ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

এসএসসির ইংরেজী দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নপত্রও ফাঁস হলো!

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

এসএসসির ইংরেজী দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নপত্রও ফাঁস হলো!

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এবার ফাঁস হলো এসএসসির ইংরেজী দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নপত্র। প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে মাদারীপুরে মোবাইদুল নামে একজনকে হাতেনাতে আটক করেছে পুলিশ। তবে গতকাল পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশের ২০ মিনিট থেকে ৩০ মিনিট আগে ইংরেজী দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়। যা দ্রুƒত সময়ের মধ্যে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। কেন্দ্রে প্রবেশের আধা ঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ায় পরীক্ষায় এর কোন প্রভাব পড়েনি বলে মনে করছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা। এদিকে আজ বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মামলার রায়কে ঘিরে রাজধানীসহ সারাদেশে আতঙ্ক বিরাজ করলেও পূর্বের সূচী অনুযায়ী আজকের পরীক্ষা যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে বলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, রাজনৈতিক কর্মসূচীর কারণে পরীক্ষা বাধাগ্রস্ত হবে না। আজ এসএসসির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা, হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ের পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে। গতকাল পরীক্ষা শুরুর আগে সকাল ৯টা ২০ মিনিট থেকে ৯টা ৩০ মিনিটের মধ্যে একাধিক ফেসবুক গ্রুপে ‘খ’ সেটের প্রশ্ন ছড়িয়ে পড়ে। পরীক্ষা শেষে দেখা যায়, ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের সঙ্গে পরীক্ষা নেয়া প্রশ্নপত্র মিলে গেছে। এ ব্যাপারে শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার বলেন, ‘আমি আজ (গতকাল) সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর পাই। এই সময়ে পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রে প্রবেশ করে গেছে। তার মানে তারা তো প্রশ্ন পায়নি। তারা কোন সুবিধাও পায়নি। তাহলে কেন এই প্রশ্নপত্র ফাঁস? নিশ্চয়ই সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে একটি অশুভ শক্তি এই কাজ করছে। আমাদের বিভ্রান্ত করছে।’ প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে অবহিত করা হয় জানিয়ে তপন কুমার সরকার বলেন, গোয়েন্দা কাজ করছে; বিটিআরসি ও গোয়েন্দা সংস্থার সাইবার ক্রাইম ইউনিট, তাদের আমি মেইল করে দিয়েছি। আমাদের কঠোর অবস্থানের পরও কেন ফেসবুকে প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে, তা আমরা বুঝতে পারছি না। তবে আশা করছি খুব শিগগিরই এ ব্যাপারে ভাল খবর দিতে পারব।’ গত ১ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এসএসসি ও সমমানের বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র দুটি পরীক্ষারই প্রশ্ন ফাঁস হয়। এর পর গত ৩ ফেব্রুয়ারি প্রশ্ন ফাঁসকারীকে ধরিয়ে দিলে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী। একই সঙ্গে বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের প্রেক্ষাপটে করণীয় নির্ধারণে একটি কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপরও থেমে নেই প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীরা। ৫ ইংরজী প্রথম পত্রের প্রশ্নও ফাঁস হয়। সর্বশেষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইংরেজী দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্ন ফাঁসেরও বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। এরমধ্যে বুধবারও পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়। ইংরেজী দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষার দিন সকালে ৯টা ২০ মিনিটে ‘ঊহমষরংয ঝঁমমবংঃরড়হ ভড়ৎ ঝঝঈ ধহফ ঐঝঈ বীধসরহবব’ নামে ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপে সকাল ৯টা ২৪ মিনিটে ‘মো. ইমাজ উদ্দিন রিয়াদ’ এবং ‘ঝঝপ ঊহমষরংয ২হফ ২০১৮’ নামের গ্রুপ ‘জরফড়ু কযধহ’ নামের আইডি থেকে ‘খ’ সেটের প্রশ্নের দুটি ইমেজ পাঠানো হয়। এছাড়া ‘চঝঈ. ঔঝঈ. ঝঝপ. ঐঝঈ ঊীধস ঐবষঢ়রহম ঈবহঃবৎ’ নামের গ্রুপে ‘আমি আর তুমি’ ও ‘রেজাউল করিম’, ‘জধভংধহ জড়হু’ ও ‘ঝযড়ঢ়হড়ঐরহ ইধষড়শ’ নামের আইডি থেকে পরীক্ষার আধা ঘণ্টা আগে একই প্রশ্নের ইমেজ দিয়ে বলা হয়, ‘১০০% পড়সসড়হ ফরংংর হবীঃ য়ঁবংঃরড়হ ধৎ লড়হহড় রহনড়ী শড়ৎড়’। অনুপস্থিত ও বহিষ্কার ॥ ইংরেজী দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষায় সারাদেশে অনুপস্থিত ছিল ১০ হাজার ২১২ জন পরীক্ষার্থী। আর অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে বহিষ্কার হয়েছে ২৩৫ জন পরীক্ষার্থী। বহিস্কৃতদের মধ্যে সর্বোচ্চ ঢাকা বোর্ডের ৮৩ জন, মাদ্রাসার ৩৭ জন, বরিশালের ৩০ জন, রাজশাহীর ১৫ জন, কুমিল্লার ২১ জন, যশোরের ১০ জন, চট্টগ্রামের ৬ জন, দিনাজপুরের ২২ জন এবং কারিগরি বোর্ডের ১১ জন।
×