ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংবাদ সম্মেলনে মেনন

জোটের কেউ একলা চল নীতিতে চললে সেটি হবে আত্মঘাতী

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৫ জানুয়ারি ২০১৮

জোটের কেউ একলা চল নীতিতে চললে সেটি হবে আত্মঘাতী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোটের কোন দল ‘একলা চল’ নীতিতে চললে সেটি আত্মঘাতী হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। ওয়ার্কার্স পার্টির উদ্যোগে ঘোষিত ২১ দফার কর্মসূচীকে এগিয়ে নিতে ও ৩ মার্চ শনিবার দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়। তবে মেননের কাছে সাংবাদিকদের বেশিরভাগ প্রশ্নই ছিল মন্ত্রিসভায় রদবদল ও বিমানমন্ত্রী হিসেবে সফলতা-ব্যর্থতা নিয়ে। তবে বেশিরভাগ প্রশ্নেরই জবাব দিয়েছেন প্রবীণ এই বাম নেতা। বুধবার মন্ত্রিসভায় চার মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর দফতর বদল করা হয়। এর মধ্যে তিনজনই শরিক দল অথবা বিরোধী দলের। আর এর মধ্যে সবচেয়ে বড় চমক মেননকে বিমান মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে সমাজকল্যাণে পাঠানো। তিনি এই সিদ্ধান্তকে বিমান থেকে মাটিতে নামার সঙ্গে তুলনা করেছেন। মন্ত্রিসভা রদবদলকে স্বাভাবিকভাবেই দেখেন এই নেতা। এই অবস্থায় ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতির কাছে জানতে চাওয়া হয়, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের ঐক্য ভেঙ্গে যাওয়ার কোন আশঙ্কা আছে কি না। জবাবে মেনন বলেন, আন্দোলন ও নির্বাচন জোট হিসেবে একসঙ্গেই করতে চাই। আমি মনে করি চৌদ্দ দলের ঐক্য অব্যাহত থাকবে এবং চৌদ্দ দলের ঐক্যকে সঠিকভাবে কার্যকর করতে হবে। ‘একলা চল’ নীতিতে বিজয় আনা সম্ভব না- এমন মন্তব্য করে মেনন বলেন, আমি বলব ঐক্যটাকে সঠিকভাবে কার্যকর করতে হবে। আমিও যদি এখন একলা চলতে চাই সেটাও আত্মঘাতী হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে মন্ত্রিসভায় রদবদলকে কীভাবে দেখছেন-এমন প্রশ্নে মেনন বলেন, নির্বাচন যখন আসে তখন নানাবিধ ইকোয়েশন (সমীকরণ) আসে। এই পরিবর্তন একটা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্যে অনেক হিসাব-নিকাশ থেকে। সবকিছু হিসাবের মধ্যে হয়ত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এ বছরটি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ বছরেই জাতীয় নির্বাচন হতে চলেছে। এ বছরই নির্ধারিত হবে যে ২০০৮ সাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত যে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও উন্নয়নের ধারায় দেশ এগিয়েছে তা অব্যাহত থাকবে, নাকি বিএনপি-জামায়াত জোট শাসনের দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন, সন্ত্রাস-সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ জঙ্গীবাদের পুনরুত্থানে দেশ আবার পিছিয়ে যাবে অন্ধকারের পথে। ২০০৮ সালের পর দেশ আবার অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে এসেছে। বাহাত্তরের সংবিধানের চার মূলনীতি পুনর্বাসিত হয়েছে। বিচার হয়েছে বঙ্গবন্ধুর খুনী আর একাত্তরের মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী মূল চক্রের। হেফাজতিদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করা গেছে। প্রতিরোধ করা গেছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করতে জামায়াত-শিবিরের নিষ্ঠুর তা-বের। বিমানমন্ত্রী হিসেবে সফল ॥ চার বছর ধরে বিমানমন্ত্রী হিসেবে সব চ্যালেঞ্জ সফলভাবে মোকাবেলা করে ওই মন্ত্রণালয়কে লাভজনক অবস্থানে রাখতে পেরেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন মেনন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়াকে নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দখছেন সাবেক বিমানমন্ত্রী। বলেন, এখানে আরও বেশি কাজ করার সুযোগ রয়েছে বলে আমি মনে করি। তিনি বলেন, এই মন্ত্রণালয়ে এসে আমি একদম সাধারণ মানুষ, দলিত, সংখ্যালঘুসহ সকল পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে নিয়ে কাজ করতে পারব। আমি মনে করি এই মন্ত্রণালয়েও আমার জন্য অনেক বড় বড় চ্যালেঞ্জ আসবে। এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়ে আমি আনন্দিত। আশা করি এখানেও সফলভাবে কাজ করতে পারব। বিমান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনের বিষয়ে মেনন বলেন, কিছু সমস্যার সমাধান করা যায়নি।
×