ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা আবাহনী ১-০ শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র

আত্মঘাতী গোলে হার শেখ রাসেল কেসির

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ২৬ জানুয়ারি ২০১৮

আত্মঘাতী গোলে হার শেখ রাসেল কেসির

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুই দলের মধ্যে দুটি মিল। উভয় দলের নামের শেষেই আছে ‘লিমিটেড’ শব্দটি। এছাড়া দুটি দলই স্বাধীনতা কাপ ফুটবলের শিরোপা জিতেছে। ঢাকা আবাহনী দু’বার এবং শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র একবার। দুটি দলই স্বাধীনতা কাপের সর্বশেষ আসরে (২০১৬) গ্রুপপর্বে মুখোমুখি হয়েছিল। সেই ম্যাচে ১-০ গোলে জিতেছিল আবাহনী। মজার ব্যাপার- বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ‘সি’ গ্রুপের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচেও শেখ রাসেলকে একই ব্যবধানে হারিয়েছে আবাহনী। এর ফলে ২০১৬ আসরের বদলাটা আর নিতে পারলো না ‘বেঙ্গল ব্লুজ’ খ্যাত শেখ রাসেল। বদলা নিতে গিয়ে উল্টো হেরে গেল তারা ‘দ্য স্কাই ব্লু ব্রিগেড’ খ্যাত আবাহনীর কাছে। তাও আবার সর্বনাশা আত্মঘাতী গোলে। যদিও দুই দলই আগেই নিশ্চিত করে ফেলেছিল নকআউট স্টেজ অর্থাৎ কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা। বৃহস্পতিবারের ম্যাচ তাই ছিল গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াই। যাতে অনেকটা সাদামাটা ফুটবল খেলে এবং প্রতিপক্ষের দেয়া ‘উপহার-গোলে’ অপ্রত্যাশিতভাবে জিতে যায় আবাহনী। দুই খেলায় ৬ পয়েন্ট নিয়ে ‘সি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হলো তারা। ৩ পয়েন্ট পেয়ে রানার্সআপ হলো রাসেল। আর কোন পয়েন্ট না পেয়ে শূন্য হাতেই বিদায় নিয়েছে ‘সোনালী আঁশের দল’ টিম বিজেএমসি। এর আগে আবাহনী ২-০ গোলে বিজেএমসিকে এবং রাসেল ২-১ গোলে বিজেএমসিকে হারিয়েছিল। পুরো ম্যাচে দুই দলই চারটি করে কর্নার পায়। তবে হারলেও আক্রমণ সংখ্যায় সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে ছিল রাসেলই (১৪৫-১৪৪)। তবে বিপজ্জনক আক্রমণে এগিয়ে ছিল আবাহনীই (১১৪-১০৭)। অন টার্গেটে শট নেয়ার বেলাতে অবশ্য এগিয়ে রাসেল (১১-১০)। বল নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আবার আবাহনীই (৫৬%-৪৪%)। জিতলেও দুই দলের লড়াইয়ে প্রথমার্ধে আবাহনী যেন পাত্তাই পায়নি রাসেলের কাছে। ১১ মিনিটে আবাহনীর বক্সের ভেতর পোস্টের খুব কাছ থেকে গড়ানো শট নেন মিডফিল্ডার কাউসার আলী রাব্বি। কিন্তু বল সাইড পোস্ট ঘেঁষে চলে যায় বাইরে। কাছাকাছিই ছিলেন সতীর্থ মিডফিল্ডার আলমগীর কবির রানা। বলে পা ছোঁয়ালেই গোল ছিল। কিন্তু বলে পা লাগাতেই পারেননি তিনি। ২২ মিনিটে কাউসার আলী রাব্বির শট সরাসরি গ্রিপে নেন আবাহনী গোলরক্ষক সুলতান আহমেদ শাকিল। ২৯ মিনিটে ডানপ্রান্ত দিয়ে রাসেলের রাইটব্যাক অরূপ কুমার বৈদ্যর ক্রসে বল পেয়ে উঁচু শট নেন ডিফেন্ডার মোঃ জাভেদ। কিন্তু বল বারের সামান্য ওপর দিয়ে চলে যায়। আবারও গোলবঞ্চিত হয় ব্লুজরা। আবাহনীর দুই একটি আক্রমণ থাকলেও সেগুলো ছিল এলোমেলো। প্রথমার্ধে গোলমুখ খুলতে পারেনি দুই দলের কেউই। তিন পয়েন্ট নিয়ে রাসেল-আবাহনী দুই দলই শেষ আটের টিকেট নিশ্চিত করে রেখেছিল। তবে গোলগড়ে এগিয়ে থাকায় শেষ গ্রুপ ম্যাচে ড্র করলেও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিশ্চিত ছিল আবাহনীর। হয়তো সে জন্যই ততটা গুরুত্ব দিয়ে ম্যাচ খেলেনি আকাশী-হলুদ জার্সিধারীরা। ৫৭ মিনিটে কর্নার থেকে বক্সে বল পেয়ে বাঁ পায়ে ভলি নেন রাব্বি। গোলরক্ষক বল ফিস্ট করে পাঠান বাইরে। ৬০ মিনিটে আবাহনীর রায়হানের লম্বা থ্রো বক্সে ঠিক মতো ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডাররা। এর ঠিক দুই মিনিট পর একক প্রচেষ্টায় বাঁপ্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে আবাহনীর বদলি ফরোয়ার্ড ফয়সাল আহমেদ শীতল দারুণ একটা ক্রস বাড়ান। কিন্তু বক্সে থাকা সতীর্থরা বল জালে পাঠাতে ব্যর্থ হন। ৬৭ মিনিটে নিজেদের ভুলেই পিছিয়ে পড়ে শেখ রাসেল। বক্সের বাইরে থেকে শীতল সেন্টার করেন। সেই বল হেড দিয়ে নিজেদের গোলরক্ষককে ব্যাকপাস দিতে যান রাসেলের লেফটব্যক খালেকুর জামান। কিন্তু বুঝে উঠতে পারেননি গোলরক্ষক বিপ্লব ভট্টাচার্য। ফলে বল আশ্রয় নেয় জালে। আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে পড়ে রাসেল (১-০)। শেষ পর্যন্ত অনেক চেষ্টা করেও ম্যাচে ফিরতে পারেনি শেখ রাসেল। ফলে ১-০ গোলের জয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয় ঢাকা আবাহনী। আর আত্মঘাতী গোলের আক্ষেপের হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে শফিকুল ইসলাম মানিকের শিষ্যরা।
×