ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদের ৯৭তম জন্মবার্ষিকী আজ

প্রকাশিত: ০৫:২২, ১৪ এপ্রিল ২০১৮

অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদের ৯৭তম জন্মবার্ষিকী আজ

বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) সভাপতি, এদেশের বাম আন্দোলন এবং সা¤্রাজ্যবাদবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা, মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, বর্ষীয়ান জননেতা অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদের ৯৭তম জন্মবার্ষিকী শনিবার। এ উপলক্ষে সকালে ন্যাপের নেতাকর্মী এবং শুভানুধ্যায়ীরা মোজাফ্ফর আহমদকে শুভেচ্ছা জানাতে সমবেত হবেন বারিধারায়। বিকাল ৫টায় ন্যাপ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মোজাফ্ফর আহমদের জন্মবার্ষিকীতে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদের রাজনৈতিক জীবনের সূচনা ১৯৩৭ সালে। ছাত্রাবস্থায় ব্রিটিশবিরোধী ছাত্র সংগঠন ছাত্র ফেডারেশনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ঢাকা কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন কলেজেও শিক্ষকতা করেছেন। ১৯৫২ সালে আজিমপুর সরকারী কলোনীর একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন তিনি। তার এই ফ্ল্যাটটিই হয়ে উঠেছিল ভাষা আন্দোলনের হেডকোয়ার্টার। ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা ছেড়ে তিনি পুরোপুরিভাবে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে দেবিদ্বার আসনে মুসলিম লীগের প্রার্থী মফিজউদ্দিনকে বিপুল ভোটে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫৭ সালের এপ্রিলে পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক পরিষদে অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। দলীয় নেতৃত্বের বিরোধিতা করে শেখ মুজিবুর রহমান মোজাফ্ফর আহমদের প্রস্তাবের পক্ষে দৃঢ়ভাবে সমর্থন দিয়েছিলেন এবং প্রস্তাবটি পাস হয়েছিল। ১৯৫৭ সালের ২৭ জুলাই মাওলানা ভাসানীর নেৃতত্বে ন্যাপ গঠন প্রক্রিয়ায়ও একজন ছিলেন অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ। ১৯৫৮ সালে আয়ুবের সামরিক শাসন মোজাফ্ফর আহমদের বিরুদ্ধে হুলিয়া, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি এবং ধরিয়ে দেয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করে। তিনি আত্মগোপনে থেকে আন্দোলনকে সংগঠিত করেন। ৮ বছর আত্মগোপনে থেকে ১৯৬৬ সালে আবার প্রকাশ্য রাজনীতিতে ফিরে আসেন। ১৯৬৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান ন্যাপের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি অবিভক্ত পাকিস্তান ন্যাপেরও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭১ স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল নেতৃত্বের একজন এবং প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ। স্বাধীনতার পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সফর করেন। এ সময় তিনি জাতিসংঘেরও বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ন্যাপ-সিপিবি ছাত্র ইউনিয়নের বিশেষ গেরিলা বাহিনী গঠনে তার ভূমিকা ছিল অবিস্মরণীয়। অধ্যাপক মোজাফ্ফর স্বাধীনতার কথা, আদর্শিক রাজনীতির কথা, সমাজতন্ত্রের কথা বলেছেন। তরুণদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, রাজনীতির অর্থ দেশের সেবা, মানুষের সেবা। পদ বা পদবীর মোহ তাকে কখনও আকৃষ্ট করতে পারেনি। সরকার ২০১৫ সালে অন্যদের সঙ্গে তাকেও স্বাধীনতা পদক দেয়ার ঘোষণা করেন। তিনি তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন। তিনি নিজেকে কুঁড়েঘরের মোজাফ্ফর বলে পরিচয় দিতে ভালবাসেন। অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ ১৯২২ সালে ১৪ এপ্রিল কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন একজন স্কুলশিক্ষক। -বিজ্ঞপ্তি।
×