ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বৃষ্টিবিঘ্নিত চতুর্থ ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৫ উইকেটের হার ভারতের

গোলাপী দিনে ক্লাসেন-আলো

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

গোলাপী দিনে ক্লাসেন-আলো

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিকেটারদের গায়ে গোলাপী জার্সি, মাঠের সীমানা মার্কিংয়ের রং গোলাপী, গ্যালারিতে উপস্থিত দর্শকদের গায়ে গোলাপী পোশাক, নিউ ওয়ান্ডারার্স আক্ষরিকই হয়ে উঠেছিল গোলাপীময়। কারণ প্রোটিয়া মেয়েদের ব্রেস্ট ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করা। গত বেশ কয়েক বছর ধরে যেটি করে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা। জোহানেসবার্গে এমন দিনে মাঠের ক্রিকেট রাঙিয়ে দিলেন আনকোরা হেনরিক ক্লাসেন। ক্যারিয়ারের মাত্র দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামা উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানের ২৭ বলে অপরাজিত ৪৩ রানের ঝড়ো ইনিংসের সুবাদে বৃষ্টিবিঘ্নিত চতুর্থ ম্যাচে ভারতকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। ৬ ওয়ানডের সিরিজে ব্যবধান ৩-১এ নামিয়ে এনেছে এইডেন মার্করামের দল। স্কোর ॥ ভারত ২৮৯/৭ (৫০ ওভার), দক্ষিণ আফ্রিকা ২০৭/৫ (২৫.৩ ওভার; ২৮ ওভারে টার্গেট ২০২)। পোর্ট এলিজাবেথে পরের ম্যাচ মঙ্গলবার। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ২৮৯ রান করে ভারত। দলটির ইনিংসের ৩৫তম ওভারে বৃষ্টির জন্য বেশ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকলেও সে সময়ে ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমেনি। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের ৭.২ ওভারে বৃষ্টি নামলে আবার খেলা বন্ধ হয়ে যায়। সে সময় স্বাগতিকদের স্কোর ছিল ১ উইকেটে ৪৩ রান। আবার খেলা শুরু হলে জয়ের জন্য ২৮ ওভারে প্রোটিয়াদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২০২। রান তাড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার শুরুটা ছিল সাবধানী। ১৫তম ওভারে ৭৭ রানের মধ্যে ফিরে যান টপঅর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান। চোট কাটিয়ে ফেরা এবি ডি ভিলিয়ার্স (১৮ বলে ২৬) ফেরেন রানের গতি কিছুটা বাড়িয়ে। আসল কাজটা করে দেয় মিলার-ক্লাসেনের ৭২ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি। ২৮ বলে ৩৯ রান করে বিদায় নেন কিলার মিলার। এ্যান্ডেল ফেলুকওয়ায়োকে নিয়ে বাকিটা শেষ করেন ক্লাসেন। ৫ চার ও ১ ছক্কায় ম্যাচসেরা এই ব্যাটসম্যান ২৭ বলে অপরাজিত থাকেন ৪৩ রানে। মাত্র ৫ বলে অপরাজিত ২৩ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেন ফেলুকওয়ায়ো। ৬ ওভারে ৫১ রানে ২ উইকেট নেন চায়নাম্যান কুলদীপ। ৫.৩ ওভারে ৬৮ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন লেগস্পিনার যুবেন্দ্র চাহাল। তার আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই রোহিত শর্মাকে (৫) হারায় ভারত। সফরে আট ইনিংসে ষষ্ঠবারের মতো এই ওপেনারের উইকেট নেন কাগিসো রাবাদা। দ্বিতীয় উইকেটে শিখর ধাওয়ান ও বিরাট কোহলির টানা দ্বিতীয় শতরানের জুটিতে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা কোহলিকে ফিরিয়ে ১৫৮ রানের জুটি ভাঙ্গেন ক্রিস মরিস। ৮৩ বলে ৭টি চার ও একটি ছক্কায় ৭৫ রান করে বিদায় নেন ভারত অধিনায়ক। বৃষ্টির বাধায় খেলা বন্ধ হওয়ার আগেই সেঞ্চুরি তুলে নেন ধাওয়ান। তার ক্যারিয়ারের ত্রয়োদশ। যা ২০০১ সালের পর দক্ষিণ আফ্রিকায় স্বাগতিকদের বিপক্ষে ভারতের কোন ওপেনারের প্রথম সেঞ্চুরি। নিজের শততম ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করা প্রথম ভারতীয়, আর সবমিলিয়ে বিশ্বের নবম ক্রিকেটার। যদিও শেষ পর্যন্ত সেটি আর কাজে লাগেনি। বৃষ্টির পর আবার খেলা শুরু হলে দ্রুত ফিরে যান ধাওয়ান। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তার তৃতীয় সেঞ্চুরি থামে ১০৯ রানে। তার ১০৫ বলের ইনিংসটিতে ১০টি চারের পাশে ছক্কা দুটি। এই উইকেট দিয়েই যেন দিক হারায় ভারত। শেষের দিকে মহেন্দ্র সিং ধোনি ছাড়া আর কেউ সেভাবে এগিয়ে আসতে না পারায় তিন শ’ পর্যন্ত যেতে পারেননি অতিথিদের সংগ্রহ। স্কোর ॥ ভারত ॥ ৫০ ওভারে ২৮৯/৭ (রোহিত ৫, ধাওয়ান ১০৯, কোহলি ৭৫, রাহানে ৮, আয়ার ১৮, ধোনি ৪২*, পান্ডিয়া ৯, ভুবনেশ্বর ৫, কুলদীপ ০*; মরকেল ১/৫৫, রাবাদা ২/৫৮, এনগিদি ২/৫২, মরিস ১/৬০, ফেলুকওয়ায়ো ০/৩৮, ডুমিনি ০/২০)। দক্ষিণ আফ্রিকা ॥ ২৫.৩ ওভারে ২০৭/৫ (২৮ ওভারে লক্ষ্য ২০২; মার্করাম ২২, আমলা ৩৩, ডুমিনি ১০, ডি ভিলিয়ার্স ২৬, মিলার ৩৯, ক্লাসেন ৪৩*, ফেলুকওয়ায়ো ২৩*; ভুবনেশ্বর ০/২৭, বুমরাহ ১/২১, কুলদীপ ২/৫১, পান্ডিয়া ১/৩৭, চাহাল ১/৬৮)। ফল ॥ দক্ষিণ আফ্রিকা ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ ॥ হেনরিক ক্লাসেন (দক্ষিণ আফ্রিকা)।
×