ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কাল শুরু ॥ অংশ নেবেন ৯ দেশের কবি

দেশহীন মানুষের কথা বলবে এবারের কবিতা উৎসব

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ৩১ জানুয়ারি ২০১৮

দেশহীন মানুষের কথা বলবে এবারের কবিতা উৎসব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কবিতার আশ্রয়ে অন্যায় ও অশুভের প্রতিবাদ জানিয়ে ১৯৮৭ সাল থেকে শুরু হয়েছিল জাতীয় কবিতা উৎসব। প্রতিবাদী চেতনার প্রতীক হওয়া উৎসবটি স্বৈরাচার, সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে ছড়িয়েছে মর্মবাণী। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের মৌলিক চরিত্রকে ধারণ করা আয়োজনটি ইতোমধ্যে অতিক্রম করেছে ৩১টি বছর। সেই ধারাবাহিকতায় এবার রাষ্ট্রহীন মানুষের বেদনার কথা বলবে ৩২তম জাতীয় কবিতা উৎসব। ‘দেশহারা মানুষের সংগ্রামে কবিতা’ স্লোগানে কাল পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে কবি সায্যাদ কাদিরকে উৎসর্গীকৃত দুই দিনের এ উৎসব। বৃহস্পতিবার সকালে উৎসব উদ্বোধন করবেন বরেণ্য কবি আসাদ চৌধুরী। এ বছরের উৎসব সঙ্গীত রচনা করেছেন প্রবাসী কবি মহাদেব সাহা। বরাবরের মতো এবারও উৎসব আঙ্গিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণের হাকিম চত্বর। এবারের উৎসবে অতিথি হিসেবে অংশ নেবেন নয় দেশের ১৭ জন কবি। স্বাগতিক বাংলাদেশের পক্ষে সারা দেশ থেকে অংশ নেবেন ৩০০ জন নবীন-প্রবীণ ও প্রখ্যাত কবি। ৩২তম জাতীয় কবিতা উৎসব উপলক্ষে মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে উৎসব আয়োজক জাতীয় কবিতা পরিষদ। পরিষদের সভাপতি কবি ড. মুহাম্মদ সামাদের সভাপতিত্বে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তারিক সুজাত। এছাড়া বক্তব্য রাখেন কবি আসাদ চৌধুরী, হাবীবুল্লাহ সিরাজী, কাজী রোজী, উৎসব আহ্বায়ক রবিউল হুসাইন, সুইডেনের আমন্ত্রিত কবি ক্রিশ্চিয়ান কার্লসন প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এখন চলছে উৎসব আয়োজনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি। টিএসসির দফতরে চলছে উৎসবে অংশগ্রহণেচ্ছু ঢাকা ও ঢাকার বাইরের কবিদের নিবন্ধন কার্যক্রম। আজ বুধবার বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পযন্ত চলবে এ কার্যক্রম। কাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন, পটুয়া কামরুল হাসানের সমাধিসৌধ এবং কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শুরু হবে উৎসব আনুষ্ঠানিকতা। এরপর উৎসব আঙ্গিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বরের উৎসব মঞ্চ থেকে পরিবেশিত হবে জাতীয় সঙ্গীত। সেই সঙ্গে উত্তোলন করা হবে জাতীয় পতাকা। গাওয়া হবে আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি শীর্ষক একুশের গান ও উৎসব সঙ্গী। এবারের উৎসব উদ্বোধন করবেন বরেণ্য কবি আসাদ চৌধুরী। সভাপতিত্ব করবেন পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ সামাদ। গত বছরের প্রয়াত কবি-সাহিত্যিক ও শিল্পীদের স্মরণে শোক প্রস্তাব পাঠ করবেন আমিনুর রহমান সুলতান। সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য দেবেন তারিক সুজাত। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে অনুষ্ঠিত হবে ‘দেশহারা মানুষের সংগ্রামে কবিতা’ বিষয়ক মুক্ত আলোচনা। ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে এ আলোচনায় অংশ নেবেন উৎসবে যোগদানকারী আমন্ত্রিত কবিরা। এরপর উৎসবে প্রথম দিনে অনুষ্ঠিত হবে দেশ-বিদেশের কবিদের স্বরচিত কবিতাপাঠের তিনটি অধিবেশন। আমন্ত্রিত আবৃত্তিশিল্পীদের কবিতাপাঠের মাধ্যমে শেষ হবে প্রথম দিনের আয়োজন। দেশের বাইরে থেকে উৎসবে অংশ নেয়া নয় দেশের কবিদের তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে। ৩২তম উৎসবে অংশগ্রহণকারী বিদেশী কবিদের মধ্যে রয়েছেন সুইডেনের আরনে জনসন, ক্রিস্টিয়ান কার্লসন ও ভিভেকা জোরেন, যুক্তরাজ্যের এগনেস মেডাওস, ক্যামেরুনের জয়সে জয়েস অ্যাসউনটেনটাং, মিশরের ইব্রাহীম এলমাসরি, মেক্সিকোর ইউরি জামব্রানো, জাপানের টেনডু তাইজিন, তাইওয়ানের মিয়াও-ইতু এবং কলম্বিয়ার মারিও মাথর। এছাড়া অংশ নেবেন ভারতের বিভিন্ন ভাষার কবিরা। তাদের মধ্যে রয়েছেন কবি আশিস সান্যাল, সুবোধ সরকার, রাতুল দেববর্মণ, দিলীপ দাশ, সংঘ মিত্রা চক্রবর্তী, প্রদীপ কর, অলোক বন্দ্যোপাধ্যায় ও আবৃত্তিশিল্পী সৌমিত্র মিত্র। স্বদেশের প্রতিনিধিত্বকারী ৩০০ কবি এবারের উৎসবে কবিতা পাঠ করবেন। কবিতা পাঠ ছাড়াও কবিতা নিয়ে বিভিন্ন সেশনেও অংশ নেবেন তারা।
×