ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চাই নির্মল বিনোদন;###;মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ বদলে যাওয়া বিনোদন

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ২৯ মার্চ ২০১৮

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ বদলে যাওয়া বিনোদন

চিরকালই আমোদপ্রিয় আমাদের দেশের মানুষ। শত কাজের ভিড়ে একটু সময় পেলে ব্যয় করে বিনোদনের জন্য। আমাদের আছে গর্ব করার মতো হাজার বছরের ঐতিহ্যের বিনোদন সংস্কৃতি। তবে সময়ভেদে এই বিনোদনের ধরন বদলে যায়। নিজেদের পরিচয় ভুলে বিদেশী বিনোদন সংস্কৃতিকে বুকে ধারণ করে হারিয়ে ফেলতে বসেছি ঐতিহ্যের বিনোদন। গত একযুগ আগে যে বিনোদন ছিল তা এখন আর নেই। এখন যেটা বর্তমান অদূর ভবিষ্যতে তাও পাল্টে যাবে। হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী সব বিনোদন। জারী সারী পালাগান যাত্রাপালা একসময় ছিল প্রধান বিনোদন। সবচেয়ে বড় বিনোদনের স্থান ছিল খেলার মাঠ। মাঠে খেলায় মেতে ওঠার দিন শেষ। অবশ্য সেই মাঠও এখন নেই। সেগুলো এখন কেবলই অতীত। তার জায়গায় স্থান করে নিয়েছে কম্পিউটার ও মোবইল। গান শোনা, দলবেঁধে সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখা, খেলাধুলা, কনসার্টে যাওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা সবকিছুই যেন এখন অনলাইন নির্ভর। ঐতিহ্যের সব বিনোদন এখন বিলীন হতে বসেছে। স্মার্টফোনে বন্দী সব বিনোদন। সবকিছু হয়ে গেছে এককেন্দ্রিক আত্মকেন্দ্রিক। আমাদের বলে কিছু থাকছে না। প্রযুক্তি আমাদের যতটুকু এগিয়ে দিয়েছে তার সাথে পাল্লা দিয়ে আমাদের যুব সমাজের চরিত্র নষ্ট করার জন্যও সমান ভুমিকা রাখছে। যোগাযোগ বন্ধুত্ব রক্ষা ও বিনোদনের জন্য নিত্যদিনের সঙ্গী মুঠোফোন ও কম্পিউটার। কম্পিউটারে সৃজনশীল কাজ করার বদলে অশ্লীল সিডি-ভিসিডি দেখা ইন্টারনেট পর্ণোগ্রাফিতে মজে থাকা এখন অনেকের প্রধান বিনোদন মাধ্যম। এগুলো প্রজন্মকে ধ্বংস করছে। সব মিলিয়ে বলা যায় এখনকার বিনোদন মানেই প্রযুক্তি নির্ভরতা। ছেলে-মেয়েরা আগে বিকেল হলে মাঠে খেলতে যেত। এখন তার পরিবর্তে ভিডিও গেম দেখতেই বেশি পছন্দ করে। কি শহর কি গ্রাম সব জায়গাতেই পৌঁছে গেছে প্রযুক্তির ছোঁয়া আর মানুষের উপরে পড়ছে প্রযুক্তির প্রভাব। গ্রামীণ সংস্কৃতি বিনোদনের আদি চেহারা সম্পর্কে আমাদের ধারণা আছে, এই যেমন জারী-সারী ভাটিয়ালী ভলিখেলাসহ বিভিন্ন ধরনের খেলাধূলা। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কাছে এগুলো কেবল বিনোদনই নয়, এগুলো তাদের ঐতিহ্যিক পরিচয়, দর্শন তাদের জীবনের অংশ। ব্যক্তি ও সমাজ জীবনের অস্থিরতা দূর করতে নির্মল বিনোদনের বিকল্প হতে পারে না । যা কখনও প্রযুক্তি দিতে পারবে না। ব্যক্তি সমাজ তথা দেশের কল্যাণে সন্তানদের প্রযুক্তি নির্ভর বিনোদন থেকে দূরে রাখতে হবে। ফিরে যেতে হবে ঐতিহ্যের সব বিনোদনে। যেখানে রয়েছে নির্মল আনন্দ। ঢাকা থেকে
×