ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

মধ্যাঞ্চল-দক্ষিণাঞ্চল ম্যাচ ড্র

প্রকাশিত: ০৭:০১, ২১ এপ্রিল ২০১৮

মধ্যাঞ্চল-দক্ষিণাঞ্চল ম্যাচ ড্র

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগের (বিসিএল) পঞ্চম রাউন্ডের খেলা শেষ। একদিন আগেই বিসিবি উত্তরাঞ্চল ইনিংস ব্যবধানে ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চলকে হারিয়েছে। শুক্রবার রাউন্ডের শেষদিনে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল ও প্রাইম ব্যাংক দক্ষিণাঞ্চলের ম্যাচটি ড্র হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত দুর্দান্ত ব্যাটিং করে শেষদিনে সেঞ্চুরি করেন। অপরাজিত ১০২ রানের ইনিংস খেলেন। আর দুই ইনিংসে বল হাতে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়ে ম্যাচ সেরা হন দক্ষিণাঞ্চলের আব্দুর রাজ্জাক। এ ড্র ম্যাচ থেকে দক্ষিণাঞ্চল ৬ পয়েন্ট পেয়েছে। তাতেই শিরোপা রেসে থাকছে দক্ষিণাঞ্চল। আর মধ্যাঞ্চল ১০ পয়েন্ট পেয়েও শিরোপা রেস থেকে ছিটকে পড়েছে। পূর্বাঞ্চলতো আগেই সেই রেস থেকে সরে গেছে। এখন উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে শিরোপা জয়ের লড়াই হবে। ২৪ এপ্রিল ফ্র্যাঞ্চাইজি এ লীগের ষষ্ঠ ও শেষ রাউন্ড শুরু হবে। এ রাউন্ডে শিরোপা থেকে ছিটকে পড়া দুই দল মধ্যাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চল মুখোমুখি হবে। একইদিন দুই শিরোপা প্রত্যাশী উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চল চারদিনের লড়াই শুরু করবে। প্রতিটি দল ৫টি করে ম্যাচ খেলে ফেলেছে। বাকি আছে আর একটি করে ম্যাচ। এ মুহূর্তে উত্তরাঞ্চল ৫৮, দক্ষিণাঞ্চল ৪৪, পূর্বাঞ্চল ৪০ ও মধ্যাঞ্চল ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে আছে। একটি ম্যাচ থেকে সর্বোচ্চ ১৭ পয়েন্ট পাওয়া যায়। সেই হিসেবে উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যকার পয়েন্ট পার্থক্য আছে ১৪। উত্তরাঞ্চলের শিরোপা জেতার সম্ভাবনাই বেশি। এ জন্য দুই দলের মধ্যকার প্রথম লড়াইয়ের মতো ড্র করলেই হয়ে যায়। অথবা যে কোনভাবে ২টি পয়েন্ট উত্তরাঞ্চল পেয়ে গেলেই হয়ে যায়। দক্ষিণাঞ্চল থেকে তা কেড়ে নিতে পারলেই হয়ে যায়। তাহলেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে উত্তরাঞ্চল। শিরোপার ফয়সালা শেষ রাউন্ডেই হবে। প্রথম ইনিংসে দক্ষিণাঞ্চলকে ১৯১ রানে গুঁড়িয়ে দিয়েও শেষ পর্যন্ত ম্যাচ থেকে জয় বের করে নিতে পারেনি মধ্যাঞ্চল। দ্বিতীয় ইনিংসে যে দক্ষিণাঞ্চল চমক