন্ন কোম্পানির ঝুঁকিপূর্ণ চুলা বিক্রি করছে মৌসুমি দোকানিরা। জানা যায়, অসাধু ব্যবসায়ীরা অনেক সময় কোম্পানির সরবরাহ সঙ্কট দেখিয়ে ১২ কেজি এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের রিফিল মূল্য ৮৫০ টাকা থেকে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি করেন। তবে বর্তমানে ১২ কেজি এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের মূল্য ৯০০-১২০০ টাকা, ৩৩ কেজির সিলিন্ডার ২ হাজার ৩ শত থেকে ৩ হাজার, ৩৫ কেজির সিলিন্ডার ২ হাজার ৫ শত থেকে ৩ হাজার ২ শত এবং ৪৫ কেজির সিলিন্ডার ৩ হাজার ৩ শত থেকে প্রায় ৪ হাজার টাকায় এ সকল দোকানে বিক্রি হচ্ছে। এ বিষয়ে ফায়ার সৈয়দপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘এলপি গ্যাস ও পেট্রোলিয়ামের সঙ্গে অনেকগুলো সংস্থা জড়িত। এ বিষয়ে উপজেলার বিক্রেতাদের সতর্ক করা হচ্ছে। নীলফামারী জেলা প্রশাসক খালেদ রহীম জানান, যত্রতত্র এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি বন্ধের বিষয়ে শীঘ্রই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
×