ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অনুপ্রবেশ বন্ধ হচ্ছে না ॥ দশ দিনে এসেছে ৭ শতাধিক রোহিঙ্গা

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ৪ জানুয়ারি ২০১৮

অনুপ্রবেশ বন্ধ হচ্ছে না ॥ দশ দিনে এসেছে ৭ শতাধিক রোহিঙ্গা

মোয়াজ্জেমুল হক/এইচএম এরশাদ ॥ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ কেবলই বেড়ে চলেছে। কি কারণে রোহিঙ্গারা এখনও পালিয়ে আসছে এর কোন যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আসার পথে যেমন কোন বাধা দিচ্ছে না, তেমনি বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবিও রোহিঙ্গাদের প্রবেশে বাধা দিচ্ছে না। সঙ্গত কারণে রোহিঙ্গা ইস্যুতে নানা ধরনের প্রশ্নের উদ্রেক করছে একের পর এক। রোহিঙ্গাদের নিয়ে ১২ এনজিও’র কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে এনজিও ব্যুরো। এসব এনজিও’র বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপতৎপরতার অভিযোগ রয়েছে। এদিকে, প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার আগে উখিয়া টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে দুদিনের সফরে ওআইসি প্রতিনিধিদল আসছে আজ। দলটি উখিয়ার কুতুপালং শিবির পরিদর্শন করবে আজ। কাল বালুখালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের উদ্দেশে যাবে প্রতিনিধি দল। আইওএমের স্থানীয় প্রতিনিধি সূত্রে জানা গেছে, ওআইসি প্রতিনিধি দল সরেজমিনে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে। রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে শুনবেন রাখাইন রাজ্যে ঘটে যাওয়া অমানবিক নানা ঘটনাবলীর কথা। পাশাপাশি ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী আগামী ১৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ সফরকালে টেকনাফ উখিয়ায় আশ্রিত রোহিঙ্গা পরিস্থিতি দেখবেন বলে জানা গেছে। বুধবার পর্যন্ত গত ১০ দিনে বাংলাদেশে ৭ শতাধিক রোহিঙ্গা টেকনাফের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে অনুপ্রবেশ করেছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ পর্যন্ত পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা ৮ লাখ ৬৭ হাজার। এর আগে গেল অক্টোবর মাসে এসেছে ৫ লক্ষাধিক। সবমিলে টেকনাফ উখিয়া অঞ্চলে ১৩ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বসতি গেঁড়েছে। এদিকে, পাসপোর্ট এ্যান্ড ইমিগ্রেশন অধিদফতর মঙ্গলবার পর্যন্ত ৯ লাখ ৩৫ হাজার ৭৫৮ রোহিঙ্গার নিবন্ধন সম্পন্ন করেছে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে। এরা উখিয়া টেকনাফের বারটি ব্লকে অস্থায়ী ক্যাম্পে জীবনযাপন করছে। নিবন্ধের কার্ড নিয়ে প্রতিনিয়ত তারা ত্রাণ সামগ্রী গ্রহণ করছে। অপরদিকে, বারটি ক্যাম্পের মধ্যে সকলেই সুযোগ সুবিধা ভোগ করলেও কিছু কিছু রোহিঙ্গা নিবন্ধের আওতায় আসছে না। এরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এ ব্যাপারে অনুসন্ধানে জানা গেছে, এরা আর রাখাইন রাজ্যে ফিরে যেতে ইচ্ছুক নয়। নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় এলে এদেরকে অবশ্যই মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন হতে হবে। পাসপোর্ট এ্যান্ড ইমিগ্রেশন অধিদফতরের উপপরিচালক আবু নোমান মোহাম্মদ জাকের হোসেন জানিয়েছেন, নিবন্ধন প্রক্রিয়া দ্রুততরভাবে সম্পন্ন করা হচ্ছে। ফলে অল্প সময়ের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৯ লাখ রোহিঙ্গাকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। অপরদিকে, বিজিবির পক্ষে নাইক্ষ্যংছড়ির জিরো পয়েন্টে যেসব রোহিঙ্গা অবস্থান করছে তাদের শীঘ্রই ক্যাম্পে ফিরিয়ে আনা হবে বলে বক্তব্য দেয়ার দ’ুসপ্তাহ পার হয়ে গেলেও ওইসব রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।
×