ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

হকি লীগে চ্যাম্পিয়ন মেরিনারের শুভসূচনা

প্রকাশিত: ০৭:৩৪, ২৯ এপ্রিল ২০১৮

হকি লীগে চ্যাম্পিয়ন মেরিনারের শুভসূচনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রায় দুই বছর পর অবশেষে মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামের নীল টার্ফে গড়ালো ‘গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স প্রিমিয়ার বিভাগ হকি লীগ’। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ঢাকা মেরিনার ইয়াংস ক্লাব শুভসূচনা করেছে। শনিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত দিনের একমাত্র খেলায় তারা দাপটে খেলে ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবকে হারায় ৪-০ গোলে। খেলার প্রথমার্ধেই ৩-০ গোলে এগিয়েছিল বিজয়ী দল। কাগজে-কলমে এবার মেরিনার বলতে গেলে সবচেয়ে শক্তিশালী দলই গঠন করেছে। একঝাঁক তারকা খেলোয়াড় নেয়ার পাশাপাশি দলের কোচ হিসেবে এনেছে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক জার্মান কোচ অলিভার কার্টজকে। লীগ শুরুর আগে থেকেই ভাল প্রস্তুতিও নিয়েছে তারা। সদ্য সমাপ্ত ক্লাব কাপ হকির ফাইনালও খেলে তারা। যদিও ফাইনালে ঢাকা আবাহনীর কাছে ০-১ গোলে হেরে যায় তারা। সেই দুঃখ মুছে ফেলে লীগ শিরোপা ধরে রাখার মিশনে বলতে গেলে আদাজল খেয়ে শুরু করেছে তারা। যার প্রতিফলন দেখা গেল শনিবার। প্রথমার্ধেই মেরিনার এগিয়ে যায় ৩-০ গোলে। তৃতীয় মিনিটে ফিল্ড গোলে চ্যাম্পিয়নদের এগিয়ে নেন হাসিন আরমান রূপ (১-০)। স্ট্রাইকিং সার্কেলের বাইরে থেকে পুস্কর খিসা মিমোর জোরালো স্ট্রোক কব্জির মোচড়ে ফ্লিক করে বল পোস্টে পাঠান তরুণ এই ফরোয়ার্ড। প্রথমার্ধে ফেবারিটরা মোট ৯টি পিসি আদায় করে নেয়। কিন্তু সেগুলো থেকে মাত্র দুটি গোল হয়। একটি করেন তারকা ডিফেন্ডার এবং দলের অধিনায়ক মামুনুর রহমান চয়ন ২০ মিনিটে। অপরটি মাইনুল ইসলাম কৌশিকের ৩০ মিনিটে। দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণ বজায় রাখে মেরিনার। যদিও পেনাল্টি কর্নারে তাদের দুর্বলতা বারবারই ফুটে উঠেছে নবাগত ভিক্টোরিয়ার নড়বড়ে ডিফেন্সের বিপক্ষেও। এই অর্ধে মাত্র একটি গোল করে তারা। পিসি থেকে গোলটি করেন হাসান যুবায়ের নিলয়, ৬৮ মিনিটে। প্রধান অতিথি হিসেবে লীগের উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়া সচিব আসাদুল ইসলাম। এই লীগে ঊষা ক্রীড়াচক্র শেষ পর্যন্ত অংশগ্রহণ করেনি। এমনকি শুক্রবার রাত ৮টা পর্যন্ত নিজেদের নাম নিবন্ধন করেনি। ঊষা নাকি মৌখিকভাবে আগেই বাহফেকে পরিষ্কার জানিয়েছিল, তারা এই লীগে খেলবে না। তারপরও তারা ফেডারেশনের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে