ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

শিল্পকলায় সৈয়দ বদরুদ্দীন হোসাইনকে নিয়ে সেমিনার

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১২ এপ্রিল ২০১৮

শিল্পকলায় সৈয়দ বদরুদ্দীন হোসাইনকে নিয়ে সেমিনার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভাষাসৈনিক, শিক্ষাবিদ, কলামিস্ট এবং পদাতিক নাট্য সংসদের আজীবন সভাপতি প্রয়াত সৈয়দ বদরুদ্দীন হোসাইনের ৯৫তম জন্মদিন ছিল বুধবার। এ উপলক্ষে ‘সৈয়দ বদরুদ্দীন হোসাইন, প্রগতির পথে প্রতিদিন সারাদিন’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় এ দিন বিকেলে। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পদাতিক নাট্যসংসদ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নাট্যকার অপূর্ব কুমার কুণ্ডু। পদাতিকের সম্মানিত সদস্য কাজী রফিকের স্বাগত বক্তব্যের মধ্যদিয়ে শুরু হয় অনুুষ্ঠান। আলোচনায় অংশ নেন নাট্যজন ম হামিদ, লাকী ইনাম, গোলাম সরোয়ার, মাহমুদুল কবীর, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল আক্তারুজ্জামান, আবৃত্তিকার ভাস্বর বন্দোপাধ্যায়, অভিনেতা ঝুনা চৌধুরী, বাবুল বিশ্বাস, মিলন কান্তি দে, চন্দন রেজা প্রমুখ। সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন আবদুস সেলিম। মূল প্রবন্ধ তুলে ধরে অপূর্ব বলেন, বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের অভিভাবক এবং বিশ্ব আইটি আইয়ের সাম্মানিক সভাপতি রামেন্দুু মজুমদারের দৃষ্টিতে, সৈয়দ বদরুদ্দীন হোসাইন একজন নিভৃতচারী নাট্যপ্রেমী এবং সংস্কৃতির সাধক। ক্ষোভ-অভাব-অনটন সবকিছুর মূলে দারিদ্র্য আর অশিক্ষা। যৌবনে পৌঁছে সিদ্ধান্ত, জীবনকে সাজাবেন বিদ্যার্জনে আর বিদ্যা বিতরণে। মধ্য প্রৌঢ়ে সাজানো বাগানকে আগলে রাখতে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা। এটা রাষ্ট্রীয় অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে প্রগতিশীল চিন্তা চেতনাকে জিইয়ে রাখা, মূল্যবোধকে হারিয়ে যেতে না দেয়া। তথাপি শিল্পে বাঞ্ছারাম সাজানো বাগান ধরে রাখতে পারলেও সাজানো বাগানের নাট্যকার মনোজমিত্র যেমনিভাবে পারলেন না এই ২০১৮ মার্চে এসে তার নাট্যদল সুন্দরমকে তার পূর্বের স্থানে ধরে রাখতে ঠিক তেমনিভাবে সৈয়দ বদরুদ্দীন হোসাইনও পারলেন না তার স্বপ্নের সমাজ, রাজনৈতিক দর্শনের রাষ্ট্রীয় কাঠামো, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভুবন খ্যাতি, সাংস্কৃতিক জাগরণের অগ্রগতি, মূল্যবোধের প্রগতিকে ধারণ করে তৃপ্ত হতে, শ্রান্ত হতে, সুখী হতে। যে কারণে বার্ধক্যের শেষ পনেরো বছর নৈতিকতার অবক্ষয়, শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস, বিদ্যার বাণিজ্যকরণ, মূল্যবোধের পরাজয়, তথা মানুষের অবমাননায় তার হৃদয়ের রক্তক্ষরণ আটকে রইল পত্রিকার পাতায় পাতায় আর গ্রন্থের পৃষ্ঠা সীমায়। মহৎ ব্যক্তিদের সান্নিধ্যে সাহচার্য্যে যার জ্ঞানার্জন সেই তিনি তার কর্ম বৈশিষ্ট্যে কীভাবে অন্যের কাছে হয়ে উঠলেন অনুসরণীয় সেই আত্মানুসন্ধানে এই লেখা সৈয়দ বদরুদ্দীন হোসাইন প্রগতির পথে প্রতিদিন সারাদিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন রেজিস্ট্রারের মতো প্রভাবশালী একজন মানুষ টিএসসিতে এসে ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ যোগাচ্ছেন নাটক করতে, বিতর্ক করতে, সংস্কৃতির চর্চা করতে-এটা যেমন গোলাম সারোয়ারের কাছে বিস্ময় তেমনি বিস্ময় সঙ্কট থেকে সম্ভাবনায় ক্ষেতমজুর খইমুদ্দিন কে পৌঁছে দেয়ায়। নিঃশ্বতার নয় বরং গর্বের অংশীদার স্বাধীনতা ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক যতীন সরকার। সৈয়দ বদরুদ্দীন হোসাইন যেখানে কলেজের অধ্যাপক আমি সেখানে ছাত্র। পরিদর্শক হিসেবে প্রিন্সিপালকে তিনি বলছেন, যতীন আমার ছাত্র, আমার ভাল ছাত্র। আর আমি এই জীবন সায়াহ্নে শারীরিক ভাবে চলাচলে অসমর্থ সত্ত্বেও কিশোরগঞ্জে গেছি তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে। চরম বেদনায় আপ্লুত হয়েছি কিশোরগঞ্জে বুদ্ধিজীবী-চিন্তাশীল মানুষের জানা শোনায় সৈয়দ বদরুদ্দীন হোসাইন সম্পর্কে জ্ঞানের পরিধির কমতি দেখে।
×