ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর ভোট চাওয়া মানুষের সঙ্গে তামাশা ॥ রিজভী

প্রকাশিত: ০৬:০০, ৩ এপ্রিল ২০১৮

প্রধানমন্ত্রীর ভোট চাওয়া মানুষের সঙ্গে তামাশা ॥ রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যে প্রধানমন্ত্রী মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেন, তাঁর মুখে ভোট চাওয়া জনগণের সঙ্গে তামাশা ছাড়া কিছুই নয় বলে মন্তব্য করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ইতোমধ্যে খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী যে প্রান্তেই ভোট চান না কেন তা ঘোষিত তফসিলের মধ্যে পড়ে। যা নির্বাচনী আচরণ বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। কারণ এই দুই সিটি ভোট হবে দলীয় প্রতীকেই। সোমবার নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন জনসভায় নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করেই ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন। তফসিল ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী যেখানেই ভোট চাইবেন তা নির্বাচনী তফসিলের মধ্যে পড়ে। এটা দেখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। সংবাদ সম্মেলনে রিজভী অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী যেহেতু বিনা ভোটের প্রধানমন্ত্রী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বন্দুকের নলই হচ্ছে তাঁর ক্ষমতার ভিত্তি। তাই তিনি সবকিছুই করতে চাচ্ছেন হুঙ্কার আর ধমক দিয়ে। সকল আইন, নিয়মনীতি ভেঙ্গে নৌকার পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। ভোট চাওয়া রাজনৈতিক অধিকার হয় তাহলে দলের সভানেত্রী হিসেবে ভোট না চেয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভোট চাচ্ছেন কেন? প্রধানমন্ত্রী হিসেবে, সরকারী টাকা খরচ করে, সরকারী হেলিকপ্টার নিয়ে, সরকারী সার্কিট হাউস ব্যবহার করে এবং গন্তব্যস্থলে সরকারী গাড়ি ব্যবহার করে ও সরকারী সকল প্রটোকল নিয়ে ভোট চাওয়া কোন ধরনের রাজনৈতিক অধিকার জনগণ তা জানতে চায়। এটা দেখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের কিন্তু ক্ষমতাসীনদের নির্বাচনী আইনভঙ্গের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন বরাবরই চুপ রয়েছে। এ সময় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আজকের পূর্বঘোষিত প্রতিবাদ কর্মসূচী যথাযথভাবে পালনের জন্য বিএনপি এবং সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানান রিজভী। বলেন, বিএনপির চেয়ারপার্সন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা সাজানো মামলায় বন্দী করে রাখা হয়েছে। বর্তমান ভোটারবিহীন সরকারকে দীর্ঘস্থায়ী করতে প্রধানমন্ত্রী গায়ের জোরে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বিএনপির বিরুদ্ধে ডাহা মিথ্যাচার করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী সদস্য রফিক সিকদার আমিনুল ইসলাম প্রমুখ। এদিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দেশ যেমন একদলীয় কায়দায় চলছে একইভাবে এই সরকার একদলীয়ভাবে দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছে। সরকার দুর্নীতিকে মনোপলি (একদলীয়) করে ফেলেছে। কেউ দুর্নীতি করতে চাইলে এখন তাদের সঙ্গে থাকতে হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ৭১ আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য আরও বলেন, স্বাধীনতার পর এমন পরিস্থিতিতে দেশ আসবে এমনটা জনগণ চিন্তাও করেনি। ১৭ বছর আগে এই সরকার দুর্নীতির স্বীকৃতি পেয়েছিল। আজ তারা বিশ্বে স্বৈরাচার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। শীঘ্রই তারা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দুর্নীতিবাজ সরকার হিসেবে স্বীকৃতি পাবে উল্লেখ করেন।। তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় যেভাবে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চলছে একইভাবে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দুর্নীতি হচ্ছে। কিন্তু এসবের বিচার এখন হবে না, বিচার হবে সময় মতো। লুটপাটের টাকা নিয়ে যাওয়ায় যে শূন্যতা সৃষ্টি হচ্ছে তা পূরণ করতে ঋণ নিচ্ছে। আগামী প্রজন্মের ওপর চাপবে এই বোঝা। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াই করতেই আজ খালেদা জিয়া জেলে। খালেদা জিয়াকে জেলে রাখার মানে হলো বাংলাদেশের মানুষকে নির্বাচনের বাইরে রাখা বলেও মন্তব্য করেন তিনি। কিন্তু জনগণ প্রস্তুত হয়ে আছে এর জবাব দেয়ার জন্য।
×