নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ১২ মার্চ ॥ একমাস আগেও কর্মঠ প্রাণবন্ত এক যুবক হিসেবে পরিচিত ছিল সুমন হাসানাত শাওন। সবাই সুমন নামেই চেনে। ওয়ার্কশপের মিস্ত্রি হিসেবে উপার্জন করত। এখন তার জীবন শিকলে বন্দী। মা জেসমিন বেগম এবং বাবা শহীদ হোসেন জানান, ২২/২৩ দিন আগে থেকে সুমন অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। পড়শি থেকে শুরু করে বন্ধু-বান্ধব সকলের সঙ্গে গালিগালাজ থেকে শুরু করে অপ্রকৃতস্থ আচরণ করতে থাকে। অনেকে বেধড়ক মারধর করেছে। শরীরে অসংখ্য ক্ষতের দাগ ফুটে আছে। কোন উপায় না পেয়ে অসহায় বাবা-মা ঘরের চৌকির ওপরে এক পা শিকলে বেঁধে ঘরের খুঁটির সঙ্গে তালা দিয়ে বেঁধে রেখেছেন। ঠিকমতো খাওয়া নেই। ঘুম নেই। অশ্রাব্য গালিগালাজ করে যাকে পায় তাকে। আর মুখে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের খ-িত অংশ বলছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চায়। নিজেকে ছাত্রলীগের নেতা দাবি করছে। কাগজ পেলেই বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য দেয়ার কথা বলে লিখতে থাকে। বাবা-মা সহ পড়শিদের ধারণা বন্ধুমহলের সঙ্গে মিশে মাদকাসক্ত হয়ে আজকে সুমনের এই অবস্থা। মাদকসহ ইয়াবায় তার এমন সর্বনাশা দশা। এখন তার দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন। কিন্তু প্রতিবন্ধী বাবা এবং অসহায় মায়ের পক্ষে চিকিৎসা ব্যয় চালান সম্ভব নয়। প্রাথমিক পর্যায়ে তাদের অন্তত ৫০ হাজার টাকার প্রয়োজন। কলাপাড়া উপজেলা পরিষদ পুকুরের পূর্বদিকে একটি জীর্ণদশার টিনশেড বাড়িতে বসবাস সুমনের। বাবা শহীদ হোসেন প্রতিবন্ধী। তারপরও মাছ কিনে বিক্রি করে কিছু রোজগারের চেষ্টা করছেন। মা বিভিন্ন বাড়িতে এ কাজ-ও কাজ করে বেড়ায়। এ দম্পতির তিন সন্তানের বড় সুমন এখন অপ্রকৃতস্থ হঠাৎ করে মাথায় বজ্রাঘাত পড়ার অবস্থা।