ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে চাচ্ছে

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ২৮ মার্চ ২০১৮

সরকার একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে চাচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে বর্তমান সরকার একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে চাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার বেলা সোয়া ২টায় নয়াপল্টন দলীয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির শোভাযাত্রা উদ্বোধন করতে গিয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন । তিনি আরও বলেন, ৪৭ বছর পর অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আমরা স্বাধীনতা দিবস পালন করছি। যে চেতনা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল সরকার সেই চেতনা ধ্বংস করে দিয়েছে। বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শোভাযাত্রাটি শুরু হয়ে বিজয় নগর নাইটেঙ্গেল মোড়, ও কাকরাইল হয়ে শান্তি নগর মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। ফখরুল বলেন, সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়ে বর্তমান সরকার একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে মানুষের অধিকার ক্ষুন্ন হয়। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীর মুক্তি দাবি করে তিনি বলেন, সংসদ ভেঙ্গে ও প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, সারা দেশে খুন, গুম ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা ও নির্যাতন করা হচ্ছে। এভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। মুক্তিযুদ্ধের সময় যিনি পাক বাহিনীর হাতে বন্দী হয়েছিলেন, ৯ মাস যিনি নিগৃহীত হয়েছিলেন, যিনি গণতন্ত্রের জন্য সারাজীবন ধরে লড়াই-সংগ্রাম করেছেন সেই নেত্রী খালেদা জিয়া আজকে কারাগারে। খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করতে হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, যে চেতনা নিয়ে আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম সেই চেতনার মূল ছিল গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। সেই চেতনা ও সমস্ত অধিকার কেড়ে নিয়ে রাষ্ট্রের সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে বর্তমান সরকার। তাই এ সরকারকে বিদায় করতে হলে গণতন্ত্রকে মুক্ত করার শপথ নিতে হবে। আজকে এই স্বাধীনতার দিনে আমাদের শপথ নিতে হবে, আমরা যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব বিশ্বাস করি, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিশ্বাস করি। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্বাসনে আছেন, হাজার নেতাকর্মী যারা কারাগারে আছেন তাদের মুক্তির জন্য। বিএনপি মহাসচিব বলেন, পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, এদেশের মানুষ শান্তি চায়, তাদের অধিকার ফিরে পেতে চায়, গণতন্ত্রকে ফিরে চায় এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি চায়। তাই অবশ্যই খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। শত শত রাজবন্দী আছে তাদেরকে মুক্তি দিতে হবে। আগামী নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে শোভাযাত্রায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুলাহ আল নোমান, এ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, জয়নুল আবদীন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, আতাউর রহমান ঢালী, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, শামা ওবায়েদ, বিএনপির প্রচার সম্পাাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সিনিয়র যুগ্মসাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ আব্দুল মালেক, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুনুর রশিদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ প্রমুখ। শোভাযাত্রার শুরুতে সামনের সাড়িতে থাকাকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা লক্ষ্য করা যায়। পরে সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। শোভাযাত্রার সামনের সারিতে ছিলেন মহিলা দলের নেতাকর্মীরা। লাল সবুজের শাড়ি পড়ে তারা এ কর্মসূচীতে অংশ নেয়। এছাড়াও কয়েকটি পিকআপ, দুটি ঘোড়ার গাড়িতে করে শোভাযাত্রায় অংশ নেয় নেতাকর্মীরা। শোভাযাত্রার শুরুর পরপর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতারা পিকআপে ওঠে পড়েন। পিকআপে করেই তারা শোভাযাত্রা শেষ করেন। শোভাযাত্রা শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানন।
×