ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

১৮ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২৬ জানুয়ারি ২০১৮

১৮ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের জন্য ভোট গ্রহণ করা হবে। শুধু জাতীয় সংসদ সদস্যরা ভোট দিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করবেন। এ পদে প্রার্থীদের আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। মনোনয়নপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে ৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে। তবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েও কেউ নির্বাচনে আগ্রহী না হলে ১০ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টার মধ্যে তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিতে হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের সংসদ কক্ষে ভোট গ্রহণ করা হবে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কর্তার দায়িত্ব পালন করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা। বৃহস্পতিবার বিকেলে সিইসি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করেন। ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ২৩ এপ্রিল তারিখে বর্তমান রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হবে। সংবিধানের ১২৩ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ২৪ জানুয়ারি থেকে ৩০ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে হবে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন ১৯৯১ এর ৫ (২) ধারা অনুসারে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার বিষয়ে গত বুধবার জাতীয় সংসদের স্পীকারের সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার পরামর্শ নিয়েছে। এরপরই বৃহস্পতিবার এ পদের নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হয়। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোট দেবে বর্তমান জাতীয় সংসদের সদস্যরা। ৩৪৮ জনের ভোটার তালিকা ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। স্পীকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে ভোটার তালিকা হস্তান্তর করেছেন বলে জানান। সংসদ চলাকালীন অবস্থায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিধান রয়েছে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে একজন প্রার্থী হলে ভোট দেয়ার কোন প্রয়োজন নেই। বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। আর একাধিক প্রার্থী হলে সংসদ অধিবেশন কক্ষে ভোট দেবেন এমপিরা। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশ নিতে প্রার্থীকে অবশ্যই দুই সংসদ সদস্যের সমর্থন নিতে হবে। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মোঃ আবদুল হামিদ। সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, মেয়াদ অবসানের কারণে রাষ্ট্রপতি পদ শূন্য হওয়ার ক্ষেত্রে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের নব্বই থেকে ষাট দিনের মধ্যে যে ৩০ দিন এই ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হয়। ফলে ২৪ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। স্বাধীনতার পর থেকে ১৯ মেয়াদে এ পর্যন্ত ১৬ জন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই হিসেবে আবদুল হামিদ এই পদে সপ্তদশ ব্যক্তি। দেশের আইনে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বে থাকতে পারেন। সেই হিসেবে আগামী মেয়াদেও রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন করতে পারবেন বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এখন পর্যন্তু আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ পদে কাউকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া না হলেও ঘুরে ফিরে বর্তমান রাষ্ট্রপতির নাম উচ্চারিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। ১৯৯১ সালে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট করতে হয়েছিল। এরপর থেকেই প্রতিবারই ক্ষমতাসীন দল মনোনীত প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে আসছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইনের ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে নির্বাচনী কর্মকর্তা নির্ধারিত দিন, সময় ও স্থানে মনোনয়নপত্র পরীক্ষা করবেন। প্রার্থী একজন হলে এবং পরীক্ষায় তার মনোনয়নপত্র বৈধ বিবেচিত হলে কমিশন তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করবে। তবে একাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে নির্বাচনের জন্য তাদের নাম ঘোষণা করবে ইসি। একাধিক প্রার্থী হলে সংসদের অধিবেশন কক্ষে নির্বাচনী কর্মকর্তা ভোটের আয়োজন করবেন। নির্ধারিত ব্যালট পেপারে ভোটাররা পছন্দের প্রার্থীর নাম লিখে নিজের সই দিয়ে তা জমা দেবেন সাংসদরা। ভোটের দিন গ্যালারিসহ সংসদ কক্ষে প্রার্থী, ভোটার, ভোট নেয়ায় সহায়তাকারী কর্মকর্তা ছাড়া সবার প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত থাকবে। ভোট শেষে নির্বাচন কমিশনার প্রকাশ্যে ভোট গণনা করবেন। সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্তকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। আর সমান ভোট পেলে প্রার্থীদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে ফল নির্ধারণ করা হবে।
×