ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা সুরক্ষায় ৩২ ধারায় উপধারা সংযোজন

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা সুরক্ষায় ৩২ ধারায় উপধারা সংযোজন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, জনস্বার্থে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা সুরক্ষায় প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩২ ধারায় একটি উপধারা সংযোজন করা হবে। ন্যায়সঙ্গত কারণ থাকলে দরকার হলে জনস্বার্থে ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার সুরক্ষায় ৩২ ধারায় একটি সাব সেকশন অন্তর্ভুক্ত করা হবে। কোন তথ্য নেয়া গুপ্তচরবৃত্তি নয়। একটা অপরাধের জন্য মূল বিষয় হলো অপরাধমূলক মন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অপরাধগুলোকে অনেক স্পষ্ট করা হয়েছে। ছোট অপরাধের জন্য ন্যূনতম সাজা। বড় অপরাধের জন্য বড় রকম সাজা। নতুন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য কোনো বাধা হবে না। সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে ১১টি অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। তার মানে এই অভিযোগ যখন হয়েছে, যেই কর্তৃপক্ষের অনুসন্ধান বা তদন্ত করা উচিত তারা তা করবে। মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএফ) আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অন্যদিকে বিচারকদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। মঙ্গলবার নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের খাস কামরায় সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন আইনমন্ত্রী। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সাংবাদিকরা অনুসন্ধানী রিপোর্টের জন্য গোপনভাবে তথ্য সংগ্রহ করলে সেটা গুপ্তচরবৃত্তির মধ্যে পড়বে না। গুপ্তচরবৃত্তি তাকেই বলে, যখন কেউ রাষ্ট্র ও সরকারের গোপন তথ্য সরকারের শত্রুর কাছে পাচার করে দেয়। তখন তার বিরুদ্ধে এ আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ সময় তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরির বিষয় উল্লেখ করে বলেন, এ অপরাধীদের সাজা কীভাবে দেব? সেজন্যই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়ার রায় নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, সরকার বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করছে, খালেদা জিয়ার এ বক্তব্য সঠিক নয়। তার বিরুদ্ধে এই মামলাটি হয়েছিল তারই নিয়োগকৃত বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ফখরুদ্দীন আহমেদ ও সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদের সময়। মামলাটি সরকারের কোনো সংস্থা তদন্ত করেনি। এটা তদন্ত করেছে স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই মামলা নিয়ে হাইকোর্ট ও আপীল বিভাগে অন্তত ১০ থেকে ১৫ বার আবেদন করে তারা হেরেছেন। তিনি বলেন, ২০০৭ সালের ১ নবেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ আলাদা হওয়ার পর লজিস্টিক অনেক সমস্যা ছিল। অবকাঠামো খারাপ ছিল। বিচারকরা এজলাস ভাগাভাগি করে বিচার কাজ করতেন। সেগুলো ধীরে ধীরে সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে। বিচারক স্বল্পতার কারণে ৩৩ লাখ মামলার জট খোলার জন্য ইতোমধ্যে সহকারী জজ নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান আইনমন্ত্রী। ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, সংবিধানে কোন কিছু প্রতিস্থাপনের এখতিয়ার শুধুমাত্র জাতীয় সংসদ তথা পার্লামেন্টের। কোন আদালতের এ এখতিয়ার নেই। এলআরএফ সভাপতি আশুতোষ সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম পান্নুসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। বিচারকদের দুর্নীতির বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ ॥ বিচারকদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। মঙ্গলবার নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের খাস কামরায় সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, ‘এর আগে আমি আইনমন্ত্রী থাকাকালে যত প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হয়েছেন, ততজনের সঙ্গেই সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এসেছি। আজও প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম। এ সময় বিচার বিভাগের কয়েকটি বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, উচ্চ আদালত নিয়ে এ্যাটর্নি জেনারেল যেসব দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেছেন, তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধান বিচারপতিকে আমি অনুরোধ জানিয়েছি। একইসঙ্গে বিচার বিভাগের সঙ্গে আইনসভা ও নির্বাহী বিভাগের যে সম্পর্ক রয়েছে, তার সেতুবন্ধ হিসেবে আইন মন্ত্রণালয় সবসময় সহযোগিতা করেছে। এখনও সেই সহযোগিতা অব্যাহত রাখা হবে।’ প্রসঙ্গত, এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে দেয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের বক্তব্যে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম হাইকোর্টে বিভিন্ন দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে বক্তব্য দিয়েছিলেন।
×