ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মাউশির নতুন ডিজি মাহবুবুর রহমান, রেওয়াজ ভাঙলেন বিদায়ী ডিজি

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ৮ জানুয়ারি ২০১৮

মাউশির নতুন ডিজি মাহবুবুর রহমান, রেওয়াজ ভাঙলেন বিদায়ী ডিজি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) নতুন মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান। রবিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশের পরই তিনি নতুন পদে যোগ দিয়েছেন। এদিকে সদ্য বিদায়ী মহাপরিচালক ড. ওয়াহিদুজ্জামানের শেষ কর্মদিবসেই অর্ধশতাধিকসহ শেষ সপ্তাহে শতাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর রাতারাতি বদলি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এসব বদলিতে মাউশির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষক-কর্মকর্তারা। অভিযোগ উঠেছে, শেষ কর্মদিবসে বদলি নিয়ে একাধিক পরিচালক আপত্তি করলেও মহাপরিচালক তার অবস্থান পাল্টাননি। মহাপরিচালক অধ্যাপক হিসাবে ড. ওয়াহিদুজ্জামানের চাকরির মেয়াদ শেষ হয় শনিবার। সে হিসেবে শেষ কর্মদিবস ছিল গত বৃহস্পতিবার। রবিবারই মহাপরিচালকের চলতি দায়িত্ব পেয়ে কাজে যোগদান করেছেন অধ্যাপক মোঃ মাহাবুবুর রহমান। দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে তাকে চলতি দায়িত্ব দেয়া হয়। দুপুরেই তিনি তাঁর পুরনো কর্মস্থল ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে অধিদপ্তরে যোগদান করেন। অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। বিসিএস সপ্তম ব্যাচের কর্মকর্তা মাহবুব ১৯৮৫ সালে রাজেন্দ্র কলেজে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। এরপর সরকারী বিএম কলেজ ও শরীয়তপুরের একটি মহিলা কলেজে শিক্ষকতা করেন। পরে সরকারী রাজেন্দ্র কলেজে উপাধ্যক্ষ এবং একই কলেজে পাঁচ বছর অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে যোগ দেন তিনি। এদিকে সদ্য বিদায়ী মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. ওয়াহিদুজ্জামানের শেষ কর্মদিবসেই অর্ধশতাধিকসহ শেষ সপ্তাহে শতাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর রাতারাতি বদলি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এসব বদলিতে মাউশির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষক-কর্মকর্তারা। সাধারণত যে কোনো দফতর প্রধান তাঁর শেষ কার্যদিবসে বদলির কোনো ফাইলে স্বাক্ষর করেন না। যুগ যুগ ধরে এই রেওয়াজ চলে আসছে। কিন্তু মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক তাঁর শেষ কর্মদিবসে সেই রেওয়াজ ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছেন। বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবসে তিনি রেকর্ড পরিমাণ বদলির আদেশের অনুমোদন দিয়েছেন। একদিনেই বদলি করা হয়েছে ৫৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে। এছাড়াও শেষ দিনে কেনাকাটারও বেশকিছু ফাইল অনুমোদন করেছেন মহাপরিচালক। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এর আগে যেসব মহাপরিচালক তাদের চাকরি শেষ করেছেন তাদের শেষ দিনে বদলির রেকর্ড নেই। এমনকি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যেসব সচিব এর আগে অবসরে গেছেন তারাও শেষ দিনে বদলি বা পদোন্নতির কোনো ফাইলে স্বাক্ষর করেননি। মাউশি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, মহাপরিচালকের শেষ দিনে ২৯ জন কর্মচারীকে বদলি করা হয়। একই দিন সরকারী কলেজে ২৫ জন বিসিএস ক্যাডারের কর্মকর্তার বদলির আদেশ জারি করা হয়। বদলিতে মাউশি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক চূড়ান্ত অনুমোদন দেন। তবে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারদের অর্থাৎ সরকারী কলেজ শিক্ষকদের বদলি করেন কলেজ শাখা। সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বদলি করেন মাধ্যমিক শাখা। আর মাউশি অধিদপ্তরে প্রশাসন শাখা বদলি করেন উপজেলা ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এবং সকল পর্যায়ের কর্মচারীদের। এই বদলিতেই মূলত ব্যাপক লেনদেনের অভিযোগ আছে।
×