দেখিয়েছে। প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নিয়ে আব্দুর রাজ্জাক যখন মধ্যাঞ্চলের ইনিংস ৩০২ রানের বেশি এগিয়ে যেতে দেয়নি। তাতেও দারুণ কাজ হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে মোহাম্মদ মিঠুনের ১১৮ ও তুষার ইমরানের ৮৮ রানে তৃতীয়দিনে দক্ষিণাঞ্চল ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৪৮ রান করে ২৩৭ রানে এগিয়ে যায়। সেখানেই দক্ষিণাঞ্চল ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (২২*) ও জিয়াউর রহমান (১৭*) দলকে আরও বহুদূর এগিয়ে নিতে চতুর্থদিন ব্যাট করা শুরু করেন। জিয়াউর (২৫) খুব বেশিদূর এগিয়ে যেতে না পারলেও সৈকত ঠিকই সেঞ্চুরি করে দেখান। তিনি ধীরে ধীরে এগিয়ে গিয়ে ১০৭ বলে ১০ চার ও ৪ ছক্কায় অপরাজিত ১০২ রান করেন। সদ্যই বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়া এ ব্যাটসম্যান নিজেকে মেলে ধরেন। নাঈম হাসানও (৪৩) এগিয়ে চলছিলেন। কিন্তু নাঈম যখন ৪৮৪ রানের সময় আউট হন দক্ষিণাঞ্চল ৩৭৩ রানে এগিয়ে থেকে ইনিংস ঘোষণা করে দেয়। মধ্যাঞ্চলের সামনে জিততে ৩৭৪ রানের টার্গেট দাঁড় হয়ে যায়। এ টার্গেট যে অতিক্রম করা কঠিন তা মধ্যাঞ্চল ভাল করেই জানত। তবে যদি ইনিংসে ধস নামে তাহলে দক্ষিণাঞ্চলের জেতার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু রাজ্জাকের (৩/৭৩) বোলিং ঘূর্ণিতে পড়ে ৫ উইকেট হারিয়ে যখন ১৫৮ রান করে মধ্যাঞ্চল তখন বোঝা হয়ে যায়, ম্যাচ আর বের করা সম্ভব নয়। দিনের ১০ ওভারের মতো বাকি থাকতেই তাই দিন শেষ হয়। তাতে ম্যাচ ড্র হয়। এ ম্যাচ থেকে লাভ হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলেরই। যদিও মধ্যাঞ্চল থেকে পয়েন্ট কম পেয়েছে দক্ষিণাঞ্চল। কিন্তু শিরোপা রেসে দক্ষিণাঞ্চলই থাকছে। মধ্যাঞ্চল সেই রেস থেকে ছিটকে পড়েছে। স্কোর ॥ মধ্যাঞ্চল-দক্ষিণাঞ্চল ম্যাচ-রাজশাহী দক্ষিণাঞ্চল প্রথম ইনিংস ॥ ১৯১/১০; ৪৯.৫ ওভার (রাব্বি ৪০, সোহান ২৮, ইমরুল ২৬, বিজয় ২৩; এবাদত ৪/৩২, মোশাররফ ৪/৫৭ ও দ্বিতীয় ইনিংস তৃতীয়দিন ৩৪৮/৬; ৮৩ ওভার (মিঠুন ১১৮, তুষার ৮৮, বিজয় ৪৫, মোসাদ্দেক ২২*, জিয়াউর ১৭*; মোশাররফ ৩/৮০) ও চতুর্থদিন ৪৮৪/৮; ইনিংস ঘোষণা; ১০৮.৩ ওভার (মোসাদ্দেক ১০২*, নাঈম ৪৩; মোশাররফ ৩/১১০)। মধ্যাঞ্চল প্রথম ইনিংস ॥ ৩০২/১০; ৮৮.৩ ওভার (সাদমান ৯৩, ইরফান ৫৪, মোশাররফ ২৮; রাজ্জাক ৬/১০৬, নাঈম ৩/৮৩) ও দ্বিতীয় ইনিংস ॥ ১৫৮/৫; ৫৫ ওভার; টার্গেট ৩৭৪ রান (মজিদ ৬০*, সাইফ ৪৩; রাজ্জাক ৩/৭৩)। ফল ॥ ম্যাচ ড্র। ম্যাচসেরা ॥ আব্দুর রাজ্জাক (দক্ষিণাঞ্চল)।
×