হকি ফেডারেশন সাংবাদিকদের কাছে যে প্রেস রিলিজ সরবরাহ করে তাতে দেখা যায় অংশগ্রহণকারী দলের মধ্যে ঊষার নামটিও রয়েছে। বাহফে জানায়Ñ গত লীগের রানার্সআপ দল এবং বড় দল হওয়াতে তারা ঊষাকে একটি সুযোগ দিয়েছেন লীগে খেলার। তারা শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। যদি ঊষা না খেলে তাহলে বাইলজ অনুযায়ী তারা লীগ থেকে অবনমিত হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে নতুন করে খেলার সূচী তৈরি করা হবে। কাজেই ঊষার প্রতিপক্ষদের ওয়াকওভার পাবার প্রশ্ন আসবে না। যেখানে ঊষা নামই নিবন্ধন করেনি, সেখানে বাহফে কেন নিজের গরজে নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে? এ প্রশ্নের অবশ্য কোন সদুত্তর দিতে পারেনি বাহফে। দলগুলো প্রথমপর্বে সরাসরি লীগ পদ্ধতিতে খেলবে। ঊষা বাদে বাকি দলগুলো হলো : ঢাকা মেরিনার ইয়াংস ক্লাব, আবাহনী লিমিটেড, মোহামেডান এসসি, ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, বাংলাদেশ এসসি, সোনালী ব্যাংক এসআরসি, ওয়ারী ক্লাব, সাধারণ বীমা ক্রীড়া সংস্থা, এ্যাজাক্স এসসি, আজাদ এসসি, পুলিশ এসসি এবং ভিক্টোরিয়া এসসি)। প্রথমপর্ব শেষে সর্বোচ্চ পয়েন্ট পাওয়া পাঁচ দল খেলবে সুপার ফাইভপর্বে। প্রথমপর্বে অর্জিত পয়েন্ট যোগ করে সুপার ফাইভ লীগের স্থান নির্ধারণ করা হবে। প্রথমপর্বের গোলসংখ্যা সুপার ফাইভে যোগ হবে না। শুধু সুপার ফাইভে পক্ষে এবং বিপক্ষে গোল পার্থক্য স্থান নির্ধারণের জন্য ধরা হবে (চ্যাম্পিয়ন এবং রানার্সআপ দল ব্যতীত)। প্রথমপর্ব ও সুপার ফাইভ খেলা শেষে দুই লীগের সর্বোচ্চ পয়েন্ট অর্জনকারী দলকে লীগ চ্যাম্পিয়ন এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পয়েন্ট অর্জনকারী দলকে রানার্সআপ হিসেবে ঘোষণা করা হবে। তবে কেবল চ্যাম্পিয়ন এবং রানার্সআপ দলের ক্ষেত্রে পয়েন্ট সমান হলে গোল পার্থক্য ধরা হবে না। সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পয়েন্ট অর্জনকারী দলের সংখ্যা অধিক হলে প্লে অফ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। প্লে অব ম্যাচ ড্র হলে শূট আউটের মাধ্যমে খেলার ফল নিষ্পত্তি করা হবে। চ্যাম্পিয়ন দল পুরস্কার হিসেবে পাবে এক লাখ টাকা। রানার্সআপ দল পাবে ৫০ হাজার টাকা। পরিচ্ছন্ন খেলার জন্য নির্বাচিত দল পাবে ফেয়ার প্লে ট্রফি। এছাড়া লীগের খেলোয়াড় এবং সর্বোচ্চ গোলদাতা পাবেন ১০ হাজার টাকা করে পুরস্কার। তবে শেষের দুটি পুরস্কারের অর্থমূল্য বাহফে বাড়ানোর চিন্তা-ভাবনা করছে। ১৯৯৮ সাল থেকে শুরু হওয়া প্রিমিয়ার বিভাগ হকি লীগে এ পর্যন্ত আবাহনী লিমিটেড সর্বোচ্চ ৫ বার শিরোপা জিতেছে। মোহামেডান এবং ঊষা জিতেছে সমান চারবার করে। মেরিনার জিতেছে ১ বার।
×