ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

মেনহাজুল ইসলাম তারেক

এ হামলা মতাদর্শিক সহিংসতার

প্রকাশিত: ০৪:১২, ১৫ মার্চ ২০১৮

এ হামলা মতাদর্শিক সহিংসতার

মতাদর্শিক সহিংসতা বর্তমানে বৈশ্বিক এক সমস্যা। তরুণ সমাজকে বিভ্রান্ত করে একটি গোষ্ঠী এ ধরনের সহিংসতা সৃষ্টি করছে। মতাদর্শিক সহিংসতা বিস্তারের পেছনে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কিছু বিষয়ও জড়িত রয়েছে। অথচ আমাদের তরুণ সমাজ জানেই না যে, এ ধরনের সহিংসতা কখনও সফল হয় না। এ কারণে মতাদর্শিক সহিংসতা রোধে তরুণদের উপযোগী সমাজ গঠনে মনোযোগী হতে হবে। এজন্য রাষ্ট্র, প্রশাসন, সমাজ ও পরিবার এবং ব্যক্তি পর্যায়ে সচেতন ভূমিকা রাখতে হবে। ৩ মার্চ বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও সিলেট শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর তারই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটেছে। আমরা মনে করি, এ হামলাও মতাদর্শিক সহিংসতারই জ্বলন্ত একটি প্রমাণ। কেবল ভিন্নমতাদর্শী হওয়ার কারণেই সুপরিচিত এ লেখককে টার্গেট করা হয়েছে এবং এক্ষেত্রে হামলার কাজটি করেছে বিভ্রান্ত এক তরুণ। এর পেছনেও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা, ভিন্নমত সহ্য করতে না পারার মতো বিষয় থাকতে পারে। আমরা আরও বলতে চাই, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী মহল তরুণদের বিভ্রান্ত করে এ ধরনের হামলায় উসকে দিচ্ছে। অন্যদিকে তরুণরা ভালমতো না বোঝার কারণে বিভ্রান্ত হয়ে অঘটন ঘটিয়ে নিজের ভবিষ্যৎ এবং রাষ্ট্র ও পরিবারের সদস্যদের জন্য বড় ধরনের বিপর্যয় টেনে আনছে বলেই মনে হয়। ছোট্ট ভূখণ্ড এবং বহুল জনসংখ্যার দেশ হওয়া ছাড়াও নানামুখী শিক্ষাব্যবস্থার কারণে আমাদের দেশে ভিন্নমতাবলম্বী বেশি। এর বাইরে গণতন্ত্রের প্রকৃত শিক্ষা-সর্বক্ষেত্রে পরমতসহিষ্ণুতা সরকার ও শাসক দল থেকে শুরু করে কোনো রাজনৈতিক দলের মধ্যেই নেই বললেই চলে। আছে কোনো ধরনের দৃশ্যমান কারণ ছাড়াই গুম-খুনের মতো ঘটনা। ফলে মতাদর্শিক সহিংসতা আমাদের দেশে বেশি হবেই। ধর্মীয় ভিন্নমতাবলম্বী আলেমেরও গুপ্তহত্যা থেকে রেহাই না পাওয়া পরিস্থিতির ভয়াবহতাই নির্দেশ করে। আমরা মনে করি, এ পরিস্থিতি থেকে বের হতে হলে গণতন্ত্রের সত্যিকারের চর্চা, ন্যায়বিচার ও সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে সবার আগে। এজন্য তরুণ-তরুণীদের মূল্যবোধ সৃষ্টিতে নিতে হবে বিভিন্ন পদক্ষেপ। উঠতি বয়সী একটি ছেলে বা মেয়ে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের হাতছানি পায়ে ঠেলে জঙ্গীবাদ, মতাদর্শিক সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদের মতো ঘৃণ্য বিষয়ে জড়িয়ে পড়তে যেন না পারে, তা পিতা-মাতা, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকেই নিশ্চিত করতে হবে সবার আগে। পার্বতীপুর, দিনাজপুর থেকে
×