ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিউটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাবুল গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ১ এপ্রিল ২০১৮

বিউটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি  বাবুল গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস / নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ ॥ হবিগঞ্জে বিউটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাবুল মিয়াকে আটক করেছে র‌্যাব। সিলেটে র‌্যাবের হাতে আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিউটিকে অপহরণের কথা স্বীকার করেছে। তবে ধর্ষণ ও হত্যার কথা অস্বীকার করছে এবং একেক সময় একেক কথা বলছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। শনিবার দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যাব-৯ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আলী হায়দার আজাদ জানান, বিউটি হত্যাকা-ের পরপরই বাবুল হবিগঞ্জ থেকে পালিয়ে সিলেটে এসে আশ্রয় নেয়। শুক্রবার গভীর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাবুল মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাবুল কয়েকজনের নাম বলেছে। তার দেয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তবে বাবুল বিউটির পরিবারকে দোষারোপ করছে। সে র‌্যাবকে বলেছে, বিউটির মাথায় সমস্যা আছে।’ জিজ্ঞাসাবাদে বাবুল জানায়, জানুয়ারিতে বিউটি অপহরণের ঘটনায় সে জড়িত। এই ঘটনায় থানায় মামলা যাতে না হয় সেজন্য বাবুলের পক্ষ থেকে ঘটনাটি মীমাংসা করার জন্য একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। তবে বিউটির পরিবার তা আমলে না নিয়ে অপহরণ মামলা করে। অপহরণের পর থেকেই বিউটিকে তার মামার বাড়িতে রাখা হয়। গ্রেফতারকৃত বাবুল মিয়া হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ব্রাহ্মণডোরা গ্রামের মৃত মলাই মিয়ার ছেলে। তার মা স্থানীয় ইউপি মেম্বার কলমচান। অভিযোগ রয়েছে, ২১ জানুয়ারি শায়েস্তাগঞ্জের ব্রাহ্মণডোরা গ্রামের দিনমজুর সায়েদ আলীর মেয়ে বিউটি আক্তারকে (১৪) বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বাবুল মিয়া ও তার সহযোগীরা। এক মাস তাকে আটকে রেখে ধর্ষণ করে। এক মাস নির্যাতনের পর বিউটিকে কৌশলে তার বাড়িতে রেখে পালিয়ে যায় বাবুল। এ ঘটনায় ১ মার্চ বিউটির বাবা সায়েদ আলী বাদী হয়ে বাবুল ও তার মা স্থানীয় ইউপি মেম্বার কলমচানের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। পরে মেয়েকে সায়েদ আলী তার নানার বাড়িতে লুকিয়ে রাখেন। এরপর বাবুল ক্ষিপ্ত হয়ে ১৬ মার্চ বিউটি আক্তারকে উপজেলার গুনিপুর গ্রামে তার নানার বাড়ি থেকে রাতের আঁধারে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। ফের ধর্ষণের পর তাকে খুন করে লাশ হাওড়ে ফেলে দেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। বিউটিকে হত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগে ১৭ মার্চ তার বাবা সায়েদ আলী বাদী হয়ে বাবুল মিয়াসহ দুজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে শায়েস্তাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর ২১ মার্চ পুলিশ বাবুলের মা কলমচান ও সন্দেহভাজন হিসেবে একই গ্রামের ঈসমাইলকে আটক করে। এদিকে, এই ঘটনায় ২৯ মার্চ হগিঞ্জের পুলিশ সুপার বিধান ত্রিপুরা তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেন। তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে কমিটিকে। হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আ স ম শামছুর রহমান ভূইয়াকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- বানিয়াচং সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা ও সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নাজিম উদ্দিন।
×