ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস আজ

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ২৮ এপ্রিল ২০১৮

জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস  আজ

জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস ২০১৮ আজ শনিবার। এ উপলক্ষে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। দিবসের প্রতিপাদ্য তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা এই দিবসে গৃহীত সকল কর্মসূচীর সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। খবর বাসসর। রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ তার বাণীতে উৎপাদন বাড়াতে শ্রমিকের সুস্থতা ও নিরাপদ কর্মপরিবেশের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শ্রমিকের সুস্থতা ও নিরাপদ কর্মপরিবেশের সঙ্গে উৎপাদনশীলতা নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত। বিশ্ববাণিজ্যের তীব্র প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে শ্রমিক, মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য উন্নত কর্মপরিবেশ, সুস্থতা ও সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বাংলাদেশে পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস পালনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস’ কেবল শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে বিপুলসংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক মুক্তি। এ পরিপ্রেক্ষিতে পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘সুস্থ শ্রমিক, নিরাপদ জীবনÑ নিশ্চিত করে টেকসই উন্নয়ন’ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও সময়োপযোগী হয়েছে বলেও রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেন। আবদুল হামিদ বলেন, কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা-বিষয়ক প্রাপ্যতা প্রতিটি শ্রমিকের ন্যায়সঙ্গত অধিকার। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রতিটি ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার লক্ষ্যে শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার, স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা একান্ত আবশ্যক। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা লাভের অব্যবহিত পর ১৯৭২ সালের ২২ জুন বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সদস্যপদ লাভ করে। স্বাধীনতার পর তিনি (বঙ্গবন্ধু) সকল কলকারখানা জাতীয়করণ এবং বাংলার শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করেন। বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আদর্শকে সামনে রেখে বর্তমান সরকার দেশের সকল শ্রমজীবী মানুষের পেশাগত স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নানাবিধ কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে। রাষ্ট্রপতি এক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক, ব্যবস্থাপনা-কর্তৃপক্ষ, শ্রমিক সংগঠন ও উন্নয়ন অংশীজনকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ গঠনে সক্ষম হবো’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈশ্বিক, নৈতিক ও আইনী প্রয়োজনীয়তার আলোকে নিরাপদ কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করে শ্রমিকদের সুস্থ ও নিরাপদ জীবন নিশ্চিত করতে শিল্পকারখানার মালিক, বিনিয়োগকারী, ব্যবস্থাপক ও উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আশা করেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করে ২০৪১ সালের মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত-সমৃদ্ধ জাতির পিতার স¦প্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে, তখনই এদেশের শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে কাজ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০০৯ সালে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে শ্রমিকদের কল্যাণে বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনা বলেন, কর্মক্ষেত্রে শোভন, সুষ্ঠু ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণে এবং শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি নীতিমালা ২০১৩’ ও ‘বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫’ প্রণয়ন করা হয়েছে। তিনি বলেন, পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ, গবেষণাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি একাডেমি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। শ্রমিকদের চিকিৎসা ও সন্তানদের উচ্চশিক্ষার জন্য শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। আমাদের এসব উদ্যোগের ফলে কর্মপরিবেশসহ শ্রমিকদের জীবনমানের উন্নতি ঘটেছে। শেখ হাসিনা বলেন, শিল্পায়ন, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিতে শ্রমিকদের প্রত্যক্ষ ভূমিকা রয়েছে। তাই শ্রমিকদের সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদের জীবনমান ও কর্মক্ষেত্রের উন্নয়ন আবশ্যক। এ প্রেক্ষাপটে দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘সুস্থ শ্রমিক, নিরাপদ জীবন-নিশ্চিত করে টেকসই উন্নয়ন’ অত্যন্ত সময়োগযোগী হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। শ্রমিকদের অধিকার এবং কল্যাণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্বাধীনতার পর পরই তিনি সকল কলকারখানা জাতীয়করণ করেন।
×