ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সিরিজ জয় অনুপ্রেরণা হিসেবে নিচ্ছেন জিম্বাবুইয়ে অধিনায়ক ক্রেমার

জিম্বাবুইয়েকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী কোচ স্ট্রিক

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ১৪ জানুয়ারি ২০১৮

জিম্বাবুইয়েকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী কোচ স্ট্রিক

মোঃ মামুন রশীদ ॥ একটা সময় চরম প্রতিপক্ষ ছিল বাংলাদেশ দল। কিন্তু এরপর থেকে ক্রমেই পিছিয়ে পড়েছে জিম্বাবুইয়ে। ক্রিকেট মাঠের নৈপুণ্য এবং র‌্যাঙ্কিং বিবেচনায় এখন দু’দলের মধ্যে বিস্তর ফারাক। কিন্তু বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতাই এখন বড় আত্মবিশ্বাসের কারণ জিম্বাবুইয়ের। তাছাড়া গত বছর শ্রীলঙ্কা সফরে স্বাগতিকদের ওয়ানডে সিরিজে হারিয়ে মনোবলটা বেড়েছে তাদের। দলে ফিরে এসেছেন অভিজ্ঞ মিডলঅর্ডার ব্রেন্ডন টেইলর ও পেসার কাইল জারভিস ফেরাতে দলের ভারসাম্য এখন দারুণ। এ সবকে পুুঁজি করেই দেশের বাইরে যে কোন প্রতিপক্ষকে হারানোর প্রত্যয় জিম্বাবুইয়ে অধিনায়ক গ্রায়েম ক্রেমারের। আর বাংলাদেশ দলের সাবেক বোলিং কোচ হিসেবে খেলোয়াড়দের সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান আছে কোচ হিথ স্ট্রিকের। বর্তমান দল যে কোন কিছু জয় করতে সক্ষম এমন আশাই করছেন তিনি। স্ট্রিক দীর্ঘদিন বাংলাদেশের পেস বোলিং নিয়ে কাজ করেছেন। খেলোয়াড় হিসেবেও অনেক খেলেছেন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। এ কারণে তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের খুঁটিনাটি সম্পর্কে বেশ ভালভাবেই ওয়াকিবহাল। কৌশলগত দিক, ম্যাচের পরিকল্পনা, উইকেট, পরিবেশ এবং খেলোয়াড় সবকিছু সম্পর্কেই ভাল ধারণা স্ট্রিকের। তাই বাংলাদেশকে নিজের ঘরের মতোই ভাবছেন তিনি। ত্রিদেশীয় সিরিজ নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ভাল ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলার দিকেই লক্ষ্য। আমি বাংলাদেশকে কিছুটা পর্যবেক্ষণ করেছি। আমি ছেড়ে যাওয়ার পর তারা কেমন নৈপুণ্য দেখিয়েছে সেটা আমি খেয়াল করেছি।’ বাংলাদেশ যেমন আগে তার পরিকল্পনায় চলেছে, তেমনি শ্রীলঙ্কার বর্তমান কোচ চান্দিকা হাতুরাসিংহের সঙ্গে থেকেই কাজ করার কারণে তার সম্পর্কেও জানেন স্ট্রিক। এখন দুই প্রতিপক্ষ শিবিরেই তার চেনাজানা মানুষ। এ বিষয়ে সাবেক এ পেসার ও অধিনায়ক বলেন, ‘এই সময়গুলোতে অনেক কোচই কিছু দলের অংশ হয়ে থাকেন, প্রতিপক্ষ হন। আমি মনে করি এটা খুব ভাল চ্যালেঞ্জ সবার জন্য। আমরা কন্ডিশন ও খেলোয়াড়দের জানি এবং চান্দিকাও জানে। এটা শুধু কিছু সুপরিকল্পনা এবং কৌশলগত পরামর্শ দলগুলোর জন্য জরুরী এবং নিশ্চিত করা দক্ষতাগুলোর প্রয়োগ ঘটানো।’ সবকিছু মিলিয়ে স্ট্রিক মনে করছেন তার বর্তমান শিষ্যদের জন্য ভাল পারফর্ম করা কঠিন কিছু হবে না। আর দলের অনেকেই সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে (বিপিএল) খেলেছে সেটাও অন্য সবার জন্য কার্যকর ভূমিকা রাখবে। স্ট্রিক বলেন, ‘ক্রেমার, রাজা, ওয়ালার ও মিরে অবশ্যই আমাদের জন্য সহায়ক হবে নবাগত খেলোয়াড়দের বিষয়ে কিছু তথ্য দিয়ে। এছাড়া কন্ডিশনটা কেমন হতে পারে সে বিষয়েও জানে এবং তা এই সিরিজে বেশ উপকারে আসবে। এই সিরিজে আমরা আন্ডারডগ। কিন্তু আমি এটা অনুভব করছি যে জিম্বাবুইয়ে ক্রিকেটকে এগিয়ে নেয়ার জন্য যেমন খেলোয়াড় প্রয়োজন তা আমাদের আছে। আমরা গত বছর শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দেখিয়েছি যে আমরা নিজেদের অঞ্চলের বাইরেও অন্য দেশগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারি। আমরা ভালভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি এবং আশা করছি যত দ্রুত সম্ভব সিরিজে আমরা নিজেদের মেলে ধরতে পারব এবং শীঘ্রই কিছু ভাল ফল বের করে আনতে পারব। আমি জানি আমার দল জিততে সক্ষম।’ অধিনায়ক ক্রেমারও শ্রীলঙ্কার সাফল্য এবং দলে কয়েকজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের যোগ হওয়টাকে বড় রকমের সুফল হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, ‘অতীতে আমরা যেমনটা দেখেছি সেটার সঙ্গে কন্ডিশনে খুব বেশি পার্থক্য থাকবে না। আমাদের তরুণ ছেলেদের জন্য এটা নতুন ব্যাপার কিন্তু আমাদের অনেক অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের জন্য এটা খুব বড় বিষয় নয়। সেই ছেলেরা আমাদের জন্য খেলায় জিততে চায়। আমি অনেক বাংলাদেশী এবং কিছু শ্রীলঙ্কান খেলোয়াড়ের বিষয়ে অনেক কিছু শিখেছি বিপিএলের সময়। ব্রেন্ডন টেইলর মিডলঅর্ডারে অনেক বড় শূন্যতা রেখে গিয়েছিলেন। তাকে আবার ফিরে পাওয়াটা অনেক বড় ব্যাপার। আমরা বোলিং আক্রমণটাকে জারভিসের নেতৃত্বে এগিয়ে নেব এবং এটা আমাদের দলে বাড়তি অভিজ্ঞতা যোগ করেছে যা আগে ছিল না।’ তবে অতীতে বাংলাদেশ সফরে তেমন সুবিধা করতে পারেনি জিম্বাবুইয়ে। এবার অবশ্য র‌্যাঙ্কিংয়ে তফাত থাকলেও তিন দলের মধ্যে তেমন পার্থক্য দেখছেন না ক্রেমার, ‘তিনটি দলেরই কিছু ভাল স্পিনার আছে। আমার মনে হয় যে দলটি ভাল ফিল্ডিং করবে সেটার ওপরই অনেক কিছু নির্ভর করবে। প্রতিটি দলই নিজেদের দিনে একে অপরকে হারিয়ে দিতে পারে। আমার মনে হয় খুব ভাল একটা ত্রিদেশীয় সিরিজ হবে। বাংলাদেশ মাঝে মাঝে সফরের জন্য খুব কঠিন জায়গা। নিজেদের কন্ডিশনে তারা খুব ভাল ক্রিকেট খেলে। আমরা শ্রীলঙ্কা সিরিজ থেকে আত্মবিশ্বাসটাকে কাজে লাগাব। আমার মনে হয় এই সময়ে আমরা বেশ সংঘবদ্ধ।’
×