ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে বিকল্প প্রস্তাব

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২৩ জানুয়ারি ২০১৮

প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে বিকল্প প্রস্তাব

সর্বস্তরে পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস আমাদের জাতির ভবিষ্যতকে ফেলেছে হুমকির মুখে। একটা জাতিকে ধ্বংস করতে ও পিছনে ফেলার জন্য তার মধ্যে দুটো জিনিস ছড়িয়ে দেওয়াই যথেষ্ট। প্রথমত জাতির মস্তিষ্ক মেধাশূন্য করে দেয়া, দ্বিতীয়ত প্রজন্মের হাতে মাদক তুলে দেয়া। আজ দুটোরই বিস্তার সমাজ জীবনে প্রকট। প্রশ্নফাঁস প্রজন্মের মেধাকে যেমন ধ্বংস করছে, তেমনি মেধাহীন একটি বিশাল প্রজন্মের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গেছি আমরা। এভাবে চলতে থাকলে আগামীর বাংলাদেশ বহুমুখী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে এটা নিশ্চিত। একটি চক্র তৈরি হয়েছে যারা প্রায় সব পরীক্ষারই প্রশ্ন ফাঁস করতে পারছে। এই চক্র মাথা থেকে পা পর্যন্ত পরিণত হয়েছে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী একটি পরিবারে। পেক্ষাপট বলছে কোনভাবেই এই চক্রকে শিকড়সহ নির্মূল করা সম্ভব নয়। প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে রাতারাতি কোটিপতি হয়েছে এই চক্রের অনেকে। তাই প্রকাশ্য না হলেও গোপনে এই চক্রটি বেশ শক্তিশালী, সঙ্ঘবদ্ধ ও যথেষ্ঠ প্রযুক্তিনির্ভর। পাবলিক পরীক্ষা কিংবা নিয়োগ পরীক্ষা এলেই এই চক্র শুরু করে প্রশ্ন ফাঁসের প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতা এখন প্রথম শ্রেণী থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। সাধারন কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা থেকে বিসিএস পরীক্ষা, সব জায়গায় এরা প্রশ্নফাঁসের যন্ত্র ফিট করে রেখেছে। প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সরল স্বীকারোক্তি জাতিকে শুধু হতাশই করেনি বরং শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে তাঁর অযোগ্যতারই প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, ‘শুধু এখন নয়, অতীতেও প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। আমি ষাটের দশকে পরীক্ষা দিয়েছি তখনও প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে এখনও হচ্ছে। কিন্তু গণমাধ্যমের কারণে এখন ফোকাস হচ্ছে বেশি।’ মন্ত্রীর কথা অনুযায়ী প্রশ্নফাঁস একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি মাত্র এবং শিক্ষামন্ত্রীও এই ফাঁস ঠেকাতে অসহায়। শিক্ষামন্ত্রীর অসহায়ত্ব প্রকাশ করার কারণ হলো প্রশ্ন ফাঁস চক্র এমনভাবে গড়ে উঠেছে- যেখানে প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে, যে প্রশ্ন ছাপাচ্ছেন, যে প্রশ্ন পাহারা দিচ্ছেন এবং যিনি পরীক্ষা নিচ্ছেন ও পরীক্ষা দিচ্ছেন সব জায়গায় আছে এদের নিখুঁত যোগাযোগ । প্রশ্ন ফাঁসের ফলে পরীক্ষার আগের রাতে মেধাবী শিক্ষার্থীরাই হয়ে যান সবচেয়ে বেশী অসহায়। যেভাবে জিপিএ ৫ বাড়ছে, মেধার মান ঠিক সেভাবে বাড়েনি । আজ আমরা একটা প্রজন্মকে পেয়েছি, যারা সত্যিকার অর্থে বিশ্বাস করে পরীক্ষা মানেই প্রশ্ন ফাঁস। এবং তাই হচ্ছে। পচে গেছে পুরো সিস্টেম। নাটোরে প্রথম শ্রেণীর প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় ১০৬ স্কুলে পরীক্ষা স্থগিত (প্রথম আলো, ১৯ ডিসেম্বর) এবং চট্টগ্রামের নামকরা কলেজিয়েট স্কুলের ৫ম শ্রেণীর ভর্তি পরীক্ষার ফল কর্তৃপক্ষের ১ ঘণ্টা আগে ফেসবুকে ফাঁস (বণিক বার্তা, ২৫ ডিসেম্বর), অস্থিরতার সর্বোচ্চ পর্যায়কেও হার মানিয়েছে। আমাদের মেজরিটি বাচ্চাদের নিউরণ এখন বিশ্বাস করে পরীক্ষা বলতে গোপনীয় কোন বিষয় নয়। বরং একটি উৎসব। এই উৎসবের শুরু আগের রাতে প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে। এই অবস্থা চলতে থাকলে জাতির ভবিষ্যত সহজেই অনুমেয়। ঠিক এই মুহূর্তেই পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে আমাদের বিকল্প চিন্তা করা উচিত। আজ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে ছাপাখানা থেকে। ছাপাখানা ছাড়াও বিভিন্ন ধাপে প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ মিলেছে। আচ্ছা যদি আমরা প্রশ্নই না ছাপাই, তাহলে কেমন হবে? অন্তত ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা যেমন থাকবে না, তেমনি বাঁচবে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব। এতক্ষণে আপনিও চিন্তায় পড়ে গেলেন, প্রশ্ন ছাড়া পরীক্ষা হবে কীভাবে? সে লক্ষ্যেই আমাদের এই বিকল্প প্রস্তাবনা। ছাপাখানায় প্রশ্ন না ছাপিয়ে এই মডেলের মাধ্যমে শতভাগ শুদ্ধভাবে যে কোন পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব। আশা করি মডেলটি যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়, তাহলে একবিংশ শতাব্দীর বাংলাদেশের শিক্ষাখাত হবে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অত্যাধুনিক একটি পরিক্রমা। সংক্ষিপ্ত নাম ‘এসিএসডিইএম’ মডেল। ‘এসিএসডিইএম’ মডেলে এর পূর্ণরূপ হলো আরিফ চৌধুরী শুভ ডিজিটাল এক্সাম মডেল। ‘এসিএসডিইএম’ মডেলে রয়েছে ৬টি গুরুত্বর্পূণ ধাপ। ধাপগুলো হলো চাহিদা কমিশন, পরীক্ষা কমিশন, ফল কমিশন, নিয়োগ কমিশন, অভিযোগ কমিশন এবং তদারকি ও একশান কমিশন। এই ৬টি ধাপ নিয়ে গঠিত হবে একটি পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল শিক্ষা কমিশন বা ডিইসি। এই কমিশনই বাস্তবায়ন করবে এই ধাপগুলোর কাজ। চাহিদা কমিশন চাহিদা কমিশন হলো ‘এসিএসডিইএম’ মডেলের প্রথম ধাপ। সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখন পরীক্ষা ছাড়া সরাসরি নিয়োগ তেমন একটা নেই। এ কমিশনের কাছে সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর গেজেট অনুযায়ী মোট জনবল, ঘাটতি জনবল এবং চাহিদা জনবল রেকর্ড থাকবে। প্রতিষ্ঠানসমূহের চাহিদা অনুযায়ী নিয়োগ কমিশন বিজ্ঞপ্তি প্রদান করবে এবং আবেদন যাচাই বাছাই করে পরীক্ষার জন্য সুপারিশ করবে পরীক্ষা কমিশনের নিকট। একটি সার্কুলার দেওয়ার সবোর্চ্চ ৩০ দিনের মধ্যে পরীক্ষার সুপারিশ করতে হবে এই কমিশনকে। পরীক্ষা কমিশন এটি ‘এসিএসডিইএম’ মডেলের দ্বিতীয় ধাপ। এই ধাপটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ। এই ধাপের সুষ্ঠু বাস্তবায়নের ঊপর নির্ভর করবে পুরো মডেলের সাফল্য। এই ধাপটি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং নিয়োগ এই ক্যাটাগরিতে আলাদা করে কাজ করবে। পরীক্ষা কমিশনের কাজ শেষ হবে নিচের তিনটি ধাপে। ডিজিটাল পরীক্ষা কক্ষ প্রস্তুত : ডিজিটাল পরীক্ষা কক্ষের জন্যে স্থান নির্বাচন গুরুত্বর্পূণ একটি কাজ। কক্ষটি যত বড় হবে ততই সুবিধা। ছোট ছোট কক্ষ হলে ব্যয় বাড়বে কিন্তু অসুবিধে নেই। বড় মাঠ, উদ্যান, হলরুম প্রশস্ত রাস্তাও হতে পারে একটি ডিজিটাল পরীক্ষা কক্ষের উত্তম স্থান। নির্বাচিত স্থান বা কক্ষে নির্দিষ্ট দূরত্ব পর পর বসানো হবে অস্থায়ী বড় আকারের ডিজিটাল কোর্ডযুক্ত বিশেষ মনিটর। মনিটরগুলো পরিচালিত হবে একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে। মূলত এই মনিটরগুলোই হবে শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল প্রশ্নপত্র। পরীক্ষার্থী যেন সুবিধামতো পরীক্ষা দিতে পারে, সেভাবে ডিজিটাল মনিটর বসানো এবং প্রশ্ন ডেলিভারি দেওয়া হবে কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে। সময় শেষ হওয়া মাত্রই মনিটর থেকে প্রশ্ন মুছে যাবে। এরপর উত্তরপত্র সংগ্রহের কাজ করবে পরীক্ষক। পরীক্ষা শেষে মূল প্রশ্নপত্রটি কমিশনের ওয়েবসাইটে দেখা যাবে। এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তরপত্রও দেওয়া হবে। উত্তীর্ণ প্রার্থীরা এই ওয়েবসাইটেই পরীক্ষার নম্বরসহ তাদের মেধাতালিকা দেখতে পাবে। প্রয়োজনীয় সারঞ্জম প্রস্তুত থাকলে পরীক্ষা কক্ষটি ২দিনেই প্রস্তুত করা সম্ভব। প্রশ্ন প্রণয়নের জন্যে পরীক্ষক নির্বাচন পদ্ধতি : বিষয় ভিত্তিক পরীক্ষা বিবেচনা করে ১০০ জন প্রাথমিক প্রশ্নকর্তা এবং ৫জন ফাইনাল প্রশ্নকর্তা নির্বাচন করা হবে। অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে একই দিনে একই জায়গায় বসে ১০০টি প্রশ্ন তৈরি করবে প্রাথমিক প্রশ্নকর্তারা। এর জন্যে তাদের সময় দেওয়া হবে সর্বোচ্চ ১দিন। ৫জন ফাইনাল পরীক্ষা ১০০টি প্রশ্ন থেকে ৫ সেট প্রশ্ন প্রস্তুত করবে চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য। এ কাজে তাদের সময় দেওয়া হবে সর্বোচ্চ ৫দিন। ষষ্ঠ দিনের মাথায় চূড়ান্ত প্রশ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। চূড়ান্ত প্রশ্ন তৈরির পর পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অত্যন্ত গোপনীয়তায় কন্ট্রোল টাওয়ারে অবস্থান করবে এই ৫জন পরীক্ষক। পরীক্ষার দিন আইটি সহায়তা দেওয়ার জন্যে একজন আইটি স্পেশালিস্ট তাদের সঙ্গে যুক্ত হবেন পরীক্ষা শুরুর একঘণ্টা আগে। প্রশ্ন ডেলিভারি পদ্ধতি : এই ধাপটি ডিজিটাল এক্সাম মডেলের সাফল্য ধাপ। চূড়ান্ত প্রশ্ন প্রস্তুতকারী ৫জন পরীক্ষক পরীক্ষা শুরুর আধঘণ্টা আগে সিদ্ধান্ত নিবেন কোন সেটে পরীক্ষা নিবেন। চাইলে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ৫টি সেটির ৫টি আলাদা আলাদা অংশ ডেলিভারি দিয়ে এক সেট প্রশ্ন তৈরি হতে পারে। আইটি স্পেশালিস্ট বাটন চাপার সঙ্গে সঙ্গে সারাদেশের সব পরীক্ষা কেন্দ্রের সমস্ত মনিটরগুলোতে প্রশ্ন দেখা যাবে। শুরু হবে পরীক্ষা। পরীক্ষা শেষে খাতাগুলো প্রেরণ করা হবে ফল কমিশনের নিকট। পুরো প্রক্রিয়াটি একটি টেলিভিশন চ্যানেলের মতো সম্প্রচারিত হবে। এভাবেই শেষ হবে নকল মুক্ত ডিজিটাল এক্সাম পদ্ধতি। এই প্রক্রিয়ায় রংপুরে বসেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা বুয়েটের পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব। পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ হবে মাত্র ৩৬ দিনের মধ্যে। ফল কমিশন এই কমিশনের কাজ হলো খাতা মূল্যায়ন করে পরীক্ষার ফল কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা। প্রাথমিক প্রশ্ন প্রস্তুতকারী ১০০জন প্রশ্নকর্তা খাতা মূল্যায়নের জন্য সারা দেশ থেকে একটি টিম গঠন করবেন। এই ১০০ জনকে মনিটরিং করবেন চূড়ান্ত প্রশ্ন প্রস্তুতকারী ৫জন পরীক্ষক। এই প্রক্রিয়ায় ফল ওয়েবসাইটে দেওয়া পর্যন্ত এই কমিশন সময় পাবে সর্বোচ্চ ৭দিন। ফল রিভিউ করার জন্য শিক্ষার্থীদের সময় দেওয়া হবে ১দিন। রিভিউর ফলাফলের জন্য কমিশন সময় পাবে সর্বোচ্চ ২দিন। অর্থাৎ পরীক্ষা শেষ হবার সর্বোচ্চ ১০ দিনের মাথায় একজন পরীক্ষার্থী কমিশনের ওয়েবসাইটে তার ফল দেখতে পাবে। ১২তম দিনে ফল কমিশন চূড়ান্ত প্রার্থীদের একটি তালিকা পাঠাবেন নিয়োগ ও বাস্তবায়ন কমিশনের নিকট। নিয়োগ কমিশন এই কমিশনের কাজ হচ্ছে ২টি। প্রথমটি হলো ফল কমিশনের সুপারিশকে বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেওয়া। সেই সঙ্গে প্রার্থীর দক্ষতা ও মানউন্নয়নের জন্য নিয়োগকৃত প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনীয় আদেশ দেওয়া। দ্বিতীয়টি হলো প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার পরে অত্র প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞপ্তির শর্ত পূরণ করছে কি না, সেটি তদারকি করা। কোন প্রার্থী কিংবা কোন প্রতিষ্ঠান কমিশনের কাছে তথ্যগোপন করলে তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সংবিধান অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থ নেওয়ার জন্যে অভিযোগ কমিশনকে সুপারিশ করবে নিয়োগ কমিশন। দুর্ঘটনাজনিত কারণে প্রতিষ্ঠানের শর্ত অনুযায়ী নিয়োগকৃতের ক্ষতিপূরণ আদায়ে এ কমিশন বদ্ধপরিকর। ফল কমিশনের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার সর্বোচ্চ ৭দিনের মধ্যে উত্তীর্ণ প্রার্থীর নিয়োগ বাস্তবায়ন করতে হবে এ কমিশনকে। অভিযোগ কমিশন এই কমিশনটি সারাদেশের শিক্ষা সংক্রান্ত সমস্ত অভিযোগ গ্রহণ করবে। এই কমিশনের কাজ হচ্ছে অভিযোগ যাচাই বাছাই করে বাস্তবায়ন করার জন্য এ্যাকশন কমিশনে সুপারিশ করা। শিক্ষক সমস্যা, পরীক্ষাগত সমস্যা, ফল সমস্যা, নিয়োগ সমস্যা, চাহিদা সমস্যা, অনিয়ম সমস্যা, দক্ষতা সমস্যা, ডিজিটালাইজেশন সমস্যা, অবৈধ নিয়োগ, শিক্ষক সঙ্কট, বেতনভাতা সমস্যা, রাস্তা অবরোধ, মানববন্ধন সব বিবেচনায় নিয়েই এই কমিশন কাজ করবে। এই কমিশন সর্বোচ্চ ৩০ দিনের মধ্যে উত্থাপিত সমস্যার সমাধান করবে। এ্যাকশন কমিশন এই কমিশনের কাজ হচ্ছে অভিযোগ কমিশনের সুপারিশকে বাস্তবায়ন করা। এক্ষেত্রে এ কমিশন আইন আদালত থেকে শুরু করে প্রশাসনের সব স্তরকে কাজে লাগিয়ে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তি নিশ্চিত করবে। তবে কেউ যদি মিথ্যা সাক্ষী দিয়ে নিজস্ব স্বার্থে কাউকে শাস্তি প্রদানের জন্য উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে কমিশনকে বাধ্য করে এবং এটি প্রমাণিত হয়, তাহলে কমিশন অভিযোগকারীকে সমশান্তি প্রদান করতে পারবে। অভিযোগ কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য এই কমিশন সময় পাবে সর্বোচ্চ ৩ দিন। এই কমিশন হবে সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর। কমিশনের হাতে সারাদেশের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স প্রদান এবং বাতিলের এখতিয়ার থাকবে। এ ক্ষেত্রে অভিযোগ এবং একশন কমিশন একত্রিত হয়ে কাজ করবে। সেরা ফলাফলের জন্য এ্যাওয়ার্ড প্রদান এবং খারাপ ফলাফলের জন্য এমপিও বাতিলের ক্ষমতা থাকবে এই কমিশনের হাতে। এভাবেই এই ৬টি ধাপের সম্পন্ন বাস্তবায়নের ফলে গঠিত হবে একটি পূর্ণাঙ্গ ‘শিক্ষা কমিশন’। ‘এসিএসডিইএম’ মডেলের মাধ্যমে দেশের সমস্ত বেসরকারী খাতগুলোকেও স্বচ্ছভাবে সেবা দেওয়া সম্ভব। সারাবছর একটি নির্দিষ্ট সময়ে সার্কুলার দিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা করে নিয়োগ প্রদানের মাধ্যমে যেমন কমবে হয়রানি, তেমনি বাঁচবে সময় ও কোটি কোটি টাকা রাজস্ব। এই পদ্ধতিই গৃহীত হতে হবে এমন নয় আরো বিকল্প প্রস্তাবনা আসতে পারে। কিন্তু এটি পরিষ্কার নীরব থাকার সময় নেই আর। যে কোন মূল্যে রোধ করতে হবে এই প্রশ্ন ফাঁস। লেখক : গবেষক
×