ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কবিতা গান মেলা র‌্যালি সভা সেমিনারে নারীরা ছিলেন সমঅধিকার আদায়ে সোচ্চার

ভেনাসের ‘বেগুনী’ রং নারীবাদীদের প্রতিবাদের প্রতীক

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ৯ মার্চ ২০১৮

ভেনাসের ‘বেগুনী’ রং নারীবাদীদের প্রতিবাদের প্রতীক

জান্নাতুল মাওয়া সুইটি ॥ ‘সময় এখন নারীর: উন্নয়নে তারা, বদলে যাচ্ছে গ্রাম-শহরের কর্ম-জীবনধারা’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে দেশব্যাপী পালিত হলো ৪৩তম আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০১৮। প্রথম দিকে এ দিবসটি উদযাপন শুধু শহর কেন্দ্রিক হলেও বর্তমানে তা ছড়িয়ে পড়েছে দেশব্যাপী। দেশের বিভিন্ন স্থানের নারীরা এখন নারী দিবস পালন করেন উৎসাহ উদ্দীপনায়। এদিনে সম্মানিত করা হয় বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে অবদান রাখা নারীদের। কোথাও গানে গানে, কোথাও কবিতায়, কোথাও বিভিন্ন মেলা, র‌্যালি-মানববন্ধন, সমাবেশ, সভা-সেমিনার করে নারীদের সম্মান জানানো হয়। সম-অধিকারের জন্য এদিনে সোচ্চার হয়ে ওঠেন তারা। ১৯৭৫ সালে জাতিসংঘ আন্তজাতিক নারী দিবসের স্বীকৃতি দেয়। তারপর থেকে বছর বছর এদিনে দিবসটি পালনে নারীদের অংশ গ্রহণ বেড়েই চলছে। যে যেভাবে পারেন পুরোপুরি সম-অধিকার আদায়ের দাবি নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন। সেই সঙ্গে নারী দিবস উদযাপনে ভিন্নতা এসেছে পোশাকের মধ্য দিয়ে। বাঙালীর দিবস উদযাপনের বড় একটা অংশজুড়ে রয়েছে রঙের ভাবনা। রং তো যোগাযোগেরই একরকম ভাষা। নারী দিবসের তাৎপর্যের ওপর পোস্টার বা প্রতীকের রং বেগুনী বেছে নেয়া হয়েছে। কারণ এ রং ভেনাসের, যা কিনা নারীরও প্রতীক। বেগুনী নির্দেশ করে সুবিচার ও মর্যাদা, যা দৃঢ়ভাবে নারীর সমতায়নে সংশ্লিষ্ট। বেগুনী রংটা নারীবাদীদের প্রতিবাদের এক ধরনের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ্যালিস ওয়াকার রচিত দ্য কালার পার্পল বইটি এর অনুপ্রেরণা। এই বইতে তিনি তুলে ধরেছেন নারীদের অধিকারের কথা। মনে করা হয়, সেখান থেকেই নারীবাদী আন্দোলনের সঙ্গে জুড়ে গেছে এই রং। এ বছরও রাজধানীতে বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে নারী দিবস। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, ‘বাংলাদেশে নারীরা জাতীয় উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় স্বমহিমায় উদ্ভাসিত। নারীদের সুযোগ ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারলে তারা সহজেই এগিয়ে যাবে। নারীদের উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালীতে বৈশাখী টেলিভিশন ভবনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০১৮ উপলক্ষে বৈশাখী টেলিভিশন আয়োজিত কৃতী নারী সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন। স্পীকার বলেন, নারী অগ্রযাত্রা দীর্ঘ সময়ের। অনেক সংগ্রাম এবং আন্দোলনের ফলে নারীরা আজ এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানের প্রশংসা করে বলেন, তাঁর নেতৃত্বে দেশে নারীবান্ধব আইন ও নীতি প্রণয়নের ফলে নারী উন্নয়ন এবং ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে রোল মডেল। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সকল ক্ষেত্রে বিভিন্ন পেশায় নারীরা তাদের নিজেদের মেধা, শ্রম ও যোগ্যতা প্রমাণ করেছে। এ অগ্রযাত্রায় নারীদের পেছনে থাকার সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, দৃঢ় মনোবল ও প্রত্যয় নিয়ে নারীরা এগিয়ে গেলে- এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক নারীর দিবসে বরাবরের মতোই বিশেষ ব্যঞ্জনায় দিনটি উদযাপন করে বৈশাখী টেলিভিশন। এবার স্ব-স্ব ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখা পাঁচ কৃতী নারীদের সম্মননা জানায় প্রতিষ্ঠানটি। মানবাধিকার ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের জন্য এ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, রাজনীতিতে ডাক্তার দীপু মনি, সংস্কৃতিতে তারানা হালিম, কথা-সাহিত্যে সেলিনা হোসেন এবং সঙ্গীতে মুক্তিযুদ্ধের কণ্ঠসৈনিক শাহীন সামাদকে সম্মাননা জানানো হয়। অনুষ্ঠানে দীপু মনি বলেন, আজকে খুব ভাল লাগছে যে, এই সম্মাননা যেটি দেয়া হলো সেটি নিতে পারলাম আমাদের দেশের আরেকজন কৃতী নারী আমাদের মাননীয় স্পীকার, তার হাত থেকে। আমরা দুজনেই যার নেতৃত্বে দেশের জন্য কাজ করার সুযোগ পেয়েছি, সেই নারীর কথা আজকে না বললেই নয়। তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা, তাঁর উদ্যোগে তাঁর নেতৃত্বে, তাঁর পরিকল্পনায় আজকে বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে নারীর উন্নয়নে অনেক অনেক দূরে এগিয়ে গেছে এবং সারাবিশ্বে আজকে প্রশংসিত। আজকে যে বাংলাদেশের সকল ক্ষেত্রে নারীর যে সফল পদচারণা তাতে তার অসামান্য অবদান রয়েছে। তিনি বলেন, নারীরা আমাদের দেশে সকল আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন, সংগ্রাম করেছেন, ত্যাগ স্বীকার করেছেন। কিন্তু একেবারে রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে আইন করা থেকে শুরু করে নারী বান্ধব পরিবেশ তৈরি করা এবং সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নীতিমালা থেকে শুরু করে সব রকমরে সহায়তা দিয়ে নারীকে বিভিন্ন কাজে এগিয়ে আসার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের দিনে আমি বিশেষভাবে তাকে অভিবাদন জানাই, আমার ভালবাসা জানাই। সুলতানা কামাল বলেন, এই সম্মাননা পেয়ে আমি খুবই অবিভূত। বাংলাদেশের নারীর অগ্রসরমানতা তো আসলেই বিশ্বের দৃষ্টি কেড়েছে। নানাভাবে নানা দিকে নারীর যে দৃশ্যমানতা বেড়েছে, জাতীয়ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারী যে জায়গায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে তা সবাইকে চমককৃত করে। একই সঙ্গে আমাদের একটা প্রশ্ন থেকেই যায় যে ব্যক্তিগত জীবনে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে বা জীবন-যাপন করতে কতখানি পারছি, আমি নিশ্চিত জানি যে বাংলাদেশের যে আইন কানুনগুলো আছে, সেগুলোর যদি সুষ্ঠু প্রয়োগ হয়, আইন ব্যবস্থাপনায় যারা আছেন, তারা আন্তরিকভাবে এই কাজগুলো করেন, কারণ সব সময় কিন্তু আইন দিয়ে সব কিছু সমাধান হয়ে যায় না। একটা সুষ্ঠু প্রয়োগ হতে হয়। এবং সমাজে যেটার একটা, যেটাকে বলে চাপ সৃষ্টি করা। তিনি বলেন, চাপ সৃষ্টি করতে হবে। জোর দিয়ে বলতে হবে নারীর প্রোগেসের জন্য আমরা জোর দিয়ে যাতে কথাগুলো বলি। শুধু আশা করব আমরা যারা নারীরা সব সময় বলি যে আমরা এখনই নিরাপদ জীবন চাই। এখনই সম অধিকার চাই। যখন সমাজ থেকে বলা হয় এখনও নয়; সেটা পাল্টাতে হবে। শাহীন সামাদ বলেন, সঙ্গীত এমন একটা বিষয় যা মানুষের অন্তরকে ছুঁয়ে দিতে বাধ্য হয়। সঙ্গীতে আসলে কি শক্তি থাকে সেটা আমরা বুঝেছিলাম ১৯৭১ এ। সকলের কাছে দোয়া চেয়ে তিনি বলেন, একটা সম্মাননা পেলে দায়িত্ব