ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ সমাবর্তন

তোমরা সবচেয়ে আলোকিত অংশের গর্বিত সদস্য ॥ রাষ্ট্রপতি

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ৮ জানুয়ারি ২০১৮

তোমরা সবচেয়ে আলোকিত অংশের গর্বিত সদস্য ॥ রাষ্ট্রপতি

এমএ রকিব/আসিফ খান, কুষ্টিয়া ও ইবি থেকে ॥ রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ রবিবার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ সমাবর্তনে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘আজ তোমরা স্বীকৃতিপ্রাপ্ত উচ্চ শিক্ষত নাগরিক, দেশের সবচেয়ে আলোকিত অংশের গর্বিত সদস্য। দেশ ও জাতির প্রতি রয়েছে তোমাদের অনেক দায়িত্ব ও অঙ্গীকার। তোমরা নিষ্ঠা ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে এ দায়িত্ব পালনে উন্মুখ বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। তোমরা তোমাদের অর্জিত জ্ঞানের সফল প্রয়োগ ঘটাতে পারলে দেশ অনেক সমস্যা থেকে মুক্ত হবে এবং দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ চতুর্থ সমাবর্তনে যোগ দিতে কুষ্টিয়া সার্কিট হাউস থেকে সড়ক পথে রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পৌঁছান। এখানে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান উপাচার্য অধ্যাপক হারুন উর রশিদ আসকারীসহ কর্মকর্তারা। রাষ্ট্রপতি শোভাযাত্রাসহকারে সমাবর্তন স্থল কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে নির্মিত বিশাল মঞ্চের দিকে এগিয়ে যান এবং অন্যান্য অতিথিসহ আসন গ্রহণ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মোঃ আবদুল হামিদ সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করেন। জাতীয় সঙ্গীত ও পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠের পর সমাবর্তনের উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। দীর্ঘ প্রতিক্ষিত সমাবর্তনকে ঘিরে রবিবার কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছিল উৎসব মুখর। আনন্দে উদ্বেলিত ছিল শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘ ১৬ বছর পর এই ক্যাম্পাসে সমাবর্তন হচ্ছে। তাই আমরা সবাই খুশি। অনেক সিনিয়র ভাই-বোন সমাবর্তনে এসেছেন। তাদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাত হলো। খুব ভাল লেগেছে। এদিকে চতুর্থ সমাবর্তন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যকে স্বাগত জানাতে ইবি ক্যাম্পাসকে সাজানো হয় বর্ণিল সাজে। প্রধান ফটকে নির্মাণ করা হয় বিশাল তোরণ। সবকিছু ঘষেমেজে ঝকঝকে তকতকে করা হয়। আলোকসজ্জিত ক্যাম্পসের ভেতর ও বাইরে প্রধান সড়কের দু’পাশ রাঙিয়ে তোলা হয় বিভিন্ন রঙিন পতাকায়। হিমেল হাওয়া আর হাড় কাঁপানো শীতকে উপেক্ষা করে সমাবর্তনে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ১২ হাজার গ্র্যাজুয়েটের পদচারণায় মুখরিত ছিল পুরো ক্যাম্পাস। পাশাপাশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল জোরদার। দীর্ঘ ১৬ বছর পর ইবি ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয় চতুর্থ এ সমাবর্তন। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান ও বক্তা হিসেবে অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। এ ছাড়াও রাষ্ট্রপতির পতœী রাশিদা খানম, কন্যা স্বর্ণা হামিদ, বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী, প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সেলিম তোহা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল উল আলম হানিফ, ঝিনাইদহ ১ আসনের সাংসদ আব্দুল হাই প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মুর‌্যাল ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ উদ্বোধন করেন। পরে তিনি একই স্থানে পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিঞা একাডেমি ভবন, শেখ হাসিনা হলের বর্ধিতাংশ এবং শেখ রাসেল হল উদ্বোধন করেন। সমাবর্তনে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অন্তত ১২ হাজার গ্র্যাজুয়েট বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটে আসেন। তাদের পদচারণায় মুখরিত ছিল ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ২০০২ সালে। উল্লেখ্য, এবারের সমাবর্তনে ১ হাজার ৬৩৭ জন স্নাতক, ৭ হাজার ৪৮৮ জন স্নাতকোত্তর, ১৩৭ জন এমফিল ও ১১০ জন পিএইচডি ডিগ্রীধারীদের মূল সনদ প্রদান করা হয়। সর্বমোট ৯ হাজার তিন শ’ ৭২ জনকে সনদ প্রদান করা হয়।’ ৮১ জন শিক্ষার্থীকে প্রেসিডেন্সিয়াল গোল্ড মেডেল প্রদান করা হয়।
×