ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বনশ্রী ও মিরপুর থেকে ভুয়া প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের ৪ সদস্য পাকড়াও

প্রকাশিত: ০৪:৪৮, ১৪ এপ্রিল ২০১৮

বনশ্রী ও মিরপুর থেকে ভুয়া প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের ৪ সদস্য  পাকড়াও

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ রাজধানী ঢাকার খিলগাঁয়ের দক্ষিণ বনশ্রী ও মিরপুরের নাসিমবাগ এলাকা থেকে ভুয়া প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১ সদস্যরা। এ সময় ভুয়া প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিভিন্ন উপকরণ উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো- মোঃ ইয়াসির আরাফাত ওরফে সাউদ (২৮), জুবায়ের আহমেদ ওরফে জাবের (২০), মোঃ রমজান আলী টিটু (১৮) ও মাহমুদ হাসান ওরফে প্রচ্ছদ ওরফে পারফেক্ট (২২)। এদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ভুয়া প্রশ্নপত্র প্রচার ও বিক্রির কাজে ব্যবহৃত ১৫টি মোবাইল, বিকাশে প্রশ্ন বিক্রির টাকা লেনদেনের জন্য ব্যবহৃত ২৫টি সিম কার্ড, ৩টি মেমোরি কার্ড, ১টি ট্যাব, ৩টি ল্যাপটপ, ১টি কম্পিউটার, ১টি হার্ডডিস্ক, ১টি পেনড্রাইভ ও ১টি ব্লুটুথ ডিভাইস। শুক্রবার ভোরে র‌্যাব-১১ এর একটি দল অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীর র‌্যাব-১১ এর প্রধান কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যাব-১১ অধিনায়ক (সিও) লেঃ কর্নেল কামরুল হাসান এ তথ্য জানান। র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক জানান, রাজধানীর বনশ্রী হতে গ্রেফতারকৃত চক্রটি এইচএসসি ২০১৮ এর ভুয়া প্রশ্নপত্র প্রচার ও বিক্রয় ছাড়াও ২০১৭ এর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্নপত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক, মেসেঞ্জার) প্রচার করে এবং র‌্যাব কর্তৃক উদ্ধারকৃত ১১টি বিকাশ নম্বরের মাধ্যমে ভুয়া প্রশ্নপত্র বিক্রয়ের টাকা লেনদেন করে। গ্রেফতারকৃত সদস্যরা ১ বছরের বেশি সময় ধরে ফেসবুক, মেসেঞ্জার এবং হোয়াটস্এ্যাপের মাধ্যমে ভুয়া প্রশ্নপত্র প্রচার ও বিক্রয় করে আসছে। গ্রেফতারকৃত ইয়াসির আরাফাত ভুয়া প্রশ্ন প্রচারকারী বিভিন্ন ফেসবুক, মেসেঞ্জার গ্রুপের এ্যাডমিন ও সদস্য বলে জানিয়েছে। গ্রেফতারকৃত মোঃ ইয়াসির আরাফাত ওরফে সাউদ ও জুবায়ের আহমেদ ওরফে জাবেরদ্বয় সহোদর ভাই ও মোঃ রমজান আলী টিটু তাদের দুঃসম্পর্কের চাচাতো ভাই। উক্ত তিন ভাই ইয়াসির আরাফাতের নেতৃত্বে সংঘটিত হয়ে কাজ করত। র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক আরও জানান, ইয়াসির আরাফাত ওরফে সাউদ গত ১ বছর ধরে ভুয়া প্রশ্ন সংগ্রহ, প্রচার ও বিক্রয় করে আসছে। ইয়াসির কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সম্পর্কে বিশেষ পারদর্শী। আরাফাতসহ আরও ২৪ জন এ্যাডমিন একটি বিশেষ গ্রুপের সদস্য। যেখানে সকল এ্যাডমিন সদস্যরা প্রশ্ন পাওয়া মাত্রই পোস্ট করে এবং যে ব্যক্তি আগে পোস্ট করে শর্তানুসারে তাকে সকল এ্যাডমিন সদস্যরা পাঁচ শ’ টাকা বিকাশ করে। ইয়াসির উক্ত প্রশ্ন বিভিন্ন গ্রুপে প্রচার করে এবং বিক্রি করে। জুবায়ের আহমেদ ওরফে জাবের আসামি মেসেঞ্জার ও হোয়াটসএ্যাপের মাধ্যমে এইচএসসি ২০১৮ এর ভুয়া প্রশ্নপত্র প্রচার ও বিক্রয়ের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। মোঃ রমজান আলী টিটু ইয়াসির আরাফাত ওরফে সাউদের কাছ থেকে নিজের জন্য এইচএসসি ২০১৭ এর ভুয়া প্রশ্নপত্র সংগ্রহ ও বিক্রয়ের মাধ্যমে এই গ্রুপের সদস্য হিসেবে কাজ শুরু করে। তার দায়িত্ব হলো ইয়াসিরের কাছ থেকে ভুয়া প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে বণ্টন করা। উক্ত আসামি ভুয়া প্রশ্ন প্রচারকারী ফেসবুক ও মেসেঞ্জার গ্রুপের সদস্য। তিনি আরও জানান, মাহমুদ হাসান এক বছরের বেশি সময় ধরে ভুয়া প্রশ্ন সংগ্রহ, প্রচার ও বিক্রয় করে আসছে। সে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সম্পর্কে বিশেষ পারদর্শী। সে ভুয়া প্রশ্ন ফাঁসের কাজে গ্রুপগুলো ব্যবহার করত এবং পরীক্ষার সাবজেক্টের নাম অনুযায়ী তারা এ্যাডমিন গ্রুপের নাম পরিবর্তন করত।
×