আরও বেড়ে যায়। সামাজিক কাজে তাকে আরও বেশি সচেতন করে দেয়। আমার ইচ্ছা আছে ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের যে গানগুলো এগুলো এখনও সংগৃহীত হয়নি। আমরা নিজেদের ইচ্ছায় যতটুকু করার করছি। আমার মনে হয় যে, সরকারী বা বেসরকারীভাবে আমরা যদি পারতাম এখন আমরা যারা আছি তাদের থেকে সঠিক সুরে সিডি করা যেত এবং সারাবিশ্বে যদি ছড়িয়ে দেয়া যেত তাহলে আমার মনে হয় এই গানের অনুপ্রেরণা এখনকার তরুণ প্রজন্ম আরও বেশি এগিয়ে যেতে পারবে। এদিকে, আন্তর্জাতিক নারী দিবসে দৈনিক ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাসমিমা হোসেন ও বেগম পত্রিকার প্রথম নারী আলোকচিত্রী সাঈদা খানমকে সাংবাদিকতায় অনন্য ভূমিকা রাখার জন্য সম্মাননা দিয়েছে জাতীয় প্রেসক্লাব। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাদের সম্মাননা দেয়া হয়। সাঈদা খানম নিজে উপস্থিত থেকে সম্মাননা গ্রহণ করেন। তাসমিমা হোসেন দেশের বাইরে থাকায় তাকে অন্য একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সম্মাননা দেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানে ‘নারীর ক্ষমতায়নে গণমাধ্যমের সংবেদনশীলতা’ শীর্ষক মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাংবাদিক ও নারী অধিকারকর্মী দিল মনোয়ারা মনু। তিনি বলেন, সারাবিশ্বে নারী দিবস পালিত হচ্ছে নতুন তাৎপর্য ও নতুন আঙ্গিকে। দিবসটিকে কেন্দ্র করে নানা পর্যালোচনা শেষে নারী আন্দোলনকে এক সূত্রে গাঁথা হয়। সাংবাদিকতা পেশাটি যেহেতু পারিবারিক, সামাজিক এবং মানসিকভাবে চ্যালেঞ্জের তাই ধৈর্য মনোবল ও সাহস, এই তিন গুণের সমন্বয়ে নারীদের থাকা উচিত। জাতীয় প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, দৈনিক মানবজমিনের সম্পাদক মাহবুবা চৌধুরী, উইমেন জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি মমতাজ বিলকিস বানু, সিনিয়র সহ-সভাপতি রোজী ফেরদৌস, কার্যনির্বাহী সদস্য রোজিনা ইসলাম, চ্যানেল আই’র পরিচালক কনা রেজা, ইয়ং চেম্বার অব কমার্স ইন্টারন্যাশনালের সভাপতি রাজু আলীম প্রমুখ। ‘সমমর্যাদার সঙ্গে নারীর জীবন র্পনের এখসময়’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কর্মস্থলে নারী বান্ধব ও নিরাপদ কর্মপরিবেশের দাতে মুখে কালো মুখোশ পরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বৃহস্পতিবার মানববন্ধন করেছে আওয়াজ ফাউন্ডেশন। এ সময় বক্তারা বলেন, অর্থনৈমুক্তর একমাত্র নারী পুরুষের সমতা ও নারীবান্ধব পবেশ সৃষ্ট করা এবং সকল শ্রমিককে আইনের অধিকার, বাঁচার মতো মজুরি,সরকারকে দিতে হবে। এ সময় বক্তারা দাজায়ে বলেন, সর্বপ্রথম নারী শ্রদের মর্যাদা দিতে হবে, কর্মস্থলে সমঅধিকার,পদোন্নএবং ট্রেড ইউনিয়নে নারীর অংশ গ্রহণ নিশ্চত করতে হবে। এছাড়াও আরও কয়েকসংগঠন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নারীর অধিকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ সময় মানববন্ধন করে। বাংলাদেশ গার্মেন্ট ওয়ার্কার্স পে-প্রটেকশন এলায়েন্স-এর বক্তারা বলেন, এক সময় নারী শ্রমিক নির্ভর পোশাক শিল্প এখন আর নারী নির্ভর থাকছে না পুরুষরা দখল করে নিচ্ছে। কিন্তু দেশ উন্নয়ন করতে নারীদের ও ভূমিকা রয়েছে। এক দেশ শুধু পুরুষ একা উন্নয়ন করতে পারে না। বর্তমানে দেশে নারীরা পুরুষের সমান কাজ করলেও তারা বেতন বৈষম্যে ভুগছে। অতি দ্রুত দেশে নারী বৈষম্য দূর করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান করেন তারা। এছাড়াও পাহাড়ী নারীদের সুরক্ষা ও মারমা শ্রদের কর্ম ক্ষেত্রে নির্যাতনের প্রতিবাদ জায়ে মানববন্ধন করেছে হিল উইমেন্স ফেডারেশন। ‘গৃহশ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার এখনই সময়’ সেøাগানকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক নারী উদযাপনে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে উপলক্ষে সমাবেশ করেছে গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক। সমাবেশে ‘গৃহশ্রমিক সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে গৃহশ্রমিকদের সুরক্ষা ও কল্যাণ সর্বোপরি তাদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা, নির্যাতন-সহিংসতা বন্ধ এবং ন্যায্য মজুরি, ক্ষতিপূরণ ও শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানান বক্তারা। সে সময় গৃহশ্রমিকদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলার প্রয়াসে ‘গ্রাম-শহরের শ্রমজীবী নারী, জাগো, জোট বাঁধো, এগিয়ে যাও’ শীর্ষক লিফলেট বিতরণ করা হয়। বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পথিকের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় শ্রমিক জোটের কার্যকরী সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ, সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিনসহ বিভিন্ন এলাকাতে আগত গৃহশ্রমিকরা। গ্রাম ও শহরের নারীর সমঅধিকার নিশ্চিতকরণ এবং নিরাপদ কর্ম-পরিবেশের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে নারীদের সংগঠন ‘কর্মজীবী নারী’। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন কর্মজীবী নারীর সভাপতি ড. প্রতিমা পাল মজুমদার। এছাড়া সংগঠনের অন্যান্য নেতাও এতে উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ৮০ লাখের মতো নারী শ্রমিক গার্মেন্টসে কাজ করছে। গার্মেন্টসে ৮০ শতাংশ শ্রমিক নারী হওয়ার কারণে এ শিল্পের সার্বিক উন্নয়নে নারী ও পুরুষের মর্যাদাপূর্ণ সহাবস্থান ও যৌন হয়রানিমুক্ত কর্ম পরিবেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নারী কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, বরং নারী পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের। আমাদের মনে রাখতে হবে, নারী-পুরুষ পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, বরং পরিপূরক। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে উৎকর্ষতা সাধিত হয়। নারী দিবসে ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল আয়োজিত ‘কনসার্ট ফর উইমেন’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ। তিনি বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। সেই নারীকে গৃহবন্দী করে রেখে দিলে কখনই দেশ এগিয়ে যেতে পারবে না। একজন পুরুষের অবশ্যই নারীর প্রতি পরিপূর্ণ শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে। পুরুষের অবশ্যই মনে রাখতে হবে, নারী হচ্ছে তার মা, ভগ্নী, কন্যা, প্রেয়সী। একজন নারীকে অপমান মানে সেই সব সম্পর্ককেও অপমান। নারীকে নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, অধিকার কেউ স্বেচ্ছায় দেয় না, অধিকার আদায় করে নিতে হয়। সেই অধিকার আদায়ের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। আন্তর্জাতিক নারী দিবস কেন্দ্র করে ফ্রিডম স্যানিটারি ন্যাপকিনের পরিবেশনায় ৮ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী উইল ফেস্ট।
×