ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঘুরে দাঁড়াতে চান রোমাঞ্চিত ম্যাথুস

সিরিজটা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জের ॥ হাতুরা

প্রকাশিত: ০৭:০৬, ১৫ জানুয়ারি ২০১৮

সিরিজটা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জের ॥ হাতুরা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চান্দিকা হাতুরাসিংহে যখন বাংলাদেশ দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, সে সময় সাফল্যগুলোর দিকে নজর রেখেছিল শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটাররা। গত বছর জুলাইয়ে ঘরের মাটিতে দুর্বলতর জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে ৩-২ ব্যবধানে সিরিজ হারের আক্ষেপে নেতৃত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন পেস অলরাউন্ডার এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। বাংলাদেশে আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজে তিনি আবার নেতৃত্বে ফিরেছেন। হাতুরাসিংহেকে কোচ হিসেবে পেয়ে রোমাঞ্চিত লঙ্কান অধিনায়ক এবার ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় জানালেন। আর হাতুরাসিংহেও নিজ দেশের দায়িত্ব পেয়ে বেশ রোমাঞ্চিত। তবে বাংলাদেশের মাটিতে খেলা তার দলের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে বলেই মনে করছেন তিনি। যদিও বাংলাদেশের শক্তিমত্তা এবং দুর্বলতা ভালভাবেই জানা আছে কিন্তু সেটা থেকে বাড়তি কোন সুবিধা পাওয়ার বিষয় নেই বলে দাবি হাতুরাসিংহের। রবিবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শ্রীলঙ্কান কোচ ও অধিনায়ক। সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বাংলাদেশের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন হাতুরাসিংহে। এরপর দলের ভরাডুবি হওয়ার কলঙ্ক কাঁধে নিয়ে পদত্যাগ করেন তিনি। এবার বাংলাদেশেরই প্রতিপক্ষ হয়ে শ্রীলঙ্কার কোচ হিসেবে ফিরে এসেছেন। এ বিষয়ে হাতুরাসিংহে বলেন, ‘বাংলাদেশে আবার ফিরে আমি রোমাঞ্চিত। সিরিজটির দিকে তাকিয়ে আছি। নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমি রোমাঞ্চিত। একই সঙ্গে নতুন দল ও এই দলের যা স্কিল আছে সেসব নিয়েও আমি রোমাঞ্চিত। দেশে খুব ভাল প্রস্তুতি নিয়েছি আমরা। আমাদের উন্নতির অনেক জায়গা আছে।’ তবে বাংলাদেশের ক্রিকেট সম্পর্কে এবং খেলোয়াড়দের সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকলেও ত্রিদেশীয় সিরিজটা বেশ কঠিন হবে বলেই দাবি হাতুরাসিংহের। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের জন্য সিরিজটি হবে চ্যালেঞ্জিং। দেশের মাটিতে বাংলাদেশ দারুণ লড়াকু। গত আড়াই বছরে একটি ছাড়া আর সিরিজ হারেনি। তারা নিজেদের ভূমিকা ও ম্যাচ পরিকল্পনা খুব ভাল করে জানে। সেদিক থেকে প্রতিপক্ষের জন্য এখানে খেলা অনেক চ্যালেঞ্জিং। এই যুগে তথ্য পাওয়া খুব কঠিন কিছু না। ঘরোয়া টি২০ লীগগুলো কাজ আরও সহজ করে দিয়েছে। অনেক শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটারও এখানে খেলে। তারা সবাই পরস্পরকে খুব ভালভাবে জানে। যথেষ্ট তথ্য সহজেই পাওয়া যায়। বাড়তি সুবিধা তাই খুব বেশি নেই। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররাও জানে আমি কিভাবে পরিকল্পনা করি, আমার ভাবনা কেমন।’ বাংলাদেশ দলকে বিশ্বের অন্যতম ক্রিকেট পরাশক্তি হিসেবে গড়ে তুলেছেন হাতুরাসিংহে। দীর্ঘ সময় কাজ করেছেন দলটি নিয়ে। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল অনেকের সঙ্গেই। তাই একটা আবেগের বিষয় মনে কাজ করার কথা। কিন্তু সেটা নাকচ করে দিলেন হাতুরাসিংহে, ‘এখানে যে সাড়ে তিন বছর ছিলাম, সেখান থেকে নিশ্চয়ই জানেন আমি আবেগী মানুষ নই। আবেগ তাই খুব বেশি নেই। তবে আমি এখনও চাই বাংলাদেশ ভাল করুক। ক্রিকেটারদের শুভ কামনা জানাই। ওদের সঙ্গে অনেক ঘনিষ্ঠ ছিলাম, খুব ভাল জানাশোনা হয়ে গিয়েছিল। আমি চাই ওরা অনেক সাফল্য বয়ে আনুক। একই সঙ্গে এখন আমার যা কাজ, আমি চাই শ্রীলঙ্কা ভাল করুক।’ বাংলাদেশ দলের কোচ হিসেবে বেশ কঠোর ছিলেন হাতুরাসিংহে। বিশেষ করে ক্রিকেটারদের শৃঙ্খলার বিষয়ে তার কড়াকড়ি ছিল অনেক বেশি। শ্রীলঙ্কায়ও দায়িত্ব শুরুর পর বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন যা তার কঠোর মানসিকতারই প্রমাণ। তবে অধিনায়ক ম্যাথুস এ বিষয়ে বলেন, ‘গত প্রায় বছর দশেক ধরে হাতুরাসিংহের সঙ্গে আমার জানাশোনা। তার কাজ করার নিজস্ব ধরন আছে। তিনি কঠোর নন। তবে কখনও কখনও হতে পারেন। কেবলই শুরু করেছে, এটিই তার প্রথম সিরিজ। তবে আমাদের ক্রিকেটারদের খুব ভালভাবে জানেন তিনি। আমাদের খোঁজ-খবরও রেখেছেন। তার সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমরা রোমাঞ্চিত।’ মাত্র ৬ মাস পরেই আবার ওয়ানডের নেতৃত্বে ফিরেছেন ম্যাথুস। তিনি চান এবার দলকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে, ‘নেতৃত্বে ফিরে আমি খুশি। অবশ্যই প্রত্যাশা করিনি। কিন্তু ফিরে ও চ্যালেঞ্জ নিতে পেরে আমি খুশি। তাকিয়ে আছি সামনে। নির্দিষ্ট দিনটায় ভাল পারফর্ম করতে হবে। যে দল বেশি রান করবে তারাই জিতবে। প্রতিটি দলই লড়াই করবে। বাংলাদেশ গত আড়াই বছরে দারুণ ক্রিকেট খেলছে। জিম্বাবুইয়েও কয়েক বছর আগের তুলনায় ভাল খেলছে। বেশ কয়েকজন ভাল ক্রিকেটার ওদের ফিরে এসেছে। এটি তাই দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ টুর্নামেন্ট হবে। যা ঘটেছে সব এখন অতীত। আমরা সেটি নিয়ে কাতর হয়ে থাকতে চাই না। নতুন চ্যালেঞ্জের দিকে তাকিয়ে আছি। আমরা অবশ্যই ঘুরে দাঁড়াতে পারি।’
×