ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

চাহিদাপত্র ছাড়াই পাঠানো ॥ তদন্ত দাবি

মেয়াদোত্তীর্ণের পথে কোটি টাকার ওষুধ

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ১৪ এপ্রিল ২০১৮

মেয়াদোত্তীর্ণের পথে কোটি টাকার ওষুধ

এইচএম এরশাদ কক্সবাজার ॥ রোহিঙ্গাদের জন্য ফাইলেরিয়া রোগের চিকিৎসার নামে পাঠানো প্রায় কোটি টাকা মূল্যের ৩০ লাখ ট্যাবলেট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সরকারের কোটি টাকা মূল্যের এ সম্পদ সিদ্ধান্তহীনতায় পড়ে থাকলেও দেখার কেউ নেই। কক্সবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের বারান্দায় পড়ে রয়েছে এ ওষুধের কার্র্টনগুলো। ওসব ওষুধের মেয়াদ আছে আর মাত্র দেড়মাস। কোন ধরনের চাহিদাপত্র ব্যতিরেকে দেড়মাস আগে রংপুর সিভিল সার্জন অফিস থেকে কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিসে পাঠানো হয়েছে বিশাল ওষুধের এই চালান। তবে কি কারণে, কি উদ্দেশ্যে বা কেন পাঠানো হয়েছে ফাইলেরিয়া রোগের ৩০ লাখ ট্যাবলেট তা কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিসের কেউই জানে না। ওই ওষুধের চালানের বিষয়ে কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিস থেকে কোন চাহিদাপত্র পাঠানো হয়নি বলে জানা গেছে। এতদঞ্চলে ওই রোগের কোন রোগী নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা। ওধুষগুলো কি করবে খোদ সিভিল সার্জনও কোন সিন্ধান্ত নিতে পারেনি এখনও। মেয়াদ শেষ হতে যাওয়া ওষুধগুলো নিয়ে বেকায়দায় রয়েছে কর্তৃপক্ষ। এত ফাইলেরিয়া ওষুধ রাখতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে স্টোর কিপারও। প্রায় কোটি টাকার সরকারী সম্পদ নষ্ট হলেও যেন দেখার কেউ নেই। কোন স্বার্থ হাসিলের জন্য এই বিশাল ফাইলেরিয়ার ওষুধ এখানে পাঠানো হয়েছে তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল। কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিসের স্টোর কিপার মোঃ শাহনেওয়াজ খান জানান, কোন প্রকার চাহিদাপত্র ছাড়া ৩০ লাখ ফাইলেরিয়া ট্যাবলেট অফিসে পাঠানো হয়েছে। তবে এই বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। কেন পাঠানো হয়েছে, কার জন্য পাঠানো হয়েছে। ওষুধের প্যাকেটের গায়ে লেখা রয়েছে ওষুধগুলো ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে উৎপাদন করা হয়েছে। মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে ২০১৮ সালের মে মাসে। কক্সবাজার সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুস সালাম বলেন, ওষুধগুলোর ব্যাপারে এখনও আমি কোন সিদ্ধন্ত নিতে পারিনি। ওই ওষুধের মেয়াদও প্রায় শেষের পথে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের তরফ থেকে ওষুধগুলো রংপুর সিভিল সার্জন অফিস কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিসে পাঠিয়েছে প্রায় দেড় মাস আগে। কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ পুচনু জানান, ফাইলেরিয়া হচ্ছে এমন এক সংক্রামক রোগ যা এক প্রকার পরজীবী জীবাণু (প্যারাসাইট) দিয়ে হয় এবং এতে শরীরের লসিকা (এক প্রকার বর্ণহীণ রস) পরিসঞ্চালন ব্যবস্থা আক্রান্ত হয়। এ রোগে বিশেষ এক ধরনের (কিউলেক্স) মশার মাধ্যমে ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে মশা প্রথমে রক্তের সঙ্গে এই রোগের জীবাণু নিজের দেহে নিয়ে নেয় ও পরে কামড়ানোর মাধ্যমে সুস্থ লোকের দেহে ছড়ায়। দেশের উত্তরাঞ্চালে এই রোগের প্রাদুর্ভাব সব চাইতে বেশি। কক্সবাজারে এই রোগের তেমন কোন আলামত পাওয়া যায়নি।
×