ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

তুরিনে জুভেন্টাস-রিয়াল মাদ্রিদ মহারণ

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ৩ এপ্রিল ২০১৮

তুরিনে জুভেন্টাস-রিয়াল মাদ্রিদ মহারণ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টানা দুইবার শিরোপা জয়ের নজির ছিল না কখনও। গত মৌসুমে সেই অসাধ্য সাধন করে ইতিহাস গড়ে রিয়াল মাদ্রিদ। এবার দলটির সামনে হ্যাটট্রিক শিরোপার হাতছানি। তবে কাজটা যে খুব কঠিন, সেটা ভালমতোই টের পাচ্ছে স্প্যানিশ পরাশক্তিরা। কেননা শেষ ষোলোতে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইনের মতো পরাশক্তিকে হারানোর পর কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের সামনে ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়ন জুভেন্টাস। অর্থাৎ উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের শেষ আটের প্রথম লেগের ম্যাচে জুভদের আতিথ্য নিচ্ছে রিয়াল। আজ রাতে জুভেন্টাসের মাঠ তুরিনের জুভেন্টাসের স্টেডিয়ামে হবে এই মহারণ। ম্যাচটির আগে বেশ চাপে আছেন রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান। আজ রাতে আরেক ম্যাচে স্প্যানিশ ক্লাব সেভিয়ার মাঠে খেলবে জার্মান পরাশক্তি বেয়ার্ন মিউনিখ। লা লিগায় দারুণ ছন্দে থাকা সেভিয়া নিজেদের মাঠে বাভারিয়ানদের বিপক্ষে জয়ের স্বপ্ন বুনছে। নিজেদের শেষ ম্যাচে পরাশক্তি বার্সিলোনার বিপক্ষে জিততে জিততে ড্র করেছে তারা। এ কারণে বেশ উজ্জীবিত হয়েই মাঠে নামবে সেভিয়া। রিয়াল বস জিদানের চাকরি নিয়ে ইদানিং শঙ্কা কাজ করছে! জোর গুঞ্জন, কোয়ার্টার ফাইনালে জিততে না পারলে চাকরি হারাতে পারেন ফরাসী গ্রেট। এমন অবস্থার মধ্যেই ইতালি সফরে গেছে গ্যালাক্টিকোরা। জিদান তার খেলোয়াড়ি জীবনের সাবেক ক্লাব জুভেন্টাসের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। লা লিগায় ইতোমধ্যে শিরোপা হাতছাড়া হওয়ায় ইতালিয়ান জায়ান্টদের বিপক্ষে ম্যাচে জিতে শেষ চার নিশ্চিত করাই এখন জিদানের সামনে মূল চ্যালেঞ্জ। এটার উপরই তার ভবিষ্যতও অনেকটা নির্ভর করছে। লা লিগার পাশাপাশি কোপা ডেল রে’ থেকেও ইতোমধ্যেই বিদায় নিয়েছে গ্যালাক্টিকোরা। আগের রাউন্ডে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইনকে হারানোয় আত্মবিশ্বাস নিয়েই জুভদের বিপক্ষে খেলবে রিয়াল। এ কারণেই স্বপ্ন বুনছেন জিদান। মৌসুমে এই একটিমাত্র শিরোপা এখন রিয়ালের সামনে অপেক্ষা করছে। গত দুইবারের শিরোপা জয়ী দলটি কোনভাবেই এটা হাত ছাড়া করতে চাচ্ছে না। মাদ্রিদের আবহও অনেকটা তাদেরই পক্ষে রয়েছে। শেষ ১১ ম্যাচেই ১০টিতেই জয় এসেছে। এর মধ্যে পিএসজিকে বিদায় করার ম্যাচটিও আছে। লীগে টানা জয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের থেকে মাত্র চার পয়েন্ট পিছিয়ে আছে। এই সময়ের মধ্যে পুরো দল মিলে করেছেন সর্বমোট ৩৬ গোল। গড়ে প্রতি ম্যাচে তিনটির বেশি গোল এসেছে। জুভেন্টাসের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে রিয়াল ফরোয়ার্ড লুকাস ভাসকুয়েজ বলেন, ম্যাচটা খুব ভাল সময়ে আমাদের কাছে এসেছে। গত কয়েক মাসে আমরা বেশ ছন্দে আছি। ভাল খেলে অনেক গোল আদায় করতে পেরেছি। এটা সত্যিই আমাদের জন্য দারুণ মুহূর্ত। আর এখন এই পরিস্থিতি থেকে পুরো সুবিধা আমরা নিতে চাই। গত বছর চ্যাম্পিয়ন্স লীগে টানা দ্বিতীয় ও লীগ শিরোপা জয় সত্ত্বে জিদান রিয়ালের প্রত্যাশা অনুযায়ী নিজের অবস্থান শক্ত করতে পারেননি। কোচ হিসেবে এটাই প্রথমবারের মতো তার তুরিনে ফেরা। ২০০৫ সালে সর্বশেষ খেলোয়াড় হিসেবে তিনি তুরিনে এসেছিলেন। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শেষ ষোলোর সেই ম্যাচে রিয়াল ২-০ গোলে হেরেছিল। ডেভিড ট্রেজেগুয়েটের গোলের পরে মার্সেলো জালায়েটার অতিরিক্ত সময়ের গোলে জুভদের জয় নিশ্চিত হয়। ওই সময় জুভেন্টাসের কোচ ছিলেন ফ্যাবিও কাপেলো। রিয়ালের ওই দলটিতে ছিলেন ডেভিড বেকহ্যাম, রোনাল্ডো, থমাস গ্রাভেসেনের মতো তারকারা। ১৩ বছর পর একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে আবারও এই দুই দলের দ্বৈরথের সাক্ষী হতে যাচ্ছেন অভিজ্ঞ গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি বুফন। দল দুটি গত বছর চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালেও মুখোমুখি হয়েছিল। তাই জুভেন্টাসের সামনে প্রতিশোধের হাতছানি। এক বছর আগের ফাইনালে রিয়ালের কাছে পাত্ত্ইা পায়নি জুভেন্টাস। বুফনরা হেরেছিলেন ৪-১ গোলে। কার্ডিফের সেই জয়টা যদি জিদান রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করতে চান তবে তা ইস্কোর জন্য কাজে আসবে। কারণ ওই ম্যাচে গ্যারেথ বেল, মার্কো আসেনসিওকে ছাড়িয়ে ইস্কোই ছিলেন সেরা। এই তিনজনই আজকের ম্যাচে একই গতি নিয়ে মাঠে নামবেন। এছাড়া গত সপ্তাহে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে স্পেনের হয়ে হ্যাটট্রিক করেছেন ইস্কো। আর সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো তো আছেনই। যিনি কিনা চ্যাম্পিয়ন্স লীগে আরও অপ্রতিরোধ্য। জুভেন্টাসও প্রতিশোধ নেয়ার সুযোগ পাচ্ছে। শেষ ষোলোতে টটেনহ্যামকে বিদায় করা জুভরাও আছে দারুণ ছন্দে। ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফিরেছেন জুয়ান কুয়ারডাডো ও জিওর্জিও চিয়েল্লিনি